ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

অস্ট্রেলিয়ার ধর্ষণ-আইনে বিপ্লব ঘটালেন যে নারী (পর্ব-২)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:১৭, ১১ জুন ২০২২ | আপডেট: ১৮:৩৬, ১১ জুন ২০২২

স্যাক্সন মুলিন্স

স্যাক্সন মুলিন্স

Ekushey Television Ltd.

অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের বাসিন্দা স্যাক্সন মুলিন্স। যিনি ২০১৩ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সেই এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েই ধর্ষণের শিকার হন। 

সম্প্রতি ২৭ বছর বয়সী এই নারী জানিয়েছেন, কিভাবে তিনি ধর্ষণের শিকার হন এবং পরবর্তীতে আদালতে পাঁচ বছর ধরে চলা মামলার মাধ্যমে কিভাবে তিনি অভিযুক্তকে শাস্তি দিতে পেরেছেন তা নিয়ে।

পাঁচ বছর ধরে দুঃস্বপ্নময় আদালত
আদালতে স্যাক্সন মুলিন্স অনুভব করেন যে, তিনি লোকটিকে "না" বলেছিলেন বা তাকে থামতে বলেছিলেন, তা প্রমাণ করার দায়িত্ব তারই উপর বর্তায়।

তিনি জুরিকে বলেছিলেন, লোকটি "প্রত্যাহত" এবং "আক্রমণাত্মক" হয়ে ওঠে, যখন তিনি তাকে জানান যে, তিনি নাইটক্লাবে অপেক্ষায় থাকা তার বন্ধুর কাছে ফিরে যেতে চান।

মুলিন্স তাদেরকে বলেছিলেন যে, ওই সময় তিনি ঠাণ্ডায় জমে যাচ্ছিলেন- যা যৌন নিপীড়নের একটি সাধারণ প্রতিক্রিয়া ছিল।

আদালতের এক ট্রায়ালে মুলিন্স বলেন, "আমার মনে আছে, আমি শুধু ভয়ই পেয়েছিলাম। আমি কি করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তাই সে যা-ই বলেছে, আমি শুধু তা-ই করে গেছি।"

আদালতে তার এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জুরি লোকটকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়। যা ছিল তার জন্য বিস্ময়, স্বস্তি এবং অপরাধবোধের একটা "ভয়াবহ" সংমিশ্রণ। তার কেবল মনে হচ্ছিল, তার জন্য ওই লোকটির জীবনটাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে!

তবে লোকটি সফলভাবে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন এবং মামলাটি দ্বিতীয়বার বিচারের জন্য বাধ্য করেন। এবার তাকে একা একজন বিচারকের সামনে পড়তে হয়।

তবে দ্বিতীয় রায়ে অভিযুক্তকে আর দোষী করা হয়নি- খালাস দেয়া হলো। তবে মুলিন্সের জন্য এটা আরও বাজে ছিল।

এই রায়ের সময় আদালতে অভিযুক্ত লোকটি তার থেকে মাত্র তিনটি চেয়ার দূরে বসেছিলেন এবং হাসছিলেন। অন্যদিকে চরম অস্বস্তিবোধ করে মুলিন্স তার মাকে জড়িয়ে ধরে নীরবে কাঁদছিলেন।

মুলিন্স বলেন, "এটা সত্যিই আমাকে ব্যক্তিগতভাবে হেয় করেছিল। 'ওহ এমনটা হতেই পারেনা। এমন মনে হচ্ছিল, এটা যে আমিই ছিলাম তাও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।"

প্রসিকিউটররা পরে একটি আপিল নিয়ে অগ্রসর হতেন, কিন্তু আদালত শেষ পর্যন্ত দেখতে পেল যে, আরেকটি পুনঃবিচার প্রক্রিয়া অভিযুক্তের প্রতি খুব নিপীড়নমূলক হবে- যা হবে তার তৃতীয়বার বিচার, যিনি ইতিমধ্যে ১০ মাস কারাভোগ করেছেন এবং সেই রাত থেকে পাঁচটি বছর কেটে গেছে।

আর এই ফৌজদারি প্রক্রিয়া থেকে ন্যায়বিচারের কোনো আশা না থাকায় মুলিন্স অনুভব করেছিলেন যে, তাকে এবার কথা বলতে হবে।

তিনি বলেন, "আমি বিষয়টি থেকে আমার হাত গুটিয়ে নিতে পারতাম, কিন্তু সেক্ষেত্রে অন্য কাউকে হয়তো তখন তাদের হাত নোংরা করতে হত। আর যেহেতু আমারটা ইতিমধ্যেই নোংরা হয়েছে, তাই ভেবে নিয়েছিলাম, আমিই তো চালিয়ে যেতে পারি।"

(চলবে...)

এনএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি