ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের পাঞ্জাবে ‘জরুরী অবস্থা’ ঘোষণা
প্রকাশিত : ১৩:২০, ২২ জুন ২০২২
নারী ও শিশু যৌন নির্যাতনের ঘটনা দ্রুত বৃদ্ধির কারণে ‘জরুরী অবস্থা’ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ।
সোমবার (১৯ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবার সময় পাঞ্জাবের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আত্তা তারার জানিয়েছেন যে, এই ধরনের ঘটনা বৃদ্ধি সমাজ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা।
তিনি এসময় গণমাধ্যমকে আরও জানান, পাঞ্জাবে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটি ধর্ষণের ঘটনা রিপোর্ট করা হচ্ছে যার কারণে সরকার যৌন হয়রানি, অপব্যবহার এবং জবরদস্তির মামলা মোকাবেলা করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা বিবেচনা করছে।
"ধর্ষণ মামলা মোকাবেলা করার জন্য, প্রশাসন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে" বলেও তিনি জানিয়েছিলেন।
এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, “এ বিষয়ে সুশীল সমাজ, নারী অধিকার সংগঠন, শিক্ষক ও আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে। এর পাশাপাশি তিনি অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের নিরাপত্তার গুরুত্ব শেখানোর আহ্বান জানান।”
মন্ত্রীর বক্তব্যে জানা যায় যে, বেশ কয়েকটি মামলার অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে, সরকার ধর্ষণ বিরোধী অভিযান শুরু করেছে এবং শিক্ষার্থীদের স্কুলে হয়রানি সম্পর্কে সতর্ক করা হবে। বাবা-মায়েদের তাদের সন্তানদের কীভাবে রক্ষা করতে হয় তা শেখার সময় এসেছে এবং সরকার দ্রুত গতিতে ডিএনএ পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াবে।
গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স ২০২১ র্যাঙ্কিং অনুসারে দেখা যায়, নারী ও শিশু যৌন নির্যাতনের দিক দিয়ে ইরাক, ইয়েমেন এবং আফগানিস্তানের চেয়েও এগিয়ে পাকিস্তান। ১৫৬টি দেশের মধ্যে পাকিস্তানের অবস্থান ১৫৩।
ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর রাইটস অ্যান্ড সিকিউরিটি (আইএফএফআরএএস) এ প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে যে, পাকিস্তানে গত চার বছরে ১৪ হাজার ৪৫৬ জন নারী হয়রানির স্বীকার হয়েছে। যার মধ্যে পাঞ্জাব রাজ্যের সর্বোচ্চ সংখ্যার রেকর্ড করা হয়েছ।
এছাড়া কর্মক্ষেত্রে নারী হয়রানি, নারীর প্রতি গার্হস্থ্য সহিংসতা এবং নারীর প্রতি অন্যান্য বৈষম্যমূলক কর্মকাণ্ডও ব্যাপক হারে বেড়েছে।
মানবাধিকার মন্ত্রালয়ের নথিতে বলা হয়েছে, “২০১৮ সালে দেশে কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি হয়রানির এবং সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৫,০৪৮টি এবং ২০১৯ সালে ৪,৭৫১ টি ঘটনা ঘটেছে; ২০২০ সালে ৪,২৭৬ টি এবং ২০২১ সালে ২,০৭৮ টি মামলা হয়েছে।”
এ বিষয়ে বিশিষ্ট অধিকারকর্মী নয়াব গোহর জান বলেছেন, “একজন নারীর বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার মুহূর্ত থেকে পুলিশে নথিভুক্ত করার পুরো প্রক্রিয়াটি এবং তারপরে আদালতের পদ্ধতি এমনভাবে গঠন করা হয়েছে যাতে ন্যায়বিচার অধরা থেকে যায়।”
সূত্রঃ এনডিটিভি
আরএমএ
আরও পড়ুন