নিরস্ত্র আফগানদের হত্যা করেছে ব্রিটিশ সেনারা, বিবিসির অনুসন্ধান
প্রকাশিত : ১৭:২৬, ১২ জুলাই ২০২২ | আপডেট: ১৭:২৯, ১২ জুলাই ২০২২
তালেবান সদস্যদের হত্যা কিংবা আটক করতে রাতে অভিযান চালাত এসএএস। ছবি: বিবিসি
আফগানিস্তানে অভিযানে থাকার সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বিশেষ শাখা এসএএস (স্পেশাল এয়ার সার্ভিস) এর সদস্যরা সন্দেহজনক কয়েকটি ঘটনায় কয়েকজন আটক ও নিরস্ত্র ব্যক্তিকে হত্যা করেছে বলে বিবিসির একটি অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে বিবিসি বলছে, আফগানিস্তানে ছয় মাসের অভিযানে থাকা এসএএসের একটি ইউনিট বেআইনিভাবে ৫৪ জনকে হত্যা করেছে।
এ ধরনের হত্যার ঘটনায় বিশেষ বাহিনীর সাবেক প্রধান তদন্ত দলকে তথ্য দিতেও ব্যর্থ হয়েছেন বলেও বিবিসি প্রমাণ পেয়েছে।
তবে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ব্রিটিশ সেনারা আফগানিস্তানে ‘সাহসিকতা ও পেশাদারিত্ব’ নিয়ে কাজ করেছে।
অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ স্পেশাল ফোর্সের সাবেক প্রধান জেনারেল স্যার মার্ক কার্লটন-স্মিথ আফগানিস্তানে সেনাদের বেআইনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানলেও রয়্যাল মিলিটারি পুলিশের (আরএমপি) কাছে তার কোনো তথ্য দেননি। এসএএস দলের বিষয়ে তদন্ত শুরু হওয়ার পরও তিনি আরএমপিকে কোনো তথ্য দেননি।
গত মাসে সেনাপ্রধান হিসেবে অবসরে যাওয়া জেনারেল কার্লটন-স্মিথ এ বিষয়ে বিবিসির সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
আফগানিস্তানে ব্রিটিশ বিশেষ বাহিনীর অভিযানের বিষয়ে কয়েক হাজার পাতার প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করেছে বিবিসি। হেলমান্দে ২০১০-১১ সালে এসএএস ইউনিটের ডজনখানের বেশি অভিযানের তথ্য রয়েছে। তালেবানের বিরুদ্ধে ওইসব অভিযানের লক্ষ্যই ছিল ‘হত্যা অথবা আটক’।
ওই এসএএস ইউনিটে ছিলেন এমন বেশ কয়েকজন সদস্য বিবিসিকে জানিয়েছেন, রাতের অন্ধকারে চালানো ওইসব অভিযানে ইউনিটের সদস্যদের নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করতে দেখেছেন তারা।
এভাবে নিরস্ত্র মানুষ হত্যাকে যৌক্তিক প্রমাণে ঘটনাস্থলে একে-৪৭ বন্দুক রেখে দেওয়া হতো বলে জানিয়েছেন তারা, যাকে বলা হতো ‘ড্রপ উইপনস’।
কে কত মানুষ হত্যা করতে পারে তা নিয়ে এসএএস দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতাও হতো বলে জানিয়েছেন বিশেষ বাহিনীর কয়েকজন সদস্য। বিবিসি এসএএসের যে দলটির তথ্য যাচাই করেছে, সেটিও তাদের আগের দলটির চেয়ে বেশি লাশ ফেলার চেষ্টা করছিল।
বিশেষ বাহিনীর মধ্যে চালাচালি হওয়া কয়েকটি ইমেইল বার্তায় দেখা গেছে, সম্ভাব্য বেআইনি হত্যাকাণ্ডের ঝুঁকি নিয়ে বিশেষ বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সজাগ ছিলেন, কিন্তু অঅইনি বাধ্যবাধকতা থাকার পরও তারা তাদের সন্দেহের বিষয়টি মিলিটারি পুলিশকে জানাননি।
এ প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের বিষয়ে তারা কোনো মন্তব্য করতে পারে না, তবে নিশ্চুপ থাকার মানে অভিযোগ মেনে নেওয়া, তাও ধরে নেওয়া উচিত হবে না।
মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ব্রিটিশ সেনারা আফগানিস্তানে ‘সাহসিকতা ও পেশাদারিত্ব’ নিয়ে কাজ করেছে এবং দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চ মান রক্ষা করেছে।
এএইচএস
আরও পড়ুন