মধ্যপ্রাচ্যে চীন-রাশিয়া-ইরানকে কোনো সুযোগ দেব না: বাইডেন
প্রকাশিত : ২১:১৯, ১৬ জুলাই ২০২২ | আপডেট: ২১:২২, ১৬ জুলাই ২০২২
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য থেকে "দূরে সরে যাবেনা" এবং রাশিয়া, চীন বা ইরানকে এই অঞ্চলে কোনোরূপ সুযোগ দেয়া যাবে না। এমনকি তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা অর্জন থেকে বিরত রাখার ব্যাপারেও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার সৌদি আরবের লোহিত সাগরের তীরবর্তী নগরী জেদ্দায় অনুষ্ঠিত আরব শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি আরও বলেন, ইরান যাতে কখনো পারমাণবিক অস্ত্র না পায়, তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সম্মেলনে আঞ্চলিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়েও আলোচনা করেন তিনি। এ সময় তিনি আরব নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ইসরায়েলকে একটি নতুন অক্ষের অংশ হিসেবে শক্তিশালী করতে চান।
একইসঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে চীন-রাশিয়াকে কোনোরকম সুযোগ দিতে চান না বাইডেন। সৌদি প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এই সম্মেলনে অংশ নেয় উপসাগীয় ছয়টি দেশ- সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, আরব আমিরাত, বাহরাইন ও ওমানসহ মিশর, জর্দান ও ইরাক।
এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের হস্তক্ষেপ ঠেকানো এবং তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা অর্জন থেকে বিরত রাখার ব্যাপারে একমত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব।
এদিন সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বাইডেনের বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দেশ দুটি।
বিবৃতিতে সৌদি আরবের নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক প্রতিরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন দৃঢ়ভাবে নিশ্চিত করেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
রিয়াদকে বাইরের দেশের হুমকির বিরুদ্ধে দেশটির জনগণ ও ভূখণ্ড রক্ষায় মার্কিন প্রতিশ্রুতি নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে বিবৃতিতে। সেই সঙ্গে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখার ওপর জোর দিয়েছে উভয় দেশ।
এর আগে সৌদিতে পৌঁছেই সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে সাক্ষাৎ করেন বাইডেন।
২০১৮ সালে সৌদি এজেন্টদের হাতে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার ঘটনায় বৈশ্বিক মঞ্চে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন বাইডেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত মার্কিন স্বার্থের কাছে সেসব ভুলে গেছেন তিনি। বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক সৌদি আরবের সাথে ফাটল ধরা সম্পর্ক জোড়া লাগানোর চেষ্টা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সৌদি মালিকানাধীন আল আরাবিয়া টেলিভিশন একজন সৌদি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, অপরিশোধিত তেলের উচ্চ মূল্য এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ে অন্যান্য সংকট যখন মাথাচাড়া দিচ্ছে, তখন ওপেক জায়ান্ট সৌদি আরবের সাহায্যের প্রয়োজন বাইডেনের। তাছাড়া ওয়াশিংটন এই অঞ্চলে ইরানের প্রভাব এবং চীনের বৈশ্বিক প্রভাব রোধ করতে চায়।
ওই প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, আগামীতে ওপেকের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আশাবাদী। বাইডেন উপসাগরীয় অন্যান্য দেশগুলোকে আরও তেল উৎপাদনের জন্য চাপ দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ১৩ জুলাই ইসরায়েলে অবতরণের মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু করেন। আরব সম্মেলনে অংশ নেওয়ার আগে মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইরাকের শীর্ষ নেতাদের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। আরব সম্মেলনে বাইডেন তার দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্টভাবে তুলে ধরে নিশ্চিত করতে চান, চীন এবং রাশিয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে যাতে কোনো শূন্যস্থান না থাকে। শুক্রবার মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান এসব তথ্য জানান। সূত্র- আল জাজিরা, রয়টার্স।
এনএস//
আরও পড়ুন