ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

মার্কিন আইনপ্রণেতাদের ভারতের জন্য সিএএটিএসএ অনুমোদন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৪৩, ১৭ জুলাই ২০২২

ভারতীয়-আমেরিকান কংগ্রেসম্যান এবং হাউস আর্মড সার্ভিসেস অ্যাক্টের সদস্য কংগ্রেসম্যান রো খান্না।

ভারতীয়-আমেরিকান কংগ্রেসম্যান এবং হাউস আর্মড সার্ভিসেস অ্যাক্টের সদস্য কংগ্রেসম্যান রো খান্না।

ইউএস হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) কাউন্টারিং আমেরিকাস অ্যাডভারসারিজ থ্রু সাংশনস অ্যাক্ট (সিএএটিএসএ) এর অধীনে এমন একটি আইন অনুমোদন করেছে যা ভারতকে কিছু ব্যাপারে ছাড় প্রদানের সুপারিশ করে। 

এতে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও গভীর হবে এবং চীনের মতো আগ্রাসীদের প্রতিরোধ করতে ভারতকে সহায়তা করবে।

ভারতীয়-আমেরিকান কংগ্রেসম্যান এবং হাউস আর্মড সার্ভিসেস অ্যাক্টের সদস্য, ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি কংগ্রেসম্যান রো খান্না, বার্ষিক ন্যাশনাল ডিফেন্স অথরাইজেশন অ্যাক্ট এর একটি সংশোধনী হাউসে উত্থাপন করলে হাউজ তা অনুমোদন করেছে।

তবে এই সংশোধনী আইনে পরিণত হওয়ার থেকে কয়েক ধাপ দূরে রয়েছে। এনডিএএ’র হাউস পাসের পরে সিনেটকে অবশ্যই এটি অনুমোদন করতে হবে। তারপরে আইন প্রণেতাদের অবশ্যই এই বছরের শেষের দিকে আবার ভোট দেওয়ার আগে আইনটির একটি আপস সংস্করণে পৌঁছাতে হবে, যা প্রতিরক্ষা ব্যয়ে ৮০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুমোদন করে।

খান্না প্রকাশিত একটি বিবৃতি অনুসারে, মার্কিন ও ভারত পারমাণবিক চুক্তির পর থেকে কংগ্রেসের বাইরে মার্কিন ও ভারতের সম্পর্কের জন্য এই স্মারক সংশোধনীটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আইন।

তিনি বলেন, ‘চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসনের মুখে যুক্তরাষ্ট্রকে ভারতের পাশে দাঁড়াতে হবে। ইন্ডিয়া ককাসের ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে, আমি আমাদের দেশগুলোর মধ্যে অংশীদারিত্ব জোরদার করার জন্য কাজ করছি এবং নিশ্চিত করছি যে ভারত ভারতীয়-চীনা সীমান্ত বরাবর আত্মরক্ষা করতে পারে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এই সংশোধনীটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি দ্বিদলীয় ভিত্তিতে সংসদে পাস হতে দেখে আমি গর্বিত।’

রো খান্না জানান, ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্ব, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে নিহিত, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশ্বের প্রাচীনতম এবং বৃহত্তম গণতন্ত্রগুলোর মধ্যে এই অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ। ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান হুমকির প্রতিক্রিয়ায় এটিকে জোরদার করা অব্যাহত রাখতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এই আইনটি একটি দ্ব্যর্থহীন সংকেত পাঠাচ্ছে যে সার্বভৌমত্ব এবং আন্তর্জাতিক আইনকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে।

এদিকে, একজন বিশ্লেষক এএনআইকে জানিয়েছেন, বাইডেন প্রশাসন ভারত সম্পর্কে কী ভাবে তার একটি ভালো সংকেত হলো এই সংশোধনটি।

প্রসঙ্গত, ভারতের নিরাপত্তার জন্য চীনের হুমকিকে তুলে ধরে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্বের ওপর জোর দেওয়ার জন্য কংগ্রেসের সদস্যদের এই সংশোধনীটি হলো সর্বশেষ প্রচেষ্টা।

রো খান্নার সংশোধনীতে, ‘চীন থেকে সীমান্ত হুমকি এবং রাশিয়ান অস্ত্রের উপর নির্ভরতা’ শিরোনামের একটি বিভাগ রয়েছে, যা প্রস্তাব করে যে কংগ্রেস স্বীকার করে ভারত ‘চীনের কাছ থেকে অবিলম্বে এবং গুরুতর আঞ্চলিক সীমান্ত হুমকির সম্মুখীন, যার সঙ্গে ভারত-চীন সীমান্ত বরাবর চীন সরকারের লাগামহীন সামরিক আগ্রাসন রয়েছে।’

এই সংশোধনীতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, ভারতের তাত্ক্ষণিক প্রতিরক্ষা চাহিদাগুলোকে জোরালোভাবে সমর্থন করার সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ভারতকে রাশিয়ান-নির্মিত অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার স্থানান্তর ত্বরান্বিত করতে উত্সাহিত করা।

হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ ভাষণ দেওয়ার সময়, খান্না ইউএস-ইন্ডিয়া ইনিশিয়েটিভ অন ক্রিটিকাল অ্যান্ড এমার্জিং টেকনোলজিস (আইসিইটি) এর প্রশংসা করেছেন, যা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি নরেন্দ্র মোদির মধ্যে টোকিও শীর্ষ সম্মেলনের সময়কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, বায়োটেকনোলজি, মহাকাশ এবং সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে ‘দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গঠনের জন্য একটি অপরিহার্য পদক্ষেপ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল ।

যদিও ভারত তার ভারী রাশিয়ান-নির্মিত অস্ত্র ব্যবস্থা বজায় রাখার তাত্ক্ষণিক প্রয়োজনের মুখোমুখি, এই ক্রান্তিকালীন সময়ে ‘কাউন্টারিং আমেরিকাস অ্যাডভার্সারি থ্রু স্যাংশনস’ আইনের অধীনে নিষেধাজ্ঞাগুলোকে থেকে ছাড় দিয়ে রাশিয়া ও চীনের ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের আলোকে আগ্রাসন ঠেকানোই আপাতত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভারত প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্বের সর্বোত্তম স্বার্থ হিসেবে দেখা হচ্ছে। 

সিএএটিএসএ এর অধীনে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই সমস্ত দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যাদের ইরান, উত্তর কোরিয়া বা রাশিয়ার সঙ্গে উল্লেখযোগ্য লেনদেন রয়েছে।

ভারত ২০১৮ সালের অক্টোবরে এস-৪০০-এর পাঁচটি স্কোয়াড্রনের জন্য রাশিয়ার সাথে ৫.৪৩ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে। যদিও এর আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের অধীনে একজন শীর্ষ কর্মকর্তার মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার অধিগ্রহণের জন্য ভারতের উপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। 

রো খান্না বলছেন, একটি শক্তিশালী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভারত প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব দুই দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের মধ্যে নিহিত এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এসি

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি