রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলায় মিয়ানমারের আপত্তি খারিজ
প্রকাশিত : ২১:০২, ২২ জুলাই ২০২২
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে দায়ের করা রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা নিয়ে তোলা দেশটির প্রাথমিক আপত্তি খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক আদালত (আইসিজে)। শুক্রবার (২২ জুলাই) গণহত্যার মামলায় মিয়ানমারের আপত্তি প্রত্যাখ্যান করে দেন আদালত। এতে আপাতত বিচারকাজ চলতে আর বাধা থাকলো না।
শুক্রবার (২২ জুলাই) স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায়) এর রায় পড়ে শোনান আইসিজে সভাপতি বিচারপতি জোয়ান ই ডনোগু।
গত ফেব্রুয়াারিতে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের আদালতে মিয়ানমারের আপত্তির প্রেক্ষিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে, এই রায়ের ফলে মামলার পূর্ণ শুনানির পথ আরও প্রশস্ত হলো। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
চলতি বছরের নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের এই আদালতে মিয়ামারের আপত্তির বিষয়ে যুক্তিতর্ক শুনানি হয়।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা বন্ধের পাশাপাশি দোষীদের শাস্তি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় গাম্বিয়া ২০১৯ সালের নভেম্বর আন্তর্জাতিক আদালত (আইসিজে)-তে নেইপিদোর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে।
ওই মামলার বিরুদ্ধেই প্রাথমিকভাবে আপত্তি জানিয়েছিল মিয়ানমার সরকার। যা খারিজ করে দিল আদালত। আজ আদালতের দেয়া এই আদেশের পর মামলাটি চলতে এখন আর কোনো বাধা রইল না।
মিয়ানমারের দাবি ছিল, পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার করা এই মামলার বিচার করার এখতিয়ার নেই আইসিজের। তবে শুক্রবারের রায়ে আন্তর্জাতিক আদালত বলেছেন, রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার করার পুরো এখতিয়ার রয়েছে তাদের।
২০১৭ সালে বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়ে, ধর্ষণ ও হত্যা করে জাতিগত নিধন অভিযান চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেসময় নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা। তারা এখনো তাদের জন্মভূমিতে ফিরতে পারেনি।
রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে ২০১৯ সালের নভেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে গাম্বিয়া। ওই বছরের ১০-১২ ডিসেম্বর এই মামলায় প্রথমবার প্রাথমিক শুনানি হয়। এতে গাম্বিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির আইন ও বিচার মন্ত্রী আবুবকর তামবাদু। আর মিয়ানমারের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি।
২০২০ সালে আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার দলিল দাখিল করে গাম্বিয়া। সেখানে দেখানো হয়, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কীভাবে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে।
তবে এ মামলায় আইসিজের এখতিয়ার নেই দাবি করে একপর্যায়ে চ্যালেঞ্জ জানায় মিয়ানমার সরকার। সু চি কারাবন্দি থাকায় এ বিষয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত শুনানিতে অংশ নেন মিয়ানমার জান্তার প্রতিনিধিরা।
এনএস//
আরও পড়ুন