মাঙ্কিপক্সের চেয়েও ভয়ঙ্কর মেনিনজাইটিস
প্রকাশিত : ০৮:৪৪, ২৪ জুলাই ২০২২
করোনা নিয়ে উদ্বেগ পিছু ছাড়েনি। এর মাঝেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে মাঙ্কিপক্স। তার ওপর সংক্রমণ ছড়িয়েছে ব্যাকটেরিয়াজনিত আরেক রোগ। মাঙ্কিপক্সের চেয়েও এই সংক্রামক আরও বেশি ভয়ঙ্কর বলে জানিয়েছেন ভাইরোলজিস্টরা। যার নাম মেনিনগোক্কাল মেনিনজাইটিস।
দ্য ওয়ালের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রে ইতোমধ্যে এ রোগের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু ফ্লোরিডাতেই আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১২ জন, সংক্রমিত অর্ধশতাধিক। সংক্রমণ সংখ্যা দিন দিন আরও বাড়ছে।
মেনিনগোক্কাল মেনিজাইটিস মারাত্মক সংক্রামক রোগ, যা সরাসরি মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ব্রেইনে প্রদাহ হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, এই সংক্রামকের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া ১৫ শতাংশ মানুষ তাদের বাকি জীবদ্দশায় মস্তিষ্ক ও স্নায়ু রোগের মতো জটিল সমস্যায় ভুগতে থাকে।
মেনিনজাইটিসের কারণ হলো নেইসেরিয়া মেনিনজাইটিডিস নামে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া, যাকে মেনিগোকোকাসও বলা হয়। এই রোগ এক ব্যক্তি থেকে অন্যের মধ্যে খুব সহজেই কফ বা হাঁচি-কাশির সঙ্গে শ্বাসযন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসা কণার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আক্রান্তের লালার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ড্রপলেট সহজেই সুস্থ ব্যক্তির শরীরে ছড়াতে পারে। ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রোগের উপসর্গ দেখা দেয়, চিকিৎসা না হলে মৃত্যু ঘটতে পারে।
মেনিনগোক্কাল রোগের সংক্রমণ যে কোনো বয়সেই হতে পারে। বিশেষ করে পাঁচ বছরের নিচে বাচ্চা ও বয়স্করা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম হলে কমবয়সীদের মধ্যেও এ রোগ মহামারি হয়ে উঠতে পারে।
ব্যাকটেরিয়া মূলত রোগীর নাকে ও গলায় বাসা বাঁধে এবং সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে না চললে সহজেই আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে অন্য কারও মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
যেসব লক্ষণ দেখা দেয়
জ্বর বা কাঁপুনি, খিঁচুনি, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, পেশিতে অসহ্য যন্ত্রণা, মাথাব্যথা, স্টিফ হয়ে যেতে পারে ঘাড়, বমি-বমি ভাব, ক্লান্তি, ঝিমুনি, চোখে আলো পড়লে অস্বস্তি, মানসিক স্থিতি বদল—এই লক্ষণগুলো দেখা দিলেই রক্ত এবং সেরিব্রাল ফ্লুইড পরীক্ষা করতে হবে। দেখতে হবে ব্যাকটেরিয়ার স্ট্রেন রয়েছে কি না।
এই রোগ প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হলো ভ্যাকসিন। এমসিভি–মেনিনগোক্কাল কনজুগেট ভ্যাকসিন বাচ্চাদের দিয়ে রাখলে ভালো। এই ভ্যাকসিনটিই অনূর্ধ্ব নয় মাসের বাচ্চাদেরও দেয়া যায়। প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ার কারণে এ সময়েই বাচ্চাদের সবচেয়ে বেশি ভ্যাকসিনের দরকার হয়।
এনএস//
আরও পড়ুন