মাঙ্কিপক্স নিয়ে ডব্লিউএইচও’র বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি
প্রকাশিত : ০৮:৫৭, ২৪ জুলাই ২০২২
ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের কারণে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ডব্লিউএইচওর জরুরি কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস নিয়ে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সতর্কতা জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
শনিবার (২৩ জুলাই) জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক এই সংস্থাটি জরুরি সতর্কতা জারি করে।
ডব্লিউএইচও ঘোষণা দিয়েছে, বিশ্বব্যাপী মাঙ্কিপক্সের বিস্তার আন্তর্জাতিক উদ্বেগের পাশাপাশি জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতার পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সারা বিশ্বের সরকারগুলো ক্রমবর্ধমান প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে কঠোরভাবে চেষ্টা চালালেও ভাইরাসটি আরও ছড়িয়ে পড়ার ‘সুস্পষ্ট ঝুঁকি’ রয়েছে।
জাতিসংঘের সংস্থাটির পক্ষ থেকে এটিই সর্বোচ্চ সতর্কতার মাত্রা। ২০০৭ সালে চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইবোলা, জিকা, কোভিড-১৯, পোলিওসহ মাত্র ছয়টি রোগের প্রাদুর্ভাবের জন্য এই সতর্কতা জারি করে তারা।
গত জুনে ডব্লিউএইচও প্রধান তেদ্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেছিলেন, তিনি মাঙ্কিপক্সকে ‘গুরুতর উদ্বেগ’ হিসেবে দেখলেও জরুরি সতর্কতা জারির মতো ভাবছেন না। তবে গত বৃহস্পতিবার প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে আলোচনার পর নিজের মত বদলেছেন তিনি।
মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাব আসলেই জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারির পর্যায়ে পৌঁছেছে কি না, সে বিষয়ে ঐকমত্য হতে পারেনি বিশেষজ্ঞ কমিটি। তবু এই ঘোষণা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডব্লিউএইচও প্রধান।
তিনি বলেছেন, আমাদের একটি প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, যা বিশ্বজুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। এটি ছড়াচ্ছে নতুন পদ্ধতিতে, যে বিষয়ে আমরা খুব কমই বুঝতে পারি। এ কারণে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বিশ্বব্যাপী মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব আন্তর্জাতিক উদ্বেগের জরুরি স্বাস্থ্য সতকর্তার পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৭০টির বেশি দেশে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ১৬ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে জুনের শেষ থেকে জুলাইয়ের শুরু পর্যন্ত সংক্রমণের হার বেড়েছে ৭৭ শতাংশ।
সংস্থাটি জানিয়েছে, পুরুষ সমকামীদের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
চলতি বছরে আফ্রিকায় মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ মহাদেশের বাইরে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
মাঙ্কিপক্স রোগের জন্য এখনও সুনির্দিষ্ট কোনো টিকা বা ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। তবে ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, স্মলপক্স বা গুটিবসন্তের জন্য ব্যবহৃত টিকা মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে ৮৫ শতাংশ কার্যকর। রোগীদের সেবা দেওয়ার সময় যারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন, সেই স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের গুটিবসন্তের টিকা দেওয়া শুরু করেছে যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) তথ্য বলছে, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগী দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে সেরে উঠছে। ভাইরাসটি একটি ফুসকুড়ি সৃষ্টি করে, যা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আক্রান্ত ব্যক্তিরা বলেছেন, ব্রণ বা ফোস্কার মতো দেখতে ওই ফুসকুড়ি খুব যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে।
এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, গুটিবসন্তের জন্য অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ রয়েছে; যা বিশেষ পরিস্থিতিতে মাঙ্কিপক্সের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে।
এএইচ
আরও পড়ুন