‘শ্রমিক শ্রেণির বন্ধু নেই’ মন্তব্য বোকামি ছিল: সুনাক
প্রকাশিত : ১৩:৫২, ৩১ জুলাই ২০২২
দশ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট দখলের দৌড়ে প্রতিদ্বন্দ্বী লিজ় ট্রাসের সামনে বর্তমানে কিছুটা হলেও পেছনে রয়েছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক। লড়াইয়ের পরিসর বিস্তৃত হওয়ার পরেই এমনটা মনে করা হচ্ছে। এর মধ্যে আবার অতীতের কিছু ঘটনা বার বার বিতর্কের মুখে ফেলছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুনাককে। তেমনই পুরনো এক বক্তব্য ভুল ছিল বলে স্বীকারও করেছেন তিনি।
সম্প্রতি সুনাকের এক বক্তব্য বির্তকে ইন্ধন জুগিয়েছে, যা ২০০৭ সালে বিবিসির এক তথ্যচিত্রের একটি ভিডিও ক্লিপ। সেখানে সুনাক বলেছিলেন, সব শ্রেণির মানুষই তার বন্ধু, তবে শ্রমিক শ্রেণির কারও সঙ্গে তার নাকি সখ্য নেই!
সম্প্রতি জনপ্রিয় সঞ্চালক অ্যান্ড্রু নিলের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন সুনাক। সেখানে এই প্রসঙ্গটি তুলে সুনককে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়।
ভাইরাল হওয়া সেই সাক্ষাৎকার নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সু্নাক অনুষ্ঠানে জানান, ২০০৭ সালে ছাত্রাবস্থায় ওই সাক্ষাৎকারটি দিয়েছিলেন তিনি। তবে তার যে শ্রমিক শ্রেণির কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব নেই তা ফলাও করে বলা সত্যিই ‘বোকামি’ হয়েছে।
শ্রেণি বিষয়ে নেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক বন্ধুকে সুনাক বলেছিলেন, ‘সব শ্রেণির বন্ধুই রয়েছে আমার কিন্তু শ্রমিক শ্রেণির কেউ নেই।‘
তবে ‘অপরিণত’ বয়সের সেই মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী সুনাকের দাবি, ‘ছাত্রাবস্থায় আমরা সকলেই অনেক বোকা বোকা কথা বলে থাকি। তবে আপনাদের সামনে আমি আমার পারিবারিক ইতিহাস নিয়েও অনেক বার কথা বলেছি। আমি এক অভিবাসী পরিবারের সন্তান।
‘আমি আমার মায়ের ওষুধের দোকানে কাজ করে বড় হয়েছি। আর এ রকম কাজ করা মানেই অনেক ধরনের মানুষের সঙ্গে পরিচয় এবং যোগাযোগ। সেটাই স্বাভাবিক। তা হলে বুঝতেই পারছেন!’
তবে নিজে অভিবাসী পরিবারের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও আশ্রয় চাইতে আসা অভিবাসীদের একেবারে রোয়ান্ডায় পাঠানোর মতো কড়া সরকারি নীতির পক্ষপাতী কেন তিনি?
নিলের এই প্রশ্নের জবাবে সুনাক বলেন, ‘এই দেশে মানুষকে আপন করে নেওয়ার একটি গর্বের ইতিহাস রয়েছে তা আমরা সকলেই জানি। তবে হ্যাঁ, যখন তা পুরোটাই সঠিক পদ্ধতিতে এবং নিয়ন্ত্রিতভাবে করা হয় তখনই। কারণ মনে রাখতে হবে, আমরা একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকেই জায়গা দিতে পারি। আমার মনে হয় দেশবাসীও এর সঙ্গে একমত হবেন।’
এরপর আসে কর প্রসঙ্গ। প্রথমেই প্রশ্ন আসে তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তিকে নিয়ে। অভিযোগ, ‘নন-ডমিসাইল ট্যাক্স স্টেটাস’ ধরে রেখে তার পারিবারিক সংস্থা ইনফোসিসসহ ভারত এবং অন্যান্য দেশ থেকে আসা আয় বাবদ ব্রিটেনে কর দেওয়া এড়িয়ে গেছেন অক্ষতা।
আর যা ‘ভুল’ হয়েছে বলেই এ দিন স্বীকার করে নিয়েছেন সুনাক।
তিনি বলেন, ‘তিনিও (অক্ষতা) বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন এবং একটি বিবৃতিও দিয়েছেন। নিজের পরিবারের এমন বিষয় সামনে এলে কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয় ঠিকই, আমি এই ঘটনা থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। আমার মনে হয় এগুলো আমাকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আরও প্রস্তুত করে দিয়েছে।’
সূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন
আরএমএ/এএইচএস/এমএম
আরও পড়ুন