ঢাকা, রবিবার   ০৩ নভেম্বর ২০২৪

তাইওয়ান কি সবসময় চীন থেকে আলাদা ছিল?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৫৩, ৪ আগস্ট ২০২২

চীন বরাবরই দাবি করে তাইওয়ান চীনের একটি প্রদেশ। কিন্তু তাইওয়ান সরকার এবং বেশিরভাগ তাইওয়ানিজ আবার তা আস্বীকার করে। বিতর্কটি অনেক পুরোনো। কিন্তু এটি আবার সামনে এসেছে পেলোসির তাইওয়ান সফর একং চীনের হুমকির প্রেক্ষিতে। 

খুব সহজ ভাবে বললে, চীন মনে করে তাইওয়ান তাদের দেশেরই অংশ। এটি চীন থেকে বেরিয়ে যাওয়া একটি প্রদেশ। যেটি ভবিষ্যতে কোন একদিন চীনের সঙ্গে বিলুপ্ত হবে।

তাইওয়ান নিজেকে কিভাবে দেখে সেটার উত্তর অবশ্য এতটা সরল নয়। সেখানে কোন কোন দল এবং জনগণের একটি অংশ তাইওয়ানকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে দেখতে চান। কেউ কেউ চীনের সঙ্গে একীভূত হওয়ার পক্ষে।

আর জনগণের একটা বিরাট অংশ এখনো মনস্থির করে উঠতে পারেননি। তারা বরং তাইওয়ান এখন যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থাতেই থেকে যাওয়ার পক্ষে। অর্থাৎ চীনেরও অংশ নয়, আবার চীন থেকে আলাদাও নয়।

তবে ঐতিহাসিক সূত্রগুলো বলছে যে তাইওয়ান প্রথম পুরো চীনের নিয়ন্ত্রণে আসে সতেরশ' শতাব্দীতে যখন কিং রাজবংশের শাসনামল শুরু হয়। এরপর ১৮৯৫ সালে প্রথম চীন-জাপান যুদ্ধে হেরে যাবার পর চীনকে এই দ্বীপটি তুলে দিতে হয় জাপানের হাতে।

এরপর জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হেরে যাবার পর ১৯৪৫ সালে চীন আবার জাপানের কাছ থেকে দ্বীপটি নিয়ে নেয়।

কিন্তু মূল চীনা ভুখণ্ডে চিয়াং কাই-শেক-এর নেতৃত্বাধীন দেশটির জাতীয়তাবাদী সরকারি বাহিনী এবং মাও-এর কম্যুনিস্ট পার্টির মধ্যে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।

ঐ যুদ্ধে জয়ী হয়ে ১৯৪৯ সালে কম্যুনিস্টরা বেইজিংএ ক্ষমতায় বসে।

চিয়াং কাই-শেক এবং তার জাতীয়তাবাদী দলের তখনও যেটুকু অবশিষ্ট ছিল- যারা পরিচিত ছিল কুয়োমিনটাং নামে - তারা পালিয়ে যায় তাইওয়ান দ্বীপে। পরবর্তী বেশ কয়েক দশক তারা ওই দ্বীপ শাসন করে।

চীন এই ইতিহাস উল্লেখ করেই দাবি করে থাকে যে তাইওয়ান শুরু থেকেই চীনের একটি প্রদেশ ছিল। কিন্তু তাইওয়ানিরা আবার একই ইতিহাসের কথা বলে যুক্তি দেখায় যে ১৯১১ সালের বিপ্লবের পর প্রথম যে আধুনিক চীনা রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল, অথবা তারও পরে মাওএর অধীনে যে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠিত হয়, - তারা কখনই তার কোন অংশ ছিল না।

সেই সময় থেকেই কুয়োমিনটাং ছিল তাইওয়ানের সবচেয়ে পরিচিতি প্রথম সারির রাজনৈতিক দলগুলোর একটি - যারা তাইওয়ানের ইতিহাসের একটা উল্লেখযোগ্য সময় জুড়ে দ্বীপটি শাসন করেছে।

বর্তমানে, মাত্র ১৩টি দেশ এবং ভাটিকান তাইওয়ানকে সার্বভৌম একটি দেশের স্বীকৃতি দেয়।

তাইওয়ানকে স্বীকৃতি না দেবার জন্য অথবা স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে এমন ধারণা না দেবার জন্য চীন অন্যান্য দেশের ওপর প্রবল কূটনৈতিক চাপ দিয়ে থাকে।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন চীনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক গত ৪০ বছরের মধ্যে এখন সবচেয়ে খারাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
 

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি