তাইওয়ান প্রণালীতে ফের বাড়ছে উত্তেজনা
প্রকাশিত : ১৬:৪০, ২১ আগস্ট ২০২২
চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে সম্পর্ক শোধরানোর কোনও লক্ষণ নেই। উল্টো দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার পারদ আরও চড়ল। আমেরিকান হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইপেই সফরের পরেই তাইওয়ান প্রণালীতে নজিরবিহীন ভাবে সামরিক মহড়া চালিয়েছিল চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি।
গত সপ্তাহে আমেরিকান কংগ্রেসের কিছু সদস্য ফের তাইওয়ান সফরে এসেছিলেন। যার প্রতিবাদে চলতি সপ্তাহের গোড়ায় ফের তাইওয়ানকে ঘিরে ধরে সামরিক মহড়া চালিয়েছে চীন। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সেই মহড়া চলাকালীন চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমাণ্ড নতুন করে অন্তত ৩০টি যুদ্ধবিমান এবং পাঁচটি জাহাজ তাইওয়ান প্রণালীতে মোতায়েন করেছে। যা নিয়ে প্রবল ক্ষুব্ধ তাইওয়ান সরকার।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গতকাল বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অন্তত ১৭টি চীনা সামরিক বিমান ও পাঁচটি জাহাজকে তারা অনুসরণ করতে পেরেছে যার মধ্যে ৮টি বিমান তাইওয়ান প্রণালীর মধ্য রেখা অতিক্রম করেছে। আন্তর্জাতিক জল ও আকাশসীমা আইন অনুযায়ী, এই রেখাকে আসলে চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে বিভাজন রেখা হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু চীন যেহেতু তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে, তাই তারা কোনও দিনই ওই বিভাজন রেখাকে মানে না।
তাইওয়ান সরকার জানিয়েছে, পিপলস লিবারেশন আর্মির যে ৮টি সামরিক বিমান মধ্য রেখা অতিক্রম করেছিল, সেগুলির মধ্যে রয়েছে চারটি শিয়ান জেএইচ-৭ বোমারু বিমান, দুটো সুখোই সু-৩০ যুদ্ধবিমান ও দু’টো শেনইয়াং জে-১১ জেট। চীনের এই অতি তৎপরতার প্রেক্ষিতে তাইওয়ান প্রণলীতে নজর রাখতে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও যুদ্ধ জাহাজ ও ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী সিস্টেম মোতায়েন করেছে।
এর মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি দাবি করেছে, তাইওয়ানের একেবারে নাকের ডগায় পেংঘু দ্বীপের উপরে নজরদারি চালাচ্ছে তাদের বিমান। তাইওয়ান বিমানবাহিনীর ভাইস চিফ অব স্টাফ টুং পেই-ইউন অবশ্য চীনের সেই দাবি নস্যাৎ করেছেন। তার সাফ বক্তব্য, চীন সব সময়েই চাপ বজায় রাখার জন্য বাড়িয়ে বাড়িয়ে কথা বলে।
তবে তাইওয়ান নিয়ে আগামী সপ্তাহের মধ্যে বড় কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন। খুব সম্প্রতি একটি সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস।
ওয়াশিংটনের সেই সিদ্ধান্ত সামরিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে তাইওয়ানের উপরে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। যা চীন মোটেও ভাল চোখে দেখবে না বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তবে প্রাইস স্পষ্টই বলেছেন, ‘‘চীন গোটা অঞ্চলের (তাইওয়ান প্রণালী) স্থিতাবস্থা নষ্ট করতে চায়। আমরা তা হতে দেব না। আমাদের আগামী কিছু পদক্ষেপেই তা সকলে বুঝতে পারবেন।’’ সূত্র: আনন্দবাজার
এসি
আরও পড়ুন