শেষ মুহূর্তে গুলি বের না হওয়ায় বেঁচে যান ক্রিস্টিনা
প্রকাশিত : ১৯:৫৩, ২ সেপ্টেম্বর ২০২২
একজন বন্দুকধারী ভিড়ের মধ্যে আর্জেন্টিনার ভাইস প্রেসিডেন্টের কপাল তাক করে গুলি করলে অস্ত্রটি ঠিক মতো কাজ না করায় তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা ফের্নান্দেজ ডে কির্চনারকে তার সমর্থকরা ঘিরে আছেন, এবং এক পর্যায়ে তার মুখের ওপর একটি অস্ত্র তাক করে গুলি করা হচ্ছে।
প্রথমে তিনি বুঝতে পারছিলেন না কী হচ্ছে। পরে তিনি মাটিতে পড়ে যাওয়া কিছু একটা জিনিস তুলতে নিচু হয়ে বসে পড়েন।
ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা ফের্নান্দেজ ডে কির্চনার আদালত থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন। দুর্নীতির অভিযোগে তার বিচার চলছে। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।
পুলিশ বলছে ওই বন্দুকধারীকে আটক করে তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে অভিযুক্ত ব্যক্তি ৩৫ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত। পুলিশ এখন বামপন্থী এই নেতার ওপর এই হামলার উদ্দেশ্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
ক্রিস্টিনা ফের্নান্দেজ ডে কির্চনার ২০০৭ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এর আগের চার বছর তিনি দেশটির ফার্স্ট লেডি ছিলেন।
প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফের্নান্দেজ বলেছেন, বন্দুকটিতে পাঁচটি বুলেট ছিল। কিন্তু ট্রিগার চাপার পরে গুলি বের না হওয়ায় তার ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।
কেন বন্দুকটি শেষ মুহূর্তে কাজ করেনি, সেবিষয়ে এখনও কিছু বলা হয়নি।
আরেকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ক্রিস্টিনা ফের্নান্দেজ ডে কির্চনারকে তার সমর্থকরা সন্দেহভাজন বন্দুকধারীর হামলা থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করছেন।
ওই হামলাকারী তার খুবই কাছে চলে এসেছিল। মাত্র কয়েক ইঞ্চি দূর থেকে তাকে গুলি করার চেষ্টা করা হয়। শেষ মুহূর্তে গুলি বের না হওয়ায় তিনি বেঁচে গেছেন।
পুলিশের একজন মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ঘটনাস্থলের কয়েক মিটার দূর থেকে একটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
ক্রিস্টিনা ফের্নান্দেজ ডে কির্চনারের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে তিনি প্রেসিডেন্ট থাকার সময় রাষ্ট্রের সাথে প্রতারণা এবং সরকারি অর্থের অপব্যবহার করেছেন। এসব অভিযোগে আদালতে যখন তার বিচার চলছে তখন তাকে সমর্থন জানাতে গত কয়েকদিন ধরেই তার বাড়ির সামনে লোকজন জড়ো হচ্ছে।
তাকে হত্যা প্রচেষ্টার ঘটনার সময় তিনি তার সমর্থকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন।
এসব অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে তার ১২ বছরের কারাদণ্ড, এমনকি রাজনীতিতেও তাকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার পর রাতে প্রেসিডেন্ট ফের্নান্দেজ, যিনি মিজ ফের্নান্দেজ ডি কির্চনার এবং তার স্বামীর শাসনামলে চিফ-অফ-স্টাফের দায়িত্ব পালন করেছেন, বলেছেন, "যে কারণে ক্রিস্টিনা বেঁচে গেছেন সেটি এখনও নিশ্চিত করা যায়নি, বন্দুকটিতে পাঁচটি গুলি ছিল, কিন্তু কোনো কারণে গুলি বের হয়নি।"
তিনি বলেন, "১৯৮৩ সালে আর্জেন্টিনা গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার পর এটা সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনা।"
"আমরা একমত না হতে পারি, আমাদের মধ্যে বড় ধরনের মতবিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু ঘৃণা ছড়ায় এরকম বক্তব্য দেওয়া যাবে না, কারণ এটি সহিংসতার জন্ম দেয়। গণতন্ত্রে সহিংসতার কোনো জায়গা নেই," বলেন প্রেসিডেন্ট ফের্নান্দেজ।
এই হত্যা-প্রচেষ্টার নিন্দা জানিয়ে তিনি শুক্রবার একদিনের জাতীয় ছুটি ঘোষণা করেছেন। এই ঘটনার ব্যাপারে ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা ফের্নান্দেজ ডে কির্চনার এখনও কোনো মন্তব্য করেননি। সূত্র: বিবিসি বাংলা
এসি
আরও পড়ুন