ঢাকা, রবিবার   ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

যুক্তরাজ্যের তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী, কে এই লিজ ট্রাস?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৪৮, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

যুক্তরাজ্যে ক্ষমতাসীন কনসারভেটিভ পার্টির সদস্যদের ভোটে দলের নেতা নির্বাচিত হয়েছেন লিজ ট্রাস, তিনিই দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। আগামীকাল বরিস জনসন ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বিদায় নেয়ার পর তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেবেন।

লিজ ট্রাস হবেন যুক্তরাজ্যের তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী। যুক্তরাজ্যের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মার্গারেট থ্যাচার। তিনি ১৯৭৯ সাল হতে টানা ১১ বছর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। টেরিজা মে ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন, কিন্তু ব্রেক্সিট নিয়ে তীব্র বিভেদ এবং টানাপোড়েনের মধ্যে তাকে বিদায় নিতে হয়।

গত জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যখন দলের মধ্যে তীব্র অসন্তোষের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে বাধ্য হন, তার পরই ক্ষমতাসীন কনসারভেটিভ পার্টিতে নতুন নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই প্রতিযোগিতায় শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক।

কনসারভেটিভ পার্টির সদস্যদের ভোটে শেষ পর্যন্ত এতে জয়ী হয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। তিনি ৮০ হাজার ৩২৬ ভোট পান, আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী ঋষি সুনাক পান ৬০ হাজার ৩৯৯ ভোট।

কনসারভেটিভ পার্টির ভোটের ফল ঘোষণার পর লিজ ট্রাস তার প্রথম ভাষণে বলেন, ব্রিটিশ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা এবং কর কমানোর জন্য তার একটি 'বলিষ্ঠ পরিকল্পনা' রয়েছে।

কনসারভেটিভ পার্টির পেছন সারি থেকে যেভাবে সরকারের শীর্ষ পদে তার দ্রুত উত্থান ঘটেছে, তা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বিস্মিত করেছে।

বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন ৪৭ বছর বয়সী লিজ ট্রাস। তার বাবা ছিলেন গণিতের শিক্ষক এবং মা নার্স। ট্রাস অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন, রাজনীতি এবং অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।

লেখাপড়া শেষ করে কিছুদিন অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবেও কাজ করেন তিনি। এরপর নামেন রাজনীতিতে। ট্রাস প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন ২০১০ সালে। তিনি প্রাথমিকভাবে ব্রেক্সিট অর্থাৎ যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে ছিলেন।

পরে ব্রেক্সিটের নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হওয়া বরিস জনসনকে সমর্থন করেন ট্রাস। ব্রিটিশ মিডিয়া প্রায়ই লিজ ট্রাসকে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের সঙ্গে তুলনা করে।

তার পুরো নাম মেরি এলিজাবেথ ট্রাস। ১৯৭৫ সালের ২৬ জুলাই ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে জন কেনেথ এবং প্রিসিলা মেরি ট্রাসের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই পরিচিত ছিলেন এলিজাবেথ নামে। ট্রাসের বয়স যখন চার বছর তখন তার পরিবার স্কটল্যান্ডে চলে আসে।

২০১৯ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের নারী ও সমতা বিষয়ক মন্ত্রী এবং ২০২১ সাল থেকে পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ এবং উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ট্রাস। ডেভিড ক্যামেরন, থেরেসা মে এবং বরিস জনসনের অধীনে তিনি মন্ত্রিসভার বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হলে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির রাশ টেনে ধরার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাস। তবে কীভাবে তিনি জ্বালানি তেলের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি মোকাবিলা করতে চান সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাস বলেন, জনগণ এবং দেশের অর্থনীতি উভয়ের জন্যই জ্বালানি বিল নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা ‘জরুরি’। প্রধানমন্ত্রী হতে পারলে একটি জরুরি বাজেট থেকে প্রায় তিন হাজার কোটি পাউন্ড কর কমিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি