ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

মাশা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানের নৈতিকতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০২, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

Ekushey Television Ltd.

ইরানের তথাকথিত নৈতিকতা রক্ষার দায়িত্বে থাকা পুলিশ বাহিনীর হেফাজতে ২২ বছর বয়সী মাশা আমিনির মৃত্যুর পর বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছেন ইরানের নারীরা। ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির কঠোর পোশাক বিধি এবং তা বলবৎ করার দায়িত্বে যারা আছে তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফুঁসে ওঠা নারীরা প্রতিবাদস্বরূপ তাদের হিজাব পুড়িয়ে ফেলছেন।

গাশ্ত-ই এরশাদ (আক্ষরিক অনুবাদ - নির্দেশ টহলদার) নামের এই বিশেষ পুলিশ বাহিনীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মানুষ যাতে ইসলামি আদর্শ ও নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয় সেটা নিশ্চিত করার এবং কেউ "অনৈতিক" পোশাক পরেছে মনে হলে তাকে আটক করার।

ইরানে প্রচলিত শরিয়া আইন অনুযায়ী নারীদের হিজাব পরা বা চাদর দিয়ে মাথা ঢাকা বাধ্যতামূলক। এছাড়াও নারীদের শরীর সম্পূর্ণ ঢেকে রাখতে পা পর্যন্ত লম্বা ও ঢিলা পোশাক পরার বিধান দেশটিতে রয়েছে।

তেহরানে ১৩ই সেপ্টেম্বর এই নৈতিকতা রক্ষা পুলিশ যখন মিজ আমিনিকে গ্রেপ্তার করে তখন হিজাবের তলা দিয়ে তার কিছু চুল দেখা যাচ্ছিল বলে অভিযোগ করা হয়। একটি আটক কেন্দ্রে তাকে নিয়ে যাবার অল্পক্ষণ পরই মাশা আমিনি অজ্ঞান হয়ে যান এবং কোমায় চলে যান। তিন দিন পর তিনি হাসপাতালে মারা যান।

অফিসাররা তার মাথায় লাঠির বাড়ি মেরেছে এবং তাদের একটি গাড়িতে মিজ আমিনির মাথা ঠুকে দিয়েছে এমন অভিযোগ পুলিশ বাহিনী থেকে অস্বীকার করা হয়।

গাশ্ত-ই এরশাদ নামে বিশেষ এই নজরদারি পুলিশ বাহিনীর একজন অফিসার নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে দেয়া একটি একান্ত সাক্ষাৎকারে ওই বাহিনীতে তার কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন।

"ওরা আমাদের বলে যে নারীদের রক্ষা করার লক্ষ্যে আমরা পুলিশের এই নৈতিকতা রক্ষা বাহিনীতে কাজ করছি," তিনি বলেন। "কারণ নারীরা যদি ঠিকমত পোশাকআশাক না পরে, তাহলে পুরুষরা উত্তেজিত হবে এবং ওই নারীদের ক্ষতি করবে।"

তিনি বলেন, তারা ছয় জনের দলে কাজ করেন। দলে থাকেন চারজন পুরুষ এবং দুজন নারী পুলিশ। যেসব এলাকায় মানুষ পায়ে হেঁটে বেশি চলাচলা করে এবং যেসব এলাকায় মানুষের ভিড় বেশি হয়, সেসব এলাকার ওপর তারা বেশি নজর রাখেন।

"ব্যাপারটা অবশ্য একটু অদ্ভুত। কারণ আমাদের কাজের লক্ষ্য যদি হয় মানুষকে নির্দেশগুলো বোঝানো, সেগুলো মানতে বলা, তাহলে আমরা কেন জনাকীর্ণ এলাকাগুলো বেছে নিচ্ছি? প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে কি আমরা এমন জায়গা বেছে নিচ্ছি যেখানে বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা যাবে?"

"মনে হতে পারে আমরা শিকারের সন্ধানে যাচ্ছি।"

এই পুলিশ অফিসার বলেন, পোশাক বিধি লংঘন করছে এমন যথেষ্ট সংখ্যক মানুষকে ধরতে না পারলে তাকে তার ঊর্ধ্বতন কমান্ডারের তিরস্কারের মুখে পড়তে হয়, বা শুনতে হয় যে সে ঠিকমত দায়িত্ব পালন করছে না। তিনি আরও বলেন মানুষকে গ্রেপ্তার করার সময় যখন তাদের বাধার মুখে পড়তে হয়, সেটা তার জন্য বিশেষ করে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

"তারা জানে আটক করে আমরা তাদের জোর করে পুলিশের ভ্যানে ওঠাব। এ কাজ করার সময় বহুবার আমার চোখে পানি চলে এসেছে।

"আমি তাদের বলতে চেয়েছি আমি ঠিক ওদের একজন নই। আমরা বেশিরভাগই সাধারণ সৈনিক- আমাদের বাধ্য হয়ে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। আমার খুবই খারাপ লাগে।"

বিপ্লব পরবর্তী ডিক্রি

যারা হিজাব ঠিকমত পরে না বা ইসলামি রীতি মেনে সাজপোশাক করে না, ইরানি কর্তৃপক্ষ তাদের "হিজাব ঠিকমত না পরার'' বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পরপরই। ওই বিপ্লবের একটা বড় লক্ষ্য ছিল নারীদের খোলামেলা সাজপোশাক বন্ধ করা।

যদিও সেসময় ইরানের অনেক নারীই ইসলামি রীতি অনুযায়ী পোশাক পরতেন, কিন্তু পশ্চিমাপন্থী শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলাভিকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলনের আগে তেহরানের রাস্তায় নারীদের খাটো স্কার্ট পরে এবং মাথা না ঢেকে চলাফেরা করতে দেখা যেত।

তার স্ত্রী ফারাহ, যিনি প্রায়শই পশ্চিমা পোশাক পরতেন, তাকে ইরানে আধুনিক নারীর একজন আদর্শ হিসাবে মনে করা হতো।

ইরানে ১৯৭৯ সালের মার্চ মাসে হিজাব বিরোধী যে প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হয়েছিল তা চলে বেশ কয়েকদিন ধরেT

ইরান ইসলামী প্রজাতন্ত্রে পরিণত হবার কয়েক মাসের মধ্যেই শাহ-এর শাসনামলে নারীদের অধিকার সুরক্ষিত করে যেসব আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল সেগুলো তুলে নেবাার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

"সেটা অবশ্যই রাতারাতি হয় নি, সেটা পর্যায়ক্রমে ঘটেছে," বলছেন মেহেরাঙ্গিজ কার, যিনি ৭৮ বছর বয়স্ক একজন মানবাধিকার আইনজীবী এবং আন্দোলনকারী। দেশটির প্রথম হিজাব-বিরোধী বিক্ষোভ আয়োজনে তিনি সহযোগিতা করেছিলেন।

"বিপ্লবের ঠিক পরে পরেই, রাস্তায় রাস্তায় পুরুষ ও নারীরা উপহারের মোড়কে মুড়ে নারীদের হিজাব বিলি করতেন।"

বিপ্লবের নেতা, আয়াতোল্লাহ রুহুল্লা খোমেইনি ১৯৭৯ সালের ৭ই মার্চ ডিক্রি বা নির্দেশনামা জারি করেন যে সব নারীকে তাদের কর্মক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে হিজাব পরতে হবে এবং নারীরা মাথা না ঢাকলে তার বিচারে সেইসব নারী ''নগ্ন'' বলে গণ্য হবেন।

"তার সেই ভাষণকে বহু বিপ্লবী নারীদের হিজাব পরতে বাধ্য করার নির্দেশ হিসাবে গ্রহণ করেছিল," বলছেন মিসেস কার, যিনি এখন থাকেন আমেরিকায় ওয়াশিংটন ডিসিতে। "অনেকেই মনে করেছিল এই নির্দেশ রাতারাতি কার্যকর করা হচ্ছে। তাই নারীরা বিরোধিতা শুরু করেছিল।"

এই নির্দেশে তাদের প্রতিক্রিয়া ছিল তাৎক্ষণিক। আয়াতোল্লাহ খোমেইনির ভাষণের পরদিনই বিক্ষোভ জানাতে তেহরানের রাস্তায় জড়ো হন এক লাখের ওপর মানুষ, যাদের বেশিরভাগই ছিল নারী। সেদিন ছিল আন্তর্জাতিক নারী দিবস।

'আমরা সৃজনশীল হয়ে উঠি'
আয়াতোল্লাহ খোমেইনি ডিক্রি জারি করার পরও, নারীর "সঠিক" পোশাক কী হওয়া উচিত সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কর্তৃপক্ষের বেশ কিছু সময় লেগেছিল।

"কোন স্পষ্ট নির্দেশ ছিল না এ ব্যাপারে। ফলে তারা বিভিন্ন অফিসের দেওয়ালে ঝোলানো মডেলদের ছবি দিয়ে পোস্টার আর ব্যানার তৈরি করে আনল। তারা বলল নারীদের হিজাব পরার ব্যাপারে নির্দেশগুলো মানতে হবে, না হলে তাদের ঢুকতে দেয়া হবে না," বলেন মিসেস কার।

মাশা আমিনির মৃত্যুর পর পোস্ট করা ছবিতে দেখা গেছে আগের প্রতিবাদের মতই এবারেও নারীরা তাদের হিজাব বা মাথার চাদর খুলে ফেলছে

এরপর ১৯৮১ সালে নারী ও কিশোরীদের ইসলামি রীতি অনুযায়ী আব্রু রক্ষা করার উপযোগী পোশাক পরা আইনত বাধ্যতামূলক করা হল। এর অর্থ হল নারীদের চাদর পরতে হবে অর্থাৎ তাদের পা অবধি পুরো শরীর ঢাকা ঢিলা পোশাক পরতে হবে এবং তার সাথে পারলে নিচে ছোট একটা স্কার্ফ পরতে হবে। অথবা পুরোদস্তুর হিজাব এবং তার সাথে লম্বা হাতা ওভারকোট দিয়ে শরীর ঢাকতে হবে।

"তবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে বাধ্যতামূলকভাবে হিজাব পরার বিরুদ্ধে লড়াই চলতেই থাকে। মাথা ঢাকার স্কার্ফ পরার ব্যাপারে অথবা চুল সঠিকভাবে পুরোপুরি না ঢাকার ব্যাপারে আমরা সৃজনশীল হয়ে উঠি," বলেন মিসেস কার।

''প্রত্যেকবার তারা যখন আমাদের বাধা দিত, আমরা সংগ্রাম করতাম।"

পার্লামেন্ট ১৯৮৩ সালে সিদ্ধান্ত নিল যেসব নারী প্রকাশ্যে মাথা ঢাকবে না, তাদের শাস্তি হিসাবে ৭৪ বার বেত্রাঘাত করা হবে। আরও সম্প্রতি এই সাজার সঙ্গে আরও যোগ হয়েছে ৬০ দিন পর্যন্ত কারাবাস।

তবে এরপরেও তখন থেকেই এই আইন পুরোপুরি কার্যকর করতে কর্তৃপক্ষকে বেগ পেতে হয়েছে। সব বয়সের নারীকেই প্রায়ই দেখা যাচ্ছে রাস্তাঘাটে বা প্রকাশ্যে সীমানা লংঘন করে আঁটোসাঁটো জামা বা উরু পর্যন্ত ঝুলের খাটো কোট পরতে। সেইসঙ্গে উজ্জ্বল রং-এর হেডস্কার্ফ এমনভাবে পেছনের দিকে ঠেলে পরতে - যাতে তাদের চুলের অনেকটা অংশ বেরিয়ে থাকে।

কঠোর হাতে মোকাবেলা
এই আইন কতটা কঠোরভাবে বলবৎ করা হবে এবং আইন লংঘনের জন্য সাজা কতটা কঠোর হবে - তা গত কয়েক বছরে নির্ভর করেছে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের ওপর।

প্রেসিডেন্ট পদের জন্য ২০০৪ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা তৎকালীন তেহরানের অতি রক্ষণশীল মেয়র মাহমুদ আহমেদিনিজাদ কিন্তু এ বিষয়ে তার প্রচারণায় অনেক প্রগতিশীল অবস্থান নেন। "প্রত্যেক মানুষের রুচি আলাদা, এবং সকলের সেবা করার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে," সেসময় টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন।

গাশ্ত-ই এরশাদ বাহিনীর অফিসারদের বিরুদ্ধে নারীদের মৌখিক ও শারীরিকভাবে হয়রানি হেনস্তা করার অভিযোগ রয়েছে

তবে পরের বছর নির্বাচনে তিনি জেতার মাত্র কিছুদিন পরই আনুষ্ঠানিকভাবে গঠন করা হয় গাশ্ত-ই এরশাদ বাহিনী। এর আগে পর্যন্ত নারীদের ইসলামি পোশাক পরার ওপর অনানুষ্ঠানিকভাবে নজরদারি করত দেশটির অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এবং আধাসামরিক ইউনিটগুলো।

নৈতিকতা রক্ষার দায়িত্বে থাকা এই বিশেষ পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণ প্রায়ই অভিযোগ করে যে তারা খুবই কঠোর আচরণ করে থাকে, নারীদের প্রায়ই আটক করে এবং তাদের মুক্তি দেয় একমাত্র যখন আটক নারী পরিবারের কোন সদস্য এসে নিশ্চয়তা দেয় যে ওই নারী ভবিষ্যতে পোশাকের নিয়মবিধি লংঘন করবে না।

"লিপস্টিক পরার কারণে আমাকে আর আমার মেয়েকে থামানো এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছিল," বিবিসিকে বলেন ইসফাহান শহরের এক নারী বাসিন্দা।

"ওরা আমাদের দুজনকে উঠিয়ে পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যায়। আমার স্বামীকে আসতে বলে, তাকে একটা কাগজে সই করতে বলে যে হিজাব না পরে আমাদের কখনও বাইরে তিনি বাইরে বেরতে দেবেন না।"

তেহেরানের আরেক নারী বিবিসিকে বলেন যে, একজন নারী পুলিশ অফিসার তাকে বলেন, তিনি যে বুট জুতো পরে বেরিয়েছেন তা পুরুষের জন্য "বেশি কাম উদ্রেককারী" হতে পারে এবং সে কারণে তাকে আটক করা হয়।

"আমি আমার স্বামীকে ফোন করে বলি আরেক জোড়া জুতো নিয়ে আসতে," জানান ওই নারী।

"এরপর আমাকে একটা কাগজে সই করে স্বীকার করতে হয় যে আমি যথাযথ পোশাক পরিনি। এখন আমার নামে ফৌজদারি অপরাধের রেকর্ড তৈরি হয়ে গেল।"

অন্যান্য আরও কিছু নারী এই নৈতিকতা রক্ষা বাহিনীর পুলিশের হাতে তাদের হয়রানির অভিজ্ঞতার কথা বিবিসিকে বলেছেন, যার মধ্যে রয়েছে মারধর এবং আরও অনেক নিষ্ঠুর ও অস্বাভাবিক ধরনের শাস্তির অভিজ্ঞতা।

একজন নারী বলেছেন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার থাকাকালীন তার গায়ে তেলাপোকা ছেড়ে দেবার হুমকি দেয়া হয়।

নতুন দমননীতি
গত বছর প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতা ইব্রাহিম রাইসি ১৫ই অগাস্ট একটি নির্দেশে স্বাক্ষর করেন যেখানে নতুন তালিকাভুক্ত বিধিনিষেধ বলবতের ঘোষণা দেয়া হয়।

এতে বলা হয় নারীরা কী ধরনের পোশাক পরে প্রকাশ্যে বেরুচ্ছে তা পর্যবেক্ষণের জন্য ক্যামেরা বসানো হবে।

আইন লংঘনকারী এসব নারীকে হয় জরিমানা করা হবে, নয়ত তাদের "কাউন্সেলিং"এর জন্য পরামর্শ দেয়া হবে। আর কোন ইরানি নারী অনলাইনে হিজাব পরা সম্পর্কে কোনরকম প্রশ্ন তুললে বা হিজাবের বিরুদ্ধে কোন কন্টেন্ট পোস্ট করলে তাকে বাধ্যতামূলকভাবে কারাদণ্ড দেয়া হবে।

পোশাকের ব্যাপারে নারীর স্বাধীনতা আরও খর্ব করে অগাস্ট মাসে একটি নির্দেশ জারি করেন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি

মি. রাইসির নতুন বিধিনিষেধের কারণে নারীদের গ্রেপ্তারের ঘটনা বেড়ে গেছে। কিন্তু পাশপাশি সামাজিক মাধ্যমে নারীদের হেডস্কার্ফ না পরা ছবি ও ভিডিও পোস্ট করার সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য রকম বেড়ে গেছে। আর মিজ আমিনির মৃত্যুর পর সেই সংখ্যা আরও তীব্র হয়েছে।

আমেরিকায় বসবাসরত ইরানি সাংবাদিক ও আন্দোলনকর্মী মাসিহ আলিনেজাদ বলছেন, মিজ আমিনির মৃত্যুর পর ইরান জুড়ে যে প্রতিবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে তা একটা গভীর ব্যক্তিগত আবেগের জায়গা তৈরি করেছে।

গত কয়েক বছর ধরে হিজাব আইনের বিরুদ্ধে তার বেশ কয়েকটি অনলাইন প্রচারণা ভাইরাল হয়েছে। এবং সরকারসহ অনেকেই বর্তমান অসন্তোষের পেছনে মূল চাবিকাঠি হিসাবে তাকেই দেখছে।

মাশা আমিনির মৃত্যুর পরের দিনগুলোতে নারীদের দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে পথে নেমে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে, কাউকে কাউকে দেখা গেছে তাদের হিজাবে আগুন ধরিয়ে দেবার দৃশ্য ভিডিও করতে, যেখানে তাদের হর্ষধ্বনি দিয়ে উৎসাহ দিয়েছে পুরুষ বিক্ষোভকারীরা।

"এই ঘটনা দেখে আমার মনে পড়ে গেছে সেই সময়ের কথা যখন বার্লিন দেওয়ালের পতন ঘটেছিল- সেই মুহূর্তের কথা মনে হচ্ছিল," বলছিলেন মিজ আলিনেজাদ।

"আমি খুবই আবেগাপ্লুত হয়ে যাচ্ছিলাম, পাশপাশি আশাবাদীও হচ্ছিলাম যে এই প্রথম এই নারীরা একা নয়। এই নারীদের পাশে পুরুষরাও এসে দাঁড়িয়েছে।"

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি