জ্বালানি সংকটের ভয়ে উদ্বিগ্ন ফরাসিরা
প্রকাশিত : ০৮:৪৭, ১১ অক্টোবর ২০২২
ফ্রান্সের হাজার হাজার মানুষ রাজধানী প্যারিসে বিক্ষোভ করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় এবং মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির প্রতিবাদে ডানপন্থী দলের নেতা ফ্লোরিয়ান ফিলিপ্পো, বিরোধী দল প্যাট্রিয়টস-এর নেতা এবং উগ্র ডানপন্থী দল ন্যাশনাল ফ্রন্টের যৌথ উদ্যোগে ওই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।
২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ফিলিপ্পো ছিলেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য। জাতীয় প্রতিরোধ সমাবেশ নামে অনুষ্ঠিত ওই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বিক্ষোভকারীরা ন্যাটো থেকে তাদের দেশকে প্রত্যাহার করে নেয়ার দাবি জানিয়েছে। ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে তাদের দেশের সম্পৃক্ততার ব্যাপারে অবস্থান পুরোপুরি পরিবর্তন করার জন্যও সরকারের প্রতি তারা আহ্বান জানায়।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরনের সরকারের অবস্থানের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত ওই প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে সেদেশের জনগণ সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় তাদের দেশকে যেন ন্যাটো থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। ‘আসো, ন্যাটো থেকে বেরিয়ে যাই’-এই শ্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিবাদকারীরা ম্যাকরনের পদত্যোগের দাবি জানায়। বিক্ষোভকারীরা ন্যাটোকে যুদ্ধবাজদের জোট বলে অভিহিত করে। এই জোটকে তারা জ্বালানি সংকট সৃষ্টির হোতা এবং অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরির জোট বলেও উল্লেখ করে। বিক্ষোভকারীদের হাতে বিচিত্র শ্লোগান লেখা ব্যানার ও পোস্টার-পেস্টুন-প্ল্যাকার্ড শোভা পায়। ওইসব ফেস্টুনে বড় বড় অক্ষরে লেখা ছিল ‘প্রতিরোধ’, ‘ফ্রেক্সিট’ ইথ্যাদি। প্ল্যাকার্ডে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার দাবি সংম্বলিত শ্লোগানও লেখা ছিল। এমন এক সময় ফরাসিরা তাদের সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষাভ করতে শুরু করলো যখন কিছুদিন আগে তাদের দেশের বিখ্যাত মনীষী অনি আরনো সাহিথ্যে নোবেল পেলেন। নোবেল বিজয়ী ওই সাহিত্যিকসহ বেশ কিছু ফরাসী চিন্তাবিদ জনগণের প্রতি সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে।
অন্তত ৬৯ জন চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবী ম্যাকরনের নীতির সমালোচনা করে একটি বিবৃতি দেয়। এদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর থেকে শুরু করে লেখক, কবি, সাহিত্যিক ও নির্মাতা রয়েছেন। তারা ওই বিবৃতিতে মুদ্রাস্ফীতিসহ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির জন্য মাকরনের নীতিকে দায়ি করেন।
উল্লেখ্য যে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপের জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে মস্কোর প্রতিক্রিয়ায় ভয়াবহ জ্বালানি সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় দেশগুলোর ওই জ্বালানি সংকট স্বাভাবিকভাবেই ফরাসিদের ওপরও প্রভাব ফেলেছে। অপরদিকে, জ্বালানি কোম্পানিগুলোর ধর্মঘটের কারণেও ফ্রান্সে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। গ্যাস স্টেশনগুলোতে কিলোমিটার দীর্ঘ সারিই তার প্রমাণ। ফ্রান্সের প্রায় এক পঞ্চমাংশ গ্যাস স্টেশন জ্বালানি ঘাটতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সুতরাং মনে করা হচ্ছে ফরাসীদের জন্য আসছে শীতে কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে। জ্বালানির তীব্র সংকটের কারণে জনজীবনে দুর্ভোগ যেমন বাড়বে তেমনি বিক্ষোভও আরও ব্যাপকতর হবে।
সূত্র: পার্সটুডে
এসএ/
আরও পড়ুন