ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

কাবুলের পার্কে নারী প্রবেশ নিষিদ্ধ করল তালেবান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০৩, ১১ নভেম্বর ২০২২

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের সব পার্কে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে তালেবান সরকার। দাবি করা হচ্ছে, পার্কগুলোতে ইসলামী আইন মানা হয় না। 

দেশটির পাপ-পুণ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ আকিফ বিবিসিকে বলেছেন, রাজধানীর পার্কগুলোতে যাতে নারীদের ঢুকতে না দেয়া হয় সে বিষয়ে পার্কের পরিচালক পক্ষকে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, গত ১৫ মাস আমরা চেষ্টা করেছি কিন্তু অনেক মানুষ পার্কে শরিয়াহ আইন মানছে না। তাই আমাদেরকে এই (পার্কে নারী নিষিদ্ধের) সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। 

তালেবান আইনে নারী-পুরুষকে আলাদা চোখে দেখা হয়। এর আগে সপ্তাহে তিন দিন নারীদের পার্কে ভ্রমণের অনুমতি ছিল। বাকি চার দিন পার্কগুলো পুরুষদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। কিন্তু এখন থেকে পার্কের দরজা নারীদের জন্য পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হলো। এমনকি পুরুষ স্বজন সঙ্গে থাকলেও নারীরা পার্কে ঢুকতে পারবে না।

যেসব পার্কে নারীরা তাদের শিশু সন্তান নিয়ে যান এবং বাম্পার গাড়ি বা ফেরিস হুইলের মতো রাইড রয়েছে, সেসব বিনোদন পার্কেও নারীরা এখন থেকে নিষিদ্ধ। আপাতত রাজধানীতে এই নিষেধাজ্ঞা বহাল বলে মনে হচ্ছে। তবে অতীতে পুরো আফগানিস্তানেই এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা ছিল।

পার্কের টিকিট কেটে ঢুকতে না পারা মাসুমা নামের এক নারী বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, কোনো মা যখন তাঁর সন্তানদের নিয়ে আসেন তখন অবশ্যই তাদের পার্কে ঢুকতে দেয়া উচিত। এই শিশুরা তো ভালো কিছুই দেখতে পায় না। তাদের খেলাধুলা ও বিনোদনের দরকার আছে। 

২০২১ সালের আগস্টে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান ক্ষমতা দখল করে। এরপর থেকে নারী অধিকার ও স্বাধীনতা সংকোচিত হতে শুরু করে। নারী স্বাধীনতার ওপর একের পর এক আরোপ হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। 

নারীরা বেশি দূরত্বে একা ভ্রমণের স্বাধীনতা হারিয়েছেন। এখনো অধিকাংশ কিশোরী স্কুলে ফিরতে পারেনি, যদিও তালেবান বলেছে মেয়েদেরকে স্কুলে যেতে দেয়া হবে। দেশটিতে কিছু নারী স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে কাজ করছে। তবে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর অধিকাংশ নারীই আর কর্মক্ষেত্রে যেতে পারেনি। 

জনসম্মুখে নারীদের মুখ ঢেকে রাখতে গত মে মাসে এক ডিক্রি জারি করা হয়। তবে শহর এলাকায় এখনো শতভাগ নারীর মুখ ঢাকতে সফল হয়নি তালেবান। 

১৯৯০ দশকে ক্ষমতায় থাকতে তালেবান যতটা কঠোর ছিল এবার ক্ষমতায় আসার পর ততটা হবে না বলে শপথ করেছিল। তাদের দাবি, শরিয়াহ আইন মোতাবেক তারা নারী অধিকারকে সম্মান করে। তারা নারীশিক্ষা ও নারীর চাকরিরও বিরুদ্ধে নয়। 

তবে পশ্চিমা কূটনীতিকরা তালেবানকে ইঙ্গিত করেছেন, গভীর অর্থনৈতিক সংকটে থাকা আফগানিস্তানের উন্নয়ন তহবিল গঠন নারী উন্নয়নের মতো বিষয়ের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করছে। 

এমএম/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি