বড় ব্যবসায়ীদের ভয় দেখায় চীন: প্রতিবেদন
প্রকাশিত : ২০:২৫, ৫ ডিসেম্বর ২০২২
চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও তাদের উদ্যোক্তাদের মধ্যে যাদেরকে দলের অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংগতিহীন বলে বিবেচনা করে, সেগুলোকে ভয় দেখানোর জন্য বাছবিচারহীনভাবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
সম্প্রতি ডিজিটাল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ফিন্যান্সিয়াল পোস্টের ‘চীনে টেননোক্র্যাট ও বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সিসিপির ভয় দেখানোর কৌশল’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পার্টি তথা রাষ্ট্র বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বহুদিনের সমালোচিত ক্র্যাকডাউন শুরু করেছে, যারা পার্টির দমনমূলক নীতিগুলোকে সমর্থন করতে অস্বীকার করেছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের ধনকুবের জ্যাক মা সিসিপির জবরদস্তিমূলক উপায়ে ভয় দেখানোর কৌশলের কথা উল্লেখ করেছেন। এটি সব সময় অন্যান্য ব্যবসার মালিকদের মধ্যে ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, আগেও এমন উদ্বেগ দেখা গেছে। জ্যাক মা একসময় চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যবসায়ী নেতা ছিলেন। দেশটির প্রযুক্তি খাত এবং এর সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে চীন সরকারের ক্র্যাকডাউনের মধ্যে তিনি প্রতিবেশী জাপানে স্থানান্তরিত হয়েছিলেন।
জ্যাক মা ২০২০ সালে দেশটির রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর ‘বন্ধকী দোকানের মানসিকতা’ রয়েছে উল্লেখ করে চীনের নিয়ন্ত্রকদের নিন্দা জানান। এর পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। সে সময় তিনি সাহসী নতুন উদ্যোক্তাদের প্রবর্তনের আহ্বান জানিয়েছিলেন, যা দরিদ্রদের কাছে চীনের কৃতিত্ব প্রসারিত করতে পারে। এ ঘটনার পর জ্যাকের অ্যান্ট গ্রুপ ও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলিবাবা একাধিক নিয়ন্ত্রণমূলক বাধার মুখে পড়েছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের বাধানিষেধের কারণে অ্যান্টের ৩৭ বিলিয়ন ডলারের প্রাথমিক পাবলিক অফার বাতিল করতে হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটিকে। এ ছাড়া আলিবাবাকে গত বছর বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার জরিমানা করা হয়।
ইউনাইটেড স্টেটস-চায়না ইকোনমিক অ্যান্ড সিকিউরিটি রিভিউ কমিশনের (ইউএসসিসি) তথ্যমতে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অধীনে চীনের আর্থিক নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ বেপরোয়াভাবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছে, যেগুলোকে তারা সিসিপির অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন বলে মনে করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের স্বাধীন এজেন্সি জানায়, চীন সরকার ২০২০ এবং ২০২১ সালে বেশি ঋণ নেওয়া প্রপার্টি ডিভেলপমারদের ব্যাংক ঋণ আটকে দিয়ে অর্থনৈতিক মন্দাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সিসিপির অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশেষ করে বেসরকারি খাতের নীতিও দলের মানসিকতা দ্বারা পরিচালিত হয়েছে।
ইউএসসিসির তথ্যমতে, চীনের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে লেলিনবাদী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের আরও আত্ত্বীকরণ সর্বময় নিয়ন্ত্রণ বাড়াচ্ছে এবং কোম্পানিগুলোকে বাজারের উদ্দেশ্যসাধনের পরিবর্তে রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণ করতে চালিত করছে। এই পদ্ধতিটি বাজারকে সিসিপির পূর্বনির্ধারিত সংস্থান বরাদ্দের একটি হাতিয়ার হিসাবে বিবেচনা করে এবং নীতির লক্ষ্যগুলো পূরণের বাইরে যে কোনও বাজারের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে। সূত্র : এএনআই।
এসি
আরও পড়ুন