ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

এনজিওতে নারী কর্মী নিষিদ্ধ করেছে তালেবান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫৪, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২

হিজাব না পরার কারণ দেখিয়ে দেশী-বিদেশি এনজিওতে নারীদের কাজ করা নিষিদ্ধ করেছে তালেবান। এই নির্দেশ লঙ্ঘন করা হলে তাদের লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দেয়া হয়েছে।

তালেবান তাদের নির্দেশের পক্ষে ব্যাখ্যা দিয়ে বলছে, এনজিও কর্মীরা হিজাব না পরে ইসলামী শরিয়ার পোশাকের আইন ভঙ্গ করছে।

শনিবার জারি করা তালেবানের এই নির্দেশকে মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন জানিয়ে নিন্দা করেছে জাতিসংঘ।

তাদের এই নির্দেশ এমন সময়ে দেয়া হয়েছে, যার কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়।

আফগানিস্তানের যে নারী এনজিও কর্মীরা তাদের পরিবারের আয়-রোজগারের প্রধান ব্যক্তি হিসাবে কাজ করেন, তালেবানের এই সিদ্ধান্তে তাদের ভয় এবং আশঙ্কার কথা তুলে ধরেছেন বিবিসির কাছে।

একজন বলেছেন, “আমি যদি কাজ করতে যেতে না পারি, আমার পরিবারে খরচ কে দেবে?’’

আরেকজন এই নির্দেশকে ‘হতাশাজনক’ জানিয়ে বলছেন, তিনি তালেবানের পোশাকের আইন মেনেই কাজ করতেন।

আরেকজন নারী তালেবানের ইসলামিক নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলছেন, এর ফলে এখন থেকে তার ঘরের খরচ আর ছেলেমেয়ের খাবার জোগাতে হিমশিম খেতে হবে।

তালেবানের ওই নির্দেশ দেশি-বিদেশি সব এনজিওর জন্য প্রযোজ্য হবে বলে জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এর ফলে লাখ লাখ মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা কার্যক্রম ব্যাহত হবে।

তিনি বলেন, “সারা বিশ্ব জুড়েই মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে নারীরা প্রধান ভূমিকায় কাজ করেন। এই সিদ্ধান্ত আফগান জনগণের জন্য বিপর্যয়কর হবে।’’

তালেবানের এই নির্দেশকে “মানবাধিকারের মৌলিক নীতিগুলোর গুরুতর লঙ্ঘন’’ বলে বর্ণনা করেছেন জাতিসংঘের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

আফগানিস্তান জুড়ে বড় মাত্রায় ত্রাণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো। তালেবানের এই নির্দেশের পর তারা কীভাবে কাজ করবে, তা নিয়ে রবিবার একটি বৈঠকে বসার কথা রয়েছে সংস্থাগুলোর।

সেভ দ্যা চিলড্রেনের একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, তারা এ নিয়ে তালেবান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবে। কিন্তু নারীদের যদি কাজ করতে দেয়া না হয়, তাহলে হয়তো তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে ফেলতে হবে।

বেসরকারি সংস্থাগুলোর কাজে নারী ও শিশুদের কাছে সেবা পৌঁছানোর জন্য নারী কর্মী থাকা অত্যাবশ্যক বলেছেন, কেয়ার ইন্টারন্যাশনালের একজন কর্মকর্তা মেলিসা কর্নে।

এ সপ্তাহেই আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান সেদেশের নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া নিষিদ্ধ করে এবং প্রাইভেট টিউশন কেন্দ্রগুলোর প্রতি আদেশ দেয়, যেন তারা কোন ছাত্রীকে শিক্ষাদান না করে। সেই নির্দেশও ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

তবে মিশরের আল আজহার মসজিদের গ্র্যান্ড ইমাম বলছেন, আফগানিস্তানে মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত তালিবান নিয়েছে - তা ইসলামী শরিয়া আইনের সাথে সাংঘর্ষিক। 

গত বছর আফগানিস্তানের ক্ষমতা পুনর্দখল করার সময় যদিও তালেবান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, নব্বইয়ের দশকের তুলনায় এবার তাদের শাসন অনেক নমনীয় হবে, তারপরেও তারা একের পর এক নারী অধিকার খর্ব করে চলেছে।-বিবিসি বাংলা
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি