ঢাকা, শনিবার   ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

কিয়েভে বাইডেনের আকস্মিক গোপন সফর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৩০, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া যুদ্ধ শুরু করার প্রথম বার্ষিকীর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আকস্মিকভাবে কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে কিয়েভ সফর করেছেন।

তিনি এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিহত ইউক্রেনিয় সৈন্যদের স্মরণে তৈরি এক স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শন করেন।

এরপর টেলিভিশনে দুই নেতা যৌথভাবে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, “গত বছর ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরুর সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন মনে করেছিলেন ইউক্রেন খুবই দুর্বল এবং পশ্চিমা দেশগুলো বিভক্ত। কিন্তু মি. পুতিন যদি মনে মনে করেন তিনি ইউক্রেন এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের বিরুদ্ধে বিজয়ী হবেন, তাহলে তিনি বিরাট ভুল করেছেন।”

প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “ইউক্রেনিয়ানদের জন্য এরকম সমর্থন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এটিকে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সম্পর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সফর বলে বর্ণনা করেন।”

প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইউক্রেনের জন্য আরও ৫০ কোটি ডলারের সামরিক সাহায্য ঘোষণা করেন এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করার কথা বলেন।

এই সংবাদ সম্মেলনের আগে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেন এক বৈঠকে বসেন।

প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই সফর নিয়ে কঠোর গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়েছিল।

নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন পোল্যান্ড থেকে ট্রেনে সীমান্ত পেরিয়ে ইউক্রেন সফরে যান।

নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই সফর বেশ গোপন রাখা হয়।

বিভিন্ন খবরে জানা যাচ্ছে, শনিবার রাতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং তাঁর স্ত্রী জিল এক রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন। এরপর কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই প্রেসিডেন্ট বাইডেন ওয়াশিংটন ত্যাগ করেন।

পূর্ব ইউরোপ সফরের সময় প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইউক্রেনও সফর করতে পারেন, এমন কথা এর আগে মার্কিন কর্মকর্তারা অস্বীকার করেছিলেন।

নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, “হোয়াইট হাউজ রবিবার রাতে প্রেসিডেন্টের যে কর্মসূচী প্রকাশ করে, তাতে দেখা যায় সোমবার প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটনে থাকবেন, এরপর তিনি সন্ধ্যায় ওয়ারশ’র উদ্দেশে রওনা দেবেন। আসলে তিনি ততক্ষণে সেখানে চলে গেছেন।”

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে যে বাড়তি ৫০ কোটি ডলারের সহায়তা দেয়ার কথা ঘোষণা করেছেন, তার বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছে।

এর আওতায় ইউক্রেনকে আরও কিছু হিমার্স রকেট লঞ্চার দেয়া হবে। এগুলো দ্রুত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায় এমন ধরনের রকেট লঞ্চার। এগুলো দিয়ে একেবারে নির্ভুল নিশানায় আঘাত হানতে পারে এমন ধরনের জিএমএলআরএস বোমা ছোঁড়া যায়। এই লঞ্চার দিয়ে ৫০ মাইল দূরের লক্ষ্যবস্তুর একেবারে কয়েক মিটারের মধ্যে রকেট হামলা চালানো সম্ভব।

ইউনিভার্সিটি অব বাথের একজন প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এবং নেটোর সাবেক বিশ্লেষক ড. প্যাট্রিক বারি বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই সফর দেখে মনে হচ্ছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে তারা দীর্ঘমেয়াদে সমর্থন দিয়ে যেতে প্রস্তুত।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন এরই মধ্যে ইউক্রেন সফর শেষে পোল্যান্ডে ফিরে গেছেন তার তিন দিনের আনুষ্ঠানিক সফর শুরু করতে।

এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সোমবার ব্রাসেলসে বৈঠকে বসছেন কীভাবে ইউক্রেনের বাহিনীকে আরও সামরিক সহায়তা দেয়া যায় সেটি নিয়ে আলোচনার জন্য।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি