ঢাকা, বুধবার   ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

সুদানে লড়াই অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা দুশো`র কাছাকাছি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৩০, ১৮ এপ্রিল ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

সুদানে সামরিক বাহিনীর দুটি গ্রুপের মধ্যে চার দিন ধরে চলা লড়াইয়ে নিহতের সংখ্যা এখন ১৮৫তে উঠেছে। রাজধানী খার্তুমে মঙ্গলবারও থেমে থেমে গোলাগুলি-বিস্ফোরণের এবং যুদ্ধবিমান ওড়ার শব্দ পাওয়া গেছে।

হাসপাতালগুলোর ডাক্তাররা বলছেন, নিহতের সংখ্যা এখন দুশো’র কাছাকাছি, তবে আসল সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, খার্তুমে নীল নদের অপর পারের শহর ওমডারমানের বাসিন্দারা বিমান হামলা ও বিমানবিধ্বংসী কামানের গুলির খবর দিয়েছেন।

এই লড়াইয়ের ফলে কয়েক দশক ধরে একনায়কতন্ত্র ও সামরিক শাসনের অধীনে থাকা দেশটিতে বেসামরিক শাসন প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা বানচাল হবার উপক্রম হয়েছে।

খার্তুমে লড়াইয়ের মধ্যে একটি মার্কিন কূটনৈতিক গাড়িবহর আক্রান্ত হবার পর দেশটির বিবদমান দুই সামরিক কম্যান্ডারকে যুদ্ধ বন্ধ করতে বলেছে যুক্তরাষ্ট্র।

দুই জেনারেলের সাথে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো – এ দুজনের সাথেই কথা বলেছেন।

জাতিসংঘের বিশেষ দূত ভলকান পার্থেজ বলছেন, লড়াই থামানোর চেষ্টায় তিনি দুই জেনারেলের সাথে প্রতিদিন যোগাযোগ রাখছেন।

তিনি বলেন, দুই সেনা-অধিনায়ক জাতিসংঘের সাথে কথা বলছেন তবে একে অপরের সাথে নয়।

রেডক্রস বলছে, খার্তুমে এখন যেভাবে যুদ্ধ চলছে তাতে মানুষের কাছে মানবিক ত্রাণ পৌছে দেয়া প্রায় অসম্ভব।

সংস্থাটি বলছে, তারা কুঠুরিতে লুকিয়ে থাাকা লোকদের কাছ থেকে ফোন পাচ্ছেন – যাদের অনেকে আহত। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে এবং সৈন্যরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো দখল করে রয়েছে।

জাতিসংঘ বলছে, তারা এখনো দেশটিতে থাকতে চায়, তবে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা – তাদের তিনজন কর্মচারী নিহত হবার পর – তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।

সুদানে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে জেনারেলদের একটি কাউন্সিল দেশটি পরিচালনা করছে।

দেশটিতে বেসামরিক সরকার পুন-প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন গ্রুপ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে যে আলাপ-আলোচনা চলছিল, তাতে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তৈরি হয় ক্ষমতার দ্বন্দ্ব।

মূলত কাউন্সিলের শীর্ষ দুই সামরিক নেতাকে ঘিরেই এই বিরোধ। এরা হলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং দেশটির উপ-নেতা ও আরএসএফ কমান্ডার জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো।

কিন্তু এক পর্যায়ে আগামীতে দেশটি কিভাবে পরিচালিত হবে এবং দেশটির বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাবনা নিয়ে এই দুই নেতার মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এছাড়াও এই দুই জেনারেলের মধ্যে যে বিষয়টি বিরোধের একেবারে কেন্দ্রে রয়েছে - তা হলো, এক লাখ সদস্যের র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে সেনাবাহিনীতে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং তার পরে নতুন এই বাহিনীর নেতৃত্বে কে থাকবে সে বিষয়টি।

বিবিসির এমানুয়েল ইগুঞ্জা জানাচ্ছেন, দেশটিতে প্রস্তাবিত বেসামরিক সরকারে কে একীভূত সামরিক বাহিনীর প্রতিনিধিত্ব করবেন - তা নিয়ে বিবাদ তৈরি হয়।

এই আলোচনায় মূল প্রশ্ন ছিল: নতুন বাহিনীতে কে কার অধীনে কাজ করবেন?

এ নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা সামাল দিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে আরএসএফ বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

এই সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি সুদানি সেনাবাহিনী। তারা এটিকে তাদের জন্য হুমকি হিসেবে মনে করে।

উত্তেজনা নিরসনে কিছু আলাপ আলোচনাও শুরু হয়েছিল। কিন্তু কোনো সমাধান আসেনি।

তার জের ধরেই শনিবার সকাল থেকে লড়াই শুরু হয়। তবে কোন পক্ষ প্রথম আক্রমণ করেছে তা স্পষ্ট নয়।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি