এসসিও বৈঠক: নির্দিষ্ট কোনো সদস্যের দিকে মনোযোগ যথোচিত হবে না
প্রকাশিত : ১৫:৪৪, ২৩ এপ্রিল ২০২৩
আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ভারতের গোয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক। এতে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তানও। তবে পাকিস্তানের দিকে ঈঙ্গিত করে গত বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই বৈঠকে নির্দিষ্ট কোনো সদস্যের দিকে মনোযোগ দেওয়া যথোচিত হবে না।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, এসসিওর সভাপতি হিসেবে নয়াদিল্লি এই ইভেন্টের জন্য সব সদস্য রাষ্ট্রকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। মে মাসের ৪ ও ৫ তারিখ গোয়ায় এসসিও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তা ছাড়া বর্তমান সভাপতি হিসেবে ভারত এ বছর রাষ্ট্র প্রধানদের কাউন্সিলের পরবর্তী শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করবে।
অরিন্দম বাগচি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ভারত এসসিওর সব সদস্য রাষ্ট্রকেই একইভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে এবং একটি সফল বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিশেষত, ৪ ও ৫ মে গোয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এসসিওর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের জন্য, আমরা সমস্ত সদস্য রাষ্ট্রকে অনুরূপ আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। আমরা একটি সফল বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছি। কোনও একটি নির্দিষ্ট দেশের অংশগ্রহণের দিকে তাকানো সত্যিই যথোচিত হবে না।’
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের অনুরোধের ব্যাপারে বাগচি বলেন, এটি ছিল অসময়ে। তিনি আরও জোর দেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এ ধরনের বহুপক্ষীয় বৈঠকের ফাঁকে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করার চেষ্টা করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের অনুরোধের বিষয়ে আমি মনে করি, এটা অসময়। আসুন পূর্ণ অংশগ্রহণ দেখি। সাধারণত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ধরনের বহুপক্ষীয় বৈঠকের ফাঁকে যতটা সম্ভব দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করার চেষ্টা করে। জি২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে আপনারা সেটি দেখেছেন।’
এদিকে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি মে মাসে গোয়ায় সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সদস্য রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ কথা জানিয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালোচ জানিয়েছেন, এসসিও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের (সিএফএম) বৈঠকে ভুট্টো জারদারি পাকিস্তানি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন।
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে জম্মু ও কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর নিয়ে সন্দেহ জাগিয়েছে। বিশেষ করে ইসলামাবাদের বৈঠকে যোগ দেওয়ার ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর এ হামলার ঘটনার কারণে সন্দেহ গাঢ় হয়েছে।
বলা হচ্ছে, এই হামলার পর নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়ার ওপর বিলাওয়াল ভুট্টোর ভারত সফর অনেকটা নির্ভর করছে। দিল্লি যদি কঠোর অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে এটি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারতে আগমনের বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। হিনা রব্বানি খার ছিলেন পাকিস্তানের শেষ কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী যিনি ২০১১ সালের জুলাই মাসে ভারতে এসেছিলেন। এ ছাড়া ২০১৪ সালের পর এই প্রথম উচ্চপদস্থ কোনো পাকিস্তানি নেতা ভারতে পা রাখতে চলেছেন। ওই বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথগ্রহণের সময় ভারতে এসেছিলেন পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং এবং রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভও বৈঠকে অংশ নিতে পারেন। এই সংস্থার সদস্য হিসেবে রয়েছে রাশিয়া, ভারত, চীন, পাকিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার চারটি দেশ-কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তান। ইরান হল সর্বশেষতম দেশ; ভারতের সভাপতিত্বের অধীনে প্রথমবারের মতো পূর্ণ সদস্য হিসেবে ইরান এই বৈঠকে যোগ দেবে।
সূত্র: এএনআই
আরও পড়ুন