ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

পাঁচ মাসে রাশিয়ার ২০ হাজার সেনা নিহত, দাবি যুক্তরাষ্ট্রের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪৮, ২ মে ২০২৩

যুক্তরাষ্ট্র বলছে যে ইউক্রেন যুদ্ধে গত ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি রাশিয়ার সেনা নিহত হয়েছে।

নতুন গোপন গোয়েন্দা তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, আরো অন্তত ৮০ হাজার সেনা আহত হয়েছে।

নিহতদের মধ্যে অর্ধেকেই ওয়াগনার নামে একটি ভাড়াটে প্রতিষ্ঠানের যারা পূর্বাঞ্চলীয় বাখমুট শহরে আক্রমণ চালিয়ে আসছে।

শ্বাসরুদ্ধকর যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে রাশিয়া গত বছর থেকে এই ছোট শহরটি বার বার দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছে।

মস্কো বর্তমানে বাখমুটের বেশিরভাগ অংশ দখল করে আছে। কিন্তু ইউক্রেনীয় সেনারা এখনো শহটির পশ্চিমাঞ্চলে ছোট একটি অংশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দুই পক্ষের জন্যই এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ একটি প্রতীকীভাবে ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন যে, তারা এই যুদ্ধকে ব্যবহার করে যত বেশি সম্ভব রুশ সেনা হত্যা এবং তাদের মজুদ কমিয়ে আনার চেষ্টা করছেন।

মি. কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, “বিশেষ করে বাখমুটের মাধ্যমে দনবাস অঞ্চলে রুশ আক্রমণের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।"

"রাশিয়া কোনো বাস্তবিক কৌশলগত এবং উল্লেখযোগ্য অঞ্চল দখল করতে পারেনি।”

"আমরা অনুমান করি যে, রাশিয়ার এক লাখের বেশি সেনা হতাহতের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার জনেরও বেশি যুদ্ধে নিহত হয়েছে," তিনি আরো বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের হিসাব অনুযায়ী, এই সংখ্যার কারণে বাখমুটে ডিসেম্বরের শুরু থেকে এমন ক্ষয়ক্ষতি শুরু হয়।

মি. কিরবি বলেন, "মূল কথা হল যে রাশিয়ার আক্রমণাত্মক প্রচেষ্টা কয়েক মাস লড়াই এবং অসাধারণ ক্ষয়ক্ষতির পর পাল্টা আঘাত করেছে।"

তিনি আরো বলেন যে, তিনি এখানে ইউক্রেনের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব দিচ্ছেন না কারণ "তারা এখানে ক্ষতিগ্রস্ত। আর রাশিয়া আক্রমণকারী।"

বিবিসি স্বাধীনভাবে এই পরিসংখ্যান যাচাই করতে পারেনি এবং এ নিয়ে মস্কো কোন মন্তব্য করেনি।

বাখমুট শহরটি দখল করতে পারলে তা রাশিয়াকে পুরো দোনেৎস্ক অঞ্চল নিয়ন্ত্রণের যে লক্ষ্য সেটির বেশ কাছাকাছি নিয়ে আসবে। দোনেৎস্ক হচ্ছে পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলের মধ্যে একটি, যেটি গত সেপ্টেম্বরে এক গণভোটের পর রাশিয়ার অধিভুক্ত করা হয়েছিল। তবে একে ভূয়া উল্লেখ করে রাশিয়ার ব্যাপক নিন্দা জানানো হয়েছিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাখমুটের কৌশলগত মূল্য খুব কম, কিন্তু রুশ কমান্ডারদের জন্য এটি একটি কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে যারা ক্রেমলিনের কাছে কোনো ইতিবাচক খবর পৌঁছে দিতে পারেনি।

ওয়াগনার নামে ভাড়াটে গোষ্ঠী- যারা ব্যাপকভাবে অপরাধীদের ব্যবহার করে এবং তাদের অমানবিক পদ্ধতির জন্য কুখ্যাত হয়ে উঠেছে- তারাই বাখমুতের উপর রুশ হামলার কেন্দ্রে রয়েছে।

এই গোষ্ঠীটির নেতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন শহরটি দখল করার জন্য তার নিজের সুনাম এবং তার ব্যক্তিগত বাহিনী-দুটোকেই ঝুঁকিতে ফেলেছেন।

কিন্তু তিনি সম্প্রতি বাখমুট থেকে তার সেনা সরিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।

রাশিয়ার একজন বিশিষ্ট যুদ্ধ ব্লগারের কাছে একটি বিরল বিস্তারিত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের অতিপ্রয়োজনীয় গোলাবারুদ সরবরাহ না করলে ওয়াগনার যোদ্ধাদের সরিয়ে নেবেন তিনি।

তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, ওয়াগনার যোদ্ধাদের মালিতে পুর্নমোতায়েন করা যেতে পারে।

যুদ্ধের সময় তিনি প্রায়ই রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন এবং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তার যোদ্ধাদের যথেষ্ট সহায়তা না দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন।

ইউক্রেনের বসন্তের সময় প্রত্যাশিত পাল্টা আক্রমণের আগে আগে মি. প্রিগোজিন রাশিয়ার মিডিয়া এবং সামরিক নেতৃত্বকে, "রাশিয়ান জনগণের সাথে মিথ্যা বলা বন্ধ করার" আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, "আমাদের রাশিয়ার জনগণের কাছে, সবকিছু ঠিক-ঠাক চলছে- এমন মিথ্যা বলা বন্ধ করতে হবে।"

তিনি ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর "ভাল, সঠিক সামরিক অভিযান" এবং নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

ইউক্রেনের একজন শীর্ষ জেনারেল সোমবার বলেছেন যে, পাল্টা আক্রমণের কারণে বাখমুটের কিছু অবস্থান থেকে রুশ সেনারা সরে গেছে, তবে পরিস্থিতি এখনো "কঠিন" অবস্থায় রয়েছে।

টেলিগ্রামে ইউক্রেনের স্থল বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল ওলেক্সান্ডার সিরস্কি বলেছেন, প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্যারাট্রুপার এবং যোদ্ধাদের নিয়মিতভাবে যুদ্ধে পাঠানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, "কিন্তু শত্রুরা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে অক্ষম।"

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি