শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা হংকং ছেড়ে যাওয়ায় সংকটে স্কুলগুলো
প্রকাশিত : ১৬:৫৮, ১২ মে ২০২৩
কয়েক সপ্তাহ আগে আট বছর বয়সী পিটার তার স্কুলের বন্ধুদের বিদায় জানিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে বিট্রেনে পাড়ি দিয়েছে। একইভাবে গত কয়েক বছর ধরে হংকং এর শিশুরা তার অনেক বন্ধুদের শহর ছেড়ে যেতে দেখেছে।
একদিকে দশককাল ধরে জন্মহার কমেছে, এরপর আবার সাম্প্রতিককালে বাসিন্দারা হংকং ছেড়ে যাওয়ার ফলে সেখানে উদ্বেগজনকহারে শিক্ষার্থীর পাশাপাশি শিক্ষকও কমেছে। আর এতে হংকং এর শিক্ষাব্যবস্থাও চরম সংকটে পড়েছে।
সরকারি হিসাবে, গত দুই বছরে কিন্ডারগার্টেন থেকে মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ের ৬৪ হাজার শিক্ষার্থী স্কুল ছেড়েছে। গত ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ৩৩ হাজার ৬০০ এরও বেশি শিক্ষার্থী বা শিক্ষার্থীদের মোট সংখ্যার ৪ শতাংশ স্কুল ছেড়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি।
স্থানীয় মিডিয়া সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, প্রথম গ্রেডে ন্যূনতম ১৬ জনকে ভর্তি দেখাতে ব্যর্থ হয়ে আসছে বছরগেুলোতে কমপক্ষে পাঁচটি স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে। মা-বাবা ও শিক্ষকদের ভাষ্য, তিন বছর আগে হংকংয়ের জাতীয় নিরাপত্তা আইন আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে শিশুদের ‘দেশপ্রেম শিক্ষা’র ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি একাডেমিক চাপ তৈরি করা হয়েছে, যা তাদের পছন্দের শহরটি ছেড়ে যেতে প্ররোচিত করছে।
মাসব্যাপী সরকার বিরোধী বিক্ষোভ দমন করার জন্য ২০২০ সালে কার্যকর করা জাতীয় নিরাপত্তা আইনে বিচ্ছিন্নতাবাদীতা, বিদ্রোহ, সন্ত্রাসবাদ ও বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে যোগসাজশসহ বিভিন্ন অপরাধের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মতো কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে হংকং-এ। সরকারবিরোধী বিক্ষোভে তরুণদের ব্যাপক অংশগ্রহণের জন্য স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়কে দোষারোপ করছে কর্তৃপক্ষ। তাদের ভাষ্য, স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা শেখাতে পারছে না।
শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত পেশাজীবীরা বলছেন, বিদ্বেষ ছড়ানোর প্রজনন ক্ষেত্র হিসাবে দেখা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন সরকারের গুরুতর পর্যবেক্ষণের মধ্যে রয়েছে। এসব পেশাজীবীরা জাতীয় নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের ভয়ে নিজেদের নাম প্রকাশ করতে চাননি।
গত তিন বছরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম এবং ‘জাতীয় নিরাপত্তা সচেতনতা’ বৃদ্ধির জন্য বেশকিছু ব্যবস্থা চালু করেছে সরকার। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীতা’, ‘বিদ্রোহ’, ‘সন্ত্রাসী কার্যকলাপ’, ও ‘বিদেশি দেশের সঙ্গে যোগসাজশের’ এর ধারণাগুলোর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সূত্র-দি গার্ডিয়ান
কেআই//
আরও পড়ুন