ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

চীন যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের সুযোগ প্রস্তাব করছে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:০০, ৯ জুলাই ২০২৩

ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে বেসামরিক মিলিশিয়া বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের ব্যর্থ বিদ্রোহ কেবল রুশ প্রেসিডেন্টকে দুর্বলই করেনি। এটি তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের জন্যও একটি ধাক্কা। একই সময়ে দুর্বল অর্থনীতি নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে চীন এবং একটি শক্তিশালী মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের মুখোমুখি হচ্ছে। ফলে চীন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর শক্তি হয়ে উঠবে বলে মনে হচ্ছে না।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সে হুগো ডিক্সন লিখেছেন, ক্ষমতাধর শক্তি হয়ে উঠার সম্ভাবনা না থাকলেও চীন একটি হুমকি হিসেবেই রয়ে গেছে, বিশেষ করে তাইওয়ানের জন্য। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা তাদের সতর্ক অবস্থান থেকে সরে আসতে পারে না। তবে এখনকার পরিস্থিতি শান্তি ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে চীনের সঙ্গে তাদের কাজ করার সুযোগ খুলে দিতে পারে।

গত দুই বছরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মেজাজ অনেকটাই বদলে গেছে। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র বিশৃঙ্খলভাবে আফগানিস্তান থেকে সেনা সরিয়ে নেয়। দেশটির সঙ্গে সমৃদ্ধ গণতন্ত্রের জোট বিশৃঙ্খলার মধ্যে ছিল। অন্যদিকে  কোভিড মহামারীর পরিস্থিতি থেকে চীনের অর্থনীতি ক্রমবর্ধমান ছিল, কিন্তু সেখানে গ্রুপ অব সেভেন (জি-৭) এর ধনী অর্থনীতি সঙ্কুচিত হচ্ছিল।

চীন যখন বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যায়, সেই সময়েও চীনের জন্য এই স্বীকৃতি কেবল সময়ের ব্যাপার বলে মনে হয়েছিল। অনেক দেশ চীনের এই স্বীকৃতির সঙ্গে তাদের পাশে দাঁড়াতে আগ্রহী ছিল, যা চীনের শক্তিকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
হুগো ডিক্সন মনে করেন, এরপরও চীন একের পর এক ধাক্কা খেয়েছে। পুতিনের ইউক্রেন আক্রমণের ঠিক আগে শি জিনপিং রাশিয়ার সঙ্গে ‘সীমাহীন’ অংশীদারিত্বের প্রতিশ্রুতি দেন। ইউক্রেইন যুদ্ধে মস্কো দ্রুত বিজয় অর্জন করলে এটি একটি বুদ্ধিদীপ্ত ষড়যন্ত্র হতে পারে। চীন-রাশিয়া জোট এই ধারণাকে শক্তিশালী করবে যে, বিশ্বের উন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলো চীন-রাশিয়ার শক্তির সংমিশ্রণকে থামাতে খুব কমই সক্ষমতা অর্জন করতে পারে।

কিন্তু রাশিয়ার একটি জঘন্য যুদ্ধে রয়েছে। এখন ইয়েভগিনি প্রিগোজিনের নেতৃত্বে ভাড়াটে যোদ্ধাদের ব্যর্থ বিদ্রোহ পুতিনকে দুর্বল দেখায় এবং ইউক্রেনকে লড়াইয়ে এটি সাহায্য করতে পারে। রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থন বিশেষ করে তেল ও গ্যাসের চাহিদা মেটানোর বিষয়টি ক্রেমলিনের ওপর কে দখল রাখছে তার উপর খুব বেশি নির্ভর করে না। কিন্তু পুতিনের প্রতি চীনের সমর্থন রুশ প্রেসিডেন্টের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির জন্য একটি বড় মূল্য হয়ে এসেছে।

রাশিয়ার আগ্রাসন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের প্রশান্ত মহাসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরে সমন্বয় সাধনে এবং প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে সাহায্য করে। ভারতও আমেরিকার কাছাকাছি চলে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মাসে মিলিত হযেছেন। তারা প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা বিষয়ে গভীর সহযোগিতার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।

জি-৭ ভূক্ত দেশগুলো পশ্চিমা ভূ-রাজনৈতিক কৌশল গঠনের জন্য মূল জোট হয়ে উঠছে। ইতোমধ্যে তারা যৌথভাবে চীনা অর্থনীতির সঙ্গে টেক্কা দিতে উন্নত সেমিকন্ডাক্টরের মতো প্রযুক্তির উপর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ করছে। যুক্তরাষ্ট্র এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জন্য ব্যবহৃত চিপের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরো কঠোর করার কথা ভাবছে।

(সূত্র-রয়টার্স) 
কেআই//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি