জিএসপি প্লাস সুবিধা হারাতে পারে পাকিস্তান
প্রকাশিত : ২৩:১৪, ১৫ আগস্ট ২০২৩
সুশাসন, মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার সম্পর্কিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা জিএসপি প্লাস হারাতে পারে পাকিস্তান। গত শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইনসাইডওভার।
বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলেকে জিএসপি প্লাস সুবিধা দিয়ে থাকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। টেকসই উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিতের জন্য বিশেষ প্রণোদনা হিসেবেই এই সুবিধা পেয়ে থাকে দেশগুলো। তবে শর্ত তাকে মানবাধিকার, শ্রম অধিকার, পরিবেশ ও সুশাসন নিয়ে ২৭টি আন্তর্জাতিক কনভেনশন বাস্তবায়নের। বিনিময়ে দেশগুলো ইউরোপের বাজারে তাদের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি পণ্য বিনা শুল্কে রপ্তানি করতে পারে।
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পাকিস্তানও এই সুবিধা পেয়ে থাকে। ২০২০ সালে জিএসপি প্লাসের আওতায় ইউরোপের বাজারে মোট রপ্তানির ২৮ শতাংশ বিনা শুল্কে রপ্তানি করেছে পাকিস্তান। এর মধ্যে ৭৮ শতাংশ পণ্যই গেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নে। যদিও শর্ত অনুযায়ী টেকসই উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাস করতে পারেনি দেশটি।
তবে এবার নড়েচড়ে বসেছে ইইউ। জিএসপি প্লাস প্রোগ্রামের শর্ত নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ইউরোপের ২৭ দেশের জোটটি। জিএসপি প্লাস সুবিধা অব্যাহত রাখতে পাকিস্তানকে ৩০টির বেশি কনভেনশন বাস্তবায়নের বিষয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইইউ।
এমন পরিস্থিতিতে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন, ধর্ম অবমাননা আইন এবং ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাকিস্তানের সামনে বড় বাধা হিসেবে দেখা দিতে পারে। ইইউ কর্মকর্তারাও বলছেন, নতুন শর্ত নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে পাকিস্তান। এ ছাড়া জিএসপি প্লাসের শর্ত পূরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দেশটির ব্যবসায়ী ও বুদ্ধিজীবীরা দাবি জানিয়ে আসছেন।
পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব লেবার এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (পিআইএলআর)-এর নির্বাহী পরিচালক কেরামত আলী বলেন, মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার আমাদের দেশের জন্য সবচেয়ে গুরুতর চ্যালেঞ্জ। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ওপর কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে। এ জন্য তারা তারা মৌলিক অধিকার অর্থাৎ বাক-স্বাধীনতার ব্যবহার করতে পারে না।
তিনি বলেন, নারী নির্যাতন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার অবনতি, ক্রমবর্ধমান গুম ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা জিএসপি প্লাসের শর্তাবলী লঙ্ঘন করছে৷ ধর্ম অবমাননা, ব্যভিচারসহ ২৮টি অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় ২০১৮ সালে পাকিস্তানের জিএসপি প্লাস স্ট্যাটাস প্রত্যাহার বিষয়ে ইইউ পার্লামেন্টে বিতর্ক পর্যন্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন