ইসরাইলি জিম্মিদের মৃত্যুদণ্ডের হুমকি হামাসের
প্রকাশিত : ১৫:৫৮, ১০ অক্টোবর ২০২৩ | আপডেট: ১৬:০৭, ১০ অক্টোবর ২০২৩
গাজায় বিমান হামলা অব্যাহত রাখলে হামাসের কাছে আটক প্রায় ১৫০ ইসরাইলির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার হুমকি দিয়েছে হামাস। ইসরাইলে আকস্মিক হামলা চালিয়ে তাদের আটক করে নিয়ে আসে হামাস।
সোমবার ইসরাইল গাজা উপত্যকায় অবরোধ আরোপ করে খাদ্য, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় এবং ক্রমবর্ধমান রকেট হামলায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি করার পর হামাস এই হুমকি দিয়েছে।
হামাসের হামলায় ইসরাইলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯০০ জনে পৌঁছেছে। গাজায় ইসরাইলের প্রতিশোধমূলক রকেট হামলায় মৃত্যুর সংখ্যা ৬৮৭ জনে পৌঁছেছে।
সোমবার রাতে বিস্ফোরণ এবং সাইরেন বেজে উঠলে আগুনের গোলা বারবার গাজা শহরকে আলোকিত করে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী সোমবার বলেছে, আনুমানিক প্রায় ১ হাজার হামাস যোদ্ধা সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরাইলে ঢুকেছে। বেসামরিক লোকদের দিকে গুলি ছুঁড়েছে, তাদের জিম্মি করেছে। ইসরাইলি রকেট হামলায় জিম্মিদের মধ্যে চারজন নিহত হয়েছে।
হামাসের সশস্ত্র শাখা ‘ইজ্জেদিন আল-কাসাম ব্রিগেডস’ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সতর্কতা ছাড়াই আমাদের জনগণকে লক্ষ্য করে হামলার জবাবে জিম্মিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।’
ইসরাইল বলেছে, তারা ‘সোর্ড অব আয়রন’ অভিযানের জন্য ৩ লাখ রিজার্ভ সৈন্য মোতায়েন করবে। ইসরাইলের সামরিক মুখপাত্র লিবি ওয়েইস বলেছেন, কিছু হামাস সদস্য দক্ষিণের সীমান্ত এলাকায় এখনও রয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইযোভ গ্যালান্ট বলেছেন, ইসরায়েল দীর্ঘ অবরুদ্ধ ২৩ লাখ লোকের ছিটমহলে ‘সম্পূর্ণ অবরোধ’ আরোপ করবে: ‘বিদ্যুৎ নেই, খাবার নেই, পানি নেই, গ্যাস নেই- সব বন্ধ।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, তিনি অবরোধের ঘোষণায় ‘গভীরভাবে ব্যথিত’ এবং সতর্ক করেছেন যে গাজার ইতোমধ্যেই ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি এখন ‘শুধুমাত্র দ্রুত অবনতি হবে’।
ইসরাইলের চিরশত্রু ইরান হামাসের হামলার প্রশংসা করায় মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা বেড়েছে, যদিও তেহরান সামরিক অভিযানে সরাসরি কোনো ভূমিকার কথা প্রত্যাখ্যান করেছে।
হামাস পশ্চিম তীরে ‘প্রতিরোধ যোদ্ধাদের’ এবং আরব ও ইসলামিক দেশগুলোকে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে অভিযানে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ‘সামরিক অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে’এ কথা উল্লেখ করে দোহা থেকে হামাসের একজন কর্মকর্তা হোসাম বদরান এএফপি’কে বলেন, ‘বন্দিদের বিষয়ে বা অন্য কিছু নিয়ে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই’।
সোমবার ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলেছে, তাদের সৈন্যরা লেবানন থেকে সীমান্ত অতিক্রমকারী ‘অনেক সশস্ত্র সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে হত্যা করেছে’ এবং ইসরাইলি হেলিকপ্টারগুলো ওই অঞ্চলে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে।
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ পরে লেবানন থেকে ইসরাইলে অনুপ্রবেশের চেষ্টার কথা স্বীকার করেছে।
ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ বলেছে, দক্ষিণ লেবাননে ইসরাইলি হামলায় তার তিন সদস্য নিহত হয়েছে। এটি ইসরাইল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে গুলি বিনিময়ের দ্বিতীয় দিন ছিল। তাদের হামলাগুলো হামাসের হামলার সাথে ‘সংহতি’পূর্ণ ছিল।
একজন সিনিয়র মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন,‘আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে হিজবুল্লাহ ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এই সংঘাতের জন্য দ্বিতীয় ফ্রন্ট খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
ইসরাইলের সমর্থনে ওয়াশিংটন তার বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী এবং অন্যান্য যুদ্ধজাহাজ ইসরাইলের কাছাকাছি নিয়ে গেছে। তারা বলেছে, মার্কিন সেনাদের অভিযানে যোগ দেয়ার কোন পরিকল্পনা নেই। তবে জিম্মি পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টায় তার মিত্রের সাথে কাজ করছে।
ইসরাইল গাজা সীমান্ত বেড়া জুড়ে হামাসের আক্রমণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। নজরদারি ক্যামেরা, ড্রোন, টহল এবং ওয়াচ টাওয়ার দ্বারা সুরক্ষিত এই দেয়াল দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভেদ্য বলে মনে করা হয়েছে।
এএইচ
আরও পড়ুন