ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কোন্নয়নে দিল্লিতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন
প্রকাশিত : ১৫:৪৮, ২৪ অক্টোবর ২০২৩
বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কোন্নয়নে সম্প্রতি দিল্লিতে ইন্দো-ইসলামিক হেরিটেজ সেন্টারের (আইআইএইচ) আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে যুগান্তকারী সম্মেলন। তানজীম উলামায়ে ইসলামের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন দুই দেশের বিশিষ্ট প্রতিনিধিরা। তারা ধর্মীয় উগ্রবাদ, শিক্ষার প্রসার ও বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে জনসংযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে আলোচনা করেন।
সম্মেলনের প্রথম সেশন অনুষ্ঠিত হয় গালিব ইনস্টিটিউটে। এতে বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল রহিম এবং চট্টগ্রামের স্থানীয় পত্রিকা ‘দৈনিক পূর্বদেশ’ এর সহকারী সম্পাদক মোহাম্মদ আবু তালেব বিলাল এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কলেজের অধ্যক্ষ দুই দেশের নানা বৈচিত্র্যের মধ্যেও এক্যৈর জন্য সুফী মতাদর্শের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
বিলাল বলেন, বাংলাদেশিদের মধ্যে ভারতপ্রীতি স্পষ্ট। ভারতের আজমীর ও দিল্লির সুফী সাধকদের মাজার পরিদর্শনের আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। মুফতি আশফাক হুসাইন কাদরি উভয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য উদারতাবাদ ও ইসলামের সুফিবাদ প্রচারের পাঠ্যক্রমের উপর জোর দেন।
ইন্ডিয়া ইসলামিক কালচারাল সেন্টারে সম্মেলনের দ্বিতীয় সেশনে অধ্যাপক আখতার উলওয়াস জানান, ভারতের সুফি মাদ্রাসায় বিভিন্ন দেশের অসংখ্য শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। বাংলাদেশের শিশুদের ভারতীয় সুফি মাদ্রাসায় ভর্তির ওপরও জোর দেন তিনি। এ ধরনের উদ্যোগ দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়া বৃদ্ধি করবে। বাংলাদেশি সমাজকর্মী ও যুব সংগঠক ইমরান হোসেন তুষার উগ্রবাদীতার সঙ্গে বাংলাদেশের লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেন। ১৯৭১ সাল থেকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ও উন্নত সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেন। এ ব্যাপারে ভারতের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এই সম্মেলন দুই দেশের সম্পর্ক, আত্মবিশ্বাস ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সাংবাদিকতা বিষয়ে ভারতীয় অধ্যাপক ড. আখলাক উসমানি বলেন, নরেন্দ্র মোদী সরকারের নেতৃত্বে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা এক বছরের মধ্যে দ্বিগুণ হয়েছে। এটি দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান আগ্রহ ও বিশ্বাসের প্রমাণ।
এছাড়া সম্মেলনে দিল্লির জামিয়ামিলিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক আব্দুল ওয়াহিদ নাজির বাংলাদেশের প্রতি ভারতের ব্যাপক সমর্থনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।
সম্মেলনে আলোচনার মূল বিষয়গুলো হলো-
> ভারতীয় সুফি মাদ্রাসায় পাঠ্যক্রম ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে পরিচিত করাতে বাংলাদেশি শিশুদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
> মেডিকেল কলেজগুলোতে ভারতীয় ছাত্রদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা উন্নত করা। বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণার প্রচার ও শিক্ষামূলক পর্যটন বাড়ানো।
> বাংলাদেশের সুফি মাদ্রাসার পাঠ্যক্রমের জন্য তানজীম উলামায়ে ইসলাম এবং ইন্ডিয়া ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের মাধ্যমে নতুন দারসে নিজামী পাঠ্যক্রমের
ব্যবস্থা করা।
> ভিসা প্রক্রিয়ার সম্প্রসারণ করা। বাংলাদেশ থেকে ভারতের সুফি সার্কিটে বাস রুট স্থাপন করা, যাতে ধর্মীয় পর্যটনকে উত্সাহিত করার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করা যায়।
> সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে শিক্ষার্থী বিনিময়ের প্রসার ঘটানো এবং উভয় দেশের জনগণের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি করা।
> বাংলাদেশ থেকে আসা রোগীদের জন্য ভারতীয় হাসপাতালের তথ্য বোর্ড ও ওয়েবসাইটে বাংলা ভাষায় তথ্য দেওয়া এবং হাসপাতালের কর্মীদের জন্য বাংলা ভাষা প্রশিক্ষণের আয়োজন করা।
সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন আইআইএইচসি রিসার্চ ফেলো জাফরউদ্দিন বারকাতি।
আরও পড়ুন