ফিলিস্তিনের জাতিসংঘের সদস্যপদ নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে ভোট
প্রকাশিত : ০৯:৩৭, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র হওয়ার জন্য ফিলিস্তিনিদের আবেদনের ওপর নিরাপত্তা পরিষদে আজ বৃহস্পতিবার ভোটাভুটি হবে।
কূটনৈতিক সূত্র এএফপিকে এ কথা জানিয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের মধ্যে এপ্রিলের শুরুতে ফিলিস্তিনিরা সদস্যপদ পুনরুজ্জীবিত করে। ২০১১ সালে বিশ্ব সংস্থায় প্রথম এই আবেদন করা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র ভেটো প্রয়োগ করে বারবার এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে আসছে।
সাধারণ পরিষদ দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে একটি নতুন সদস্য রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে পারে, তবে তা নিরাপত্তা পরিষদ এ ব্যাপারে সুপারিশ দেওয়ার পর।
আঞ্চলিক ব্লক আরব গ্রুপ মঙ্গলবার একটি বিবৃতি জারি করে ফিলিস্তিনিদের আবেদনের প্রতি তাদের ‘অটল সমর্থন’ নিশ্চিত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘের প্রাসঙ্গিক রেজুলেশনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ফিলিস্তিন সমস্যার স্থায়ী সমাধানে জাতিসংঘের সদস্যপদ একটি ন্যায়সঙ্গত এবং সঠিক পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
সাধারণ পরিষদে ‘ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হোক’ এই মর্মে সুপারিশ প্রদানের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য আলজেরিয়া খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করেছে।
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে কয়েক সপ্তাহ আগে নির্ধারিত বৃহস্পতিবারের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এই ভোটাভুটি হচ্ছে। বেশ কয়েকটি আরব দেশের মন্ত্রীগণ এতে অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ফিলিস্তিনিরা ২০১২ সাল থেকে জাতিসংঘে পর্যবেক্ষকের মর্যাদা পেয়ে আসছে। পূর্ণ সদস্যপদ লাভের জন্য বছরের পর বছর ধরে লবিং করে আসছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ড. রিয়াদ মনসুর বলেছেন, আমরা পূর্ণ সদস্য হতে চাইছি। এটা আমাদের স্বাভাবিক ও আইনগত অধিকার। ফিলিস্তিনিদের পক্ষে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৩৭টি ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি দিয়েছে। সাধারণ পরিষদে তাদের অনুরোধ সমর্থন করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
কিন্তু জাতিসংঘের সদস্যপদ পাওয়ার জন্য ফিলিস্তিনিদের চাপ একটি বড় বাধার সম্মুখীন, ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করে নিরাপত্তা পরিষদে সদস্যপদের সুপারিশ অবরুদ্ধ করতে পারে।
আরব গ্রুপ মঙ্গলবার বলেছে,‘আমরা নিরাপত্তা পরিষদের সকল সদস্যকে খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাই। অন্ততপক্ষে, আমরা কাউন্সিল সদস্যদের এই জরুরি উদ্যোগে বাধা না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’
যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনিদের পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার বিরোধিতা করে বলেছে, তারা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিতে সমর্থন করে তবে তা শুধুমাত্র ইসরায়েলের সাথে আলোচনার পরে। মার্কিন আইনের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছে, ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ছাড়াই যদি এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয় তাহলে জাতিসংঘের তহবিল কমাতে হবে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এপ্রিলে সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন।
ইসরায়েলের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান ফিলিস্তিনের সদস্যপদ প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে বলেছেন, এটি হবে ‘ইতিমধ্যেই গণহত্যামূলক সন্ত্রাসের বিজয়।’
হামাস পরিচালিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক আক্রমণে গাজায় ৩৩ হাজার জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই মহিলা এবং শিশু।
এএইচ
আরও পড়ুন