ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ গ্রহণ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৫৭, ৩০ জুলাই ২০২৪

ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করেছেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। গত ৫ জুলাই রানঅফ নির্বাচনে সাঈদ জালিলিকে পরাজিত করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি।

আজ মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) শপথ নিয়েছেন তিনি। আনুষ্ঠানিক শপথে তিনি বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে, পবিত্র কোরআন ও ইরানের মানুষকে সামনে রেখে মহাশক্তিশালী আল্লাহর কাছে শপথ করছি আমি ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ও এই দেশের সংবিধানের অভিভাবক হলাম।” তার শপথে ৮০টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

কে এই মাসুজদ পেজেশকিয়ান
সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত মাসুদ পেজেশকিয়ান পেশায় এক সময় চিকিৎসক ছিলেন। সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন।

৬৯ বছর বয়সী হার্ট বিশেষজ্ঞ মাসুদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, তিনি বাস্তবধর্মী একটি পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করবেন। এছাড়া পশ্চিমাদের সঙ্গে ২০১৫ সালে করা পারমাণবিক চুক্তিটিও পুনর্জীবিত করার অঙ্গিকারও করেছেন তিনি। ‘অখ্যাত’ এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ আরও বলেছেন, তিনি সামাজিক স্বাধীনতার পক্ষে এবং রাজনৈতিক একত্ববাদের বিরুদ্ধে কাজ করবেন।

ইরানে রয়েছে দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা। ক্ষমতার মূল কেন্দ্রে রয়েছেন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা। পারমাণবিক কার্যক্রম ও মধ্যপ্রাচ্যে সশস্ত্র যোদ্ধাদের সহায়তা নিয়ে ইরানের যে নীতি রয়েছে সেটি বদলে ফেলার খুব বেশি ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের নেই। কারণ প্রধান ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি রাষ্ট্রের সব বিষয় নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

তবে প্রেসিডেন্ট চাইলে নীতি পরিবর্তনে প্রভাব রাখতে পারবেন। এছাড়া আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উত্তরাধিকারী নির্বাচনের বিষয়টিও খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করবেন তিনি।

আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির প্রতি অনুগত থাকবেন মাসুদ?

নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান টিভি ও সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একাধিকবার বলেছেন, তিনি খামেনির নীতিগুলোর বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না। এছাড়া ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও শক্তিশালী নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার কোনো ইচ্ছাও তার নেই।

মাসুদ ভোটারদের এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, নির্বাচনের আগে তিনি যেসব প্রতিশ্রতি দিয়েছেন; যদি সেগুলো পূরণ না করতে পারেন তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। শুধু শুধু সময় নষ্ট করবেন না।

মাসুদ পেজেশকিয়ানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন সাবেক সংস্কারবাদী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতেমি।

হিজাব নিয়ে অবস্থান

চলতি বছরের মে মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তার আকস্মিক মৃত্যু হওয়ার পর দেশটিতে আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। এতে জয় পেয়েছেন মাসুদ।

ইব্রাহিম রাইসি ছিলেন কট্টরপন্থি রাজনীতিবিদ। তার সময়ে হিজাব আইন আরও কঠিন করা হয়। এছাড়া যারা হিজাব ছাড়া বাইরে বের হতেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোরতা দেখানো হতো।

মাসুদ পেজেশকিয়ান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোট দিয়ে বলেছিলেন, “আমরা হিজাব আইনকে শ্রদ্ধা জানাব। কিন্তু নারীদের প্রতি কখনো বাড়াবাড়ি এবং অমানবিক আচরণ করা হবে না।”

২০২২ সালে নৈতিকতা পুলিশের হাতে যখন মাহসা আমিনি নিহত হন তখন তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানানোর দাবি জানিয়েছিলেন তিনি।

ব্যক্তিগত জীবন

১৯৮০ সালে ইরাক-ইরান যুদ্ধে চিকিৎসক ও যোদ্ধা হিসেবে সম্মুখভাগে কাজ করেছেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। তিনি ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন।

১৯৯৪ সালে গাড়ি দুর্ঘটনায় নিজের স্ত্রী এবং এক সন্তানকে হারান তিনি। ওই দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া দুই ছেলে ও মেয়েকে তিনি একাই বড় করেছেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি আর বিয়ে করেননি।

সূত্র: এএফপি, রয়টার্স

কেআই//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি