কঙ্গোতে ইবোলা মহামারি: নিহত ২৩
প্রকাশিত : ১৭:১২, ১৭ মে ২০১৮ | আপডেট: ১৮:২৮, ১৭ মে ২০১৮
আফ্রিকার যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ কঙ্গোতে মহামারী আকার ধারণ করেছে ইবোলা ব্যাধি। মরণঘাতি এই রোগে এখন পর্যন্ত সেখানে নিহত হয়েছেন ২৩ জন ব্যক্তি। এছাড়াও ইবোলায় আক্রান্ত হিসেবে অন্তত ৪২ জনকে সনাক্ত করা হয়েছে।
ইবোলার কারনে শরীরের আভ্যন্তরীণ রক্তঃক্ষরণ হয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা করা না হলে মরণঘাতি হতে পারে এই রোগ। খুবই ছোঁয়াচে এই রোগ মানব দেহ থেকে নির্গত সামান্য তরল কোন উপাদান থেকে ছড়িয়ে পরতে পারে। তবে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরও এর লক্ষণ অনেক দেরিতে বুঝতে পারা যায়।
গতকাল বুধবার কঙ্গোর মোবানডাকা জেলার দক্ষিণের একটি শহরে প্রথম ইবোলা রোগী সনাক্ত করা হয়। মৃত্যুও হয় সেই রোগীর। ইবোলা এখন সংক্রমিত হয়েছে মোবানডাকার মূল শহরে। প্রথম যে অঞ্চলটিতে ইবোলা সনাক্ত হয় তার থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার দূরে মোবানডাকার মূল শহর। আর এই কারণে উদ্বিগ্ন হয়ে পরেছে দেশটির সরকার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
কঙ্গোর স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অনুমান যে, গতকাল মোবানডাকার দক্ষিণ অংশের ঐ এলাকায় ইবোলায় আক্রান্ত ব্যক্তির সৎকার অনুষ্ঠানে যোগ দেন মূল শহরের কয়েকজন ব্যক্তি। তাদের মধ্যেকার দুই বা তিন জন ব্যক্তি সেখান সংক্রমিত হয়েছিলেন। আর এর ফলে মূল শহরে চলে আসে এই ভাইরাসটি।
মোবানডাকার সাথে দেশের অন্যান্য জেলাগুলোর সরাসরি সড়ক ও জলপথে যোগাযোগ রয়েছে। বিশেষ করে রাজধানী কিনাসার সাথে মোবানডাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভালো। এছাড়াও কঙ্গো নদীর মাধ্যমে মোবানডাকার সাথে কঙ্গো ব্র্যাজভিল এবং কেন্দ্রীয় আফ্রিকান রিপাবলিকের মতো দেশের যোগাযোগ রয়েছে। হু আশংকা করছে যে, দ্রুত এই ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রন করা না গেলে ইবোলা ছড়িয়ে পরতে পারে পুরো আফ্রিকা মহাদেশ জুড়ে।
হু জানায়, ইবোলা ভাইরাসের স্পর্শে আসতে পারে এমন অন্তত ৪৩০ জন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেছে তারা। এছাড়াও পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে আরও প্রায় চার হাজার মানুষকে।
ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে কঙ্গোর স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলি লুঙ্গা। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তা পিটার সালামা সার্বিক অবস্থাকে ‘মহামারি’ বলে উল্লেখ করেছেন।
বার্তা সংস্থা বিবিসিকে সালামা বলেন, “পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। সংক্রমণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর মোবানডাকা খুবই জনবহুল এবং অন্য জেলাগুলোর সাথে এর যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভালো হওয়ায় সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদেরকে আরও জোরেসোরে কাজ করে যেতে হচ্ছে”।
হু এর পক্ষ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে প্রায় চার হাজার মানুষের ঔষধ ইতোমধ্যে কঙ্গোতে পৌছেছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব ঔষধ আগে মোবানডাকার মানুষদের জন্য ব্যয় করা হবে। ঔষদের আরেকটি চালানও অতি শীঘ্রই কঙ্গোতে পৌছাবে বলে জানায় সালামা।
এর আগে ২০১৪-১৬ সালের দিকেও ইবোলা মহামারীতে আক্রান্ত হয়েছিল আফ্রিকা। গায়ানা, সিয়েরা লিওন ও লাইবেরিয়াতে সেসময় পরিস্থিতি ছিল সবথেকে খারাপ। ঐ দুই বছরের ১১ হাজার তিনশ’র বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল।
সূত্রঃ বিবিসি
//এস এইচ এস// এআর
আরও পড়ুন