ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

যেভাবে মোদিকে চরম অস্বস্তিতে ফেললেন ট্রাম্প

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৩২, ২৩ জুলাই ২০১৯

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে কাশ্মীর ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পের দেয়া বক্তব্যের জেরে নতুন করে উত্তপ্ত ভারতের রাজনীতির মাঠ। এতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদি।

যা নিয়ে লোকসভার ভেতরে ও বাহিরে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। প্রশ্নেরমুখে পড়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। তবে বিজিপি সাংসদদের দাবি, ট্রাম্পের এমন ভুল-ভাল তথ্য দেয়া নতুন কিছু নয়। বিরোধীদের তারা প্রধানমন্ত্রীর উপর আস্থা রাখতে বলেন।

তিন দিনের যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে গতকাল সোমবার এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদি তাকে বিতর্কিত কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতা করার অনুরোধ করেছেন।’

ট্রাম্পের এমন বক্তব্যে ভারতকে চরম বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেয়। বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা মঙ্গলবার পার্লামেন্টে বিষয়টি তুললে জোরালোভাবে অস্বীকার করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। 

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কখনোই এমন কোনো অনুরোধ জানাননি এবং এ ইস্যুর সমাধান একমাত্র দ্বিপাক্ষিক আলোচনাতেই হতে হবে-ভারতের এমন অবস্থানেরও পরিবর্তন হয়নি বলেও জানান তিনি। তবে তার এ বক্তব্যের চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদির কাছ থেকে এর জবাব শুনতে চান বিরোধী নেতারা। 

বাস্তবতা অবশ্য তাই বলে। কাশ্মীর ইস্যুতে কোন তৃতীয় পক্ষই এর সমাধান করতে পারবেনা। শুধুমাত্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনাই পারে দীর্ঘ বছর ধরে চলা এ সমস্যার সমাধান করতে। এটাই দিল্লির ঘোষিত অবস্থান।

বাহাত্তরের সিমলা বা ১৯৯৯ সালের লাহোর ঘোষণাপত্রে দেয়া এই ঘোষণা থেকে কখনো সরে আসেনি ভারত। তাই ট্রাম্পের এমন বক্তব্যে ভারতের প্রতিক্রিয়া হয়েছে ঠিক বোমাবর্ষণের মতো। যা নতুন করে মোদিকে সংকটে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

মঙ্গলবার সংসদ অধিবেশনের, শুরু থেকেই বিরোধী দলগুলো এ ইস্যুতে বিভিন্ন প্রশ্ন তোলেন। হইচই বাঁধে গোটা পার্লামেন্ট জুড়ে।
 
তবে বিরোধীদের প্রশ্নের জবাবে উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, ‘আপনার কি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকেই বেশি বিশ্বাস করছেন?’ দয়া করে একটা জাতীয় ইস্যুতে রাজনীতির রঙ মেশাবেননা। 

চলতি মাসে দু’সপ্তাহ আগে জাপানে জি-২০ সামিটে ট্রাম্প ও মোদির আলোচনা হয়েছিল। তবে এ ইস্যুতে কোন কথা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তাই বিরোধীদলের দাবি আমরা এ ব্যাপারে কারো কথায় নয়, মোদির কাছ থেকে প্রকৃতটা জানতে চাই।
 
কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ভারতের অবস্থান খুব ভাল করে জানা সত্ত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেন এমন কথা বললেন সেটাই আমরা জানতে চাই।’নিশ্চয়ই এতে কোনো কারণ থাকতে পারেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

গুলাম নবি বলেন, নিশ্চয়ই আমরা আমাদের প্রধানমন্ত্রীর উপর বিশ্বাস করতে রাজি আছি। এটা বলছিনা যে তিনি মিথ্যা বলছেন, কিন্তু কেন তিনি সংসদের সামনে এসে বিষয়টি খোলাসা করছেনা-প্রশ্ন রাখেন তিনি। 

দেশটির সিনিয়র কূটনৈতিক সংবাদদাতা দেবীরুপা ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে জানান, ‘কাশ্মীরে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় ভারতের কোনো লাভ নেই। ফলে মোদির এই ধরনের ইউ টার্ন নেওয়ারও কোন কারণ নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি। তাই গোটা ব্যাপারটাই খুব ধন্দে ফেলার মতো বলে উল্লেখ করেন দেবীরুপা।
 
তিনি বলেন, ‘ট্রাম্পের এমন অভ্যাস নতুন কিছু নয়। অতিথিদের খুশি করতেই তিনি এমনটা করে থাকেন।
 
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন বক্তব্যকে লুফে নিতে দেরি করেননি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তবে ভারত চাইছে বিষয়টি যতটা দ্রুত সম্ভব একটা সমাধানে আনতে। বাকিটা সময়ের অপেক্ষা। সূত্র: বিবিসি

আই/এসি

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি