ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

আসামে নাগরিকত্ব হারালেন ১৯ লাখ মানুষ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৩৫, ৩১ আগস্ট ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যে সংশোধিত নাগরিক তালিকা থেকে ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জনের নাম বাদ পড়েছে। ওই তালিকায় চূড়ান্তভাবে ঠাঁই হয়েছে ৩ কোটি ১১ লাখ লোকের। খবর এনডিটিভির।

শনিবার (৩১ আগস্ট) সকাল ১০টায় ওয়েবসাইটে নাগরিক পঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। তবে যারা বাদ পড়েছেন তারা আপিল করতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।

এ নিয়ে গোটা আসাম জুড়ে নেমে এসেছে আশঙ্কা আর উদ্বেগের ছায়া।

অনলাইনে নিজেদের নামের তালিকা দেখতে পাবেন বাসিন্দারা। যাদের ইন্টারনেট সংযোগ নেই তারা সরকার পরিচালিত সেবাকেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের স্টেটাস দেখতে পারবেন বলে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

কারা বাদ পড়বেন, কারা থাকবেন রাজ্য জুড়ে বাসিন্দাদের এই উদ্বেগ আর আশঙ্কা ক্রমশ ঘিরে ধরছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে ক্ষোভও। সূত্রের খবর, রাজ্যের ৪১ লক্ষ মানুষের ভবিষ্যত্ সঙ্কটের মুখে পড়তে চলেছে।

ইতোমধ্যে অনেকেই এনআরসি-র পদ্ধতি নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্য বিজেপির বেশ কিছু নেতা-মন্ত্রীও।

তাদের আশঙ্কা, বহু বাঙালি হিন্দুর নাম তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে। অনেক বিদেশি এই তালিকায় ঢুকে পড়তে পারেন। গত সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে এনআরসি নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল।

তিনি জানান, তালিকা থেকে বিদেশিদের বাদ দিতে কেন্দ্র আইন আনারও চিন্তাভাবনা করছে যাতে সঠিক নাগরিকরা তালিকা থেকে বাদ না পড়েন।

আসামের মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মাও এই এনআরসি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, বৈধ নাগরিকদের চিহ্নিত করা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বাতিল করার ক্ষেত্রে এই তালিকা কতটা সহযোগী হবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ লাগোয়া জেলা দক্ষিণ সালমারা ও ধুবুরিতে তালিকা থেকে বাদ পড়ার হার সর্বনিম্ন। অথচ ভূমিপুত্র জেলায় প্রচুর মানুষের নাম বাদ পড়েছে। এটা কীভাবে সম্ভব? আমরা এই তালিকায় ভরসা রাখছি না।’

তালিকা প্রকাশের পর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কা করেই গোটা রাজ্যকে নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে। রাজ্য জুড়ে ৬০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আরও ২ হাজার আধাসেনা পাঠিয়েছে কেন্দ্র।

আসাম পুলিশের পক্ষ থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে, যেসব ব্যক্তিদের নাম চূড়ান্ত তালিকায় থাকবে না, তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার। পাশাপাশি তারা এই আহ্বানও জানিয়েছে, “গুজবে কান দেবেন না। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সমাজে একটা বিভ্রান্তি ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিছু অসামাজিক শক্তি। নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য।’

এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে উদ্বেগ ও আশঙ্কায় থাকা নাগরিকদের অবশ্য আশ্বস্তই করছে সরকার। তালিকায় নাম না থাকলে কী করতে হবে সে প্রক্রিয়াও জানিয়েছে তারা।

তালিকায় নাম না থাকা নাগরিকদের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে বলা হয়েছে ১২০ দিনের মধ্যে। এই সময়সীমা আগে ছিল ৬০ দিন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, এই বিষয়ে শুনানির জন্য রাজ্যজুড়ে ১ হাজার ট্রাইব্যুনাল গড়ে তোলা হবে।

ইতোমধ্যেই ১০০ ট্রাইব্যুনাল খোলা হয়েছে। আরও ২০০টি ট্রাইব্যুনাল সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই খোলা হবে। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের পক্ষে এটাও জানানো হয়েছে যে, যদি কোনও ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে মামলাটি হেরে যান, তিনি হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হতে পারেন।

এমএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি