মোদি-মমতা বৈঠকে যেসব কথা হলো
প্রকাশিত : ১৪:৫৮, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯
ভোটের আগে এক সাক্ষাৎকারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, মমতা তাকে প্রত্যেক বছর জন্মদিনে কোর্তা উপহার দেন। অক্ষয় কুমারকে দেওয়া মোদির সেই সাক্ষাৎকারের রাজনৈতিক গুরুত্ব নিয়ে সেদিন জলঘোলা হয়েছিল বিস্তর। এবারও সেই কোর্তা হাতেই মোদির কাছে পৌঁছে গেলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রায় আড়াই বছর পর গতকাল বুধবার ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে মোদির সঙ্গে মুখোমুখি বসেন মমতা। বৈঠকে আলোচনা ‘ভাল’ হয়েছে, মমতা এ কথা বলার পরই রাজনৈতিক মহলে নানা কারণে জল্পনার জল গড়াতে শুরু করেছে। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’র।
যে মোদির সঙ্গে মমতার রাজনৈতিক সম্পর্ক প্রায় আদায়-কাঁচকলায়, যাকে নাকি উঠতে-বসতে আক্রমণ করতে ছাড়েন না মমতা, সেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হতেই তাকে পুষ্পস্তবক দিয়ে শুভেচ্ছা জানালেন তিনি। মোদির হাতে এক থোকা হলুদ গোলাপ তুলে দিলেন তিনি। হাসিমুখে মমতাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান মোদিও। শুধু ফুল নয়, মিষ্টিমুখও করালেন মোদিকে। চন্দননগরের বিখ্যাত মিষ্টির দোকান সূর্য মোদকের জলভরা খাওয়ালেন মোদিকে। সঙ্গে ছিল পাঞ্জাবিও। ফুল, মিষ্টির সঙ্গে বিশ্ববাংলার তাঁতশিল্পীদের তৈরি পাঞ্জাবির সেটও প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন বেশ দীর্ঘক্ষণ কথা হয় দুই নেতৃত্বের। বৈঠক সেরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর আসা হয়নি। সে সময় কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, তাই আসতে পারিনি।
তৃণমূল নেত্রী বলেন, কেন্দ্রের থেকে সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা পাই, সে কথা জানিয়েছি। রাজ্যের নাম বদল নিয়ে কথা হয়েছে। আমি বলেছি, ‘বাংলা’ নামকে সামনে রেখে যদি ওরা কোনও প্রস্তাব দেন, সেক্ষেত্রে আমাদের কোনও সমস্যা নেই।
পাশাপাশি মমতা জানান, বাংলা দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা ব্লক পেয়েছে। বীরভূমে দেউচা-পাচামি কয়লা ব্লক অনুমোদন পেয়েছে। আমি বলেছি, পুজা মিটলে আপনি আসুন, ভাল করে উদ্বোধন করা হবে।
এরপরই মমতা বলেন, রাজনৈতিক কথা হয়েছে। রাজ্য ও দেশের যাতে ভাল হয়, সে ব্যাপারে কথা হয়েছে। তবে মমতা এদিন এও বলেন যে এটা কোনও রাজনৈতিক বৈঠক নয়। এক সরকারের সঙ্গে আরেক সরকারের আলোচনা। উল্লেখযোগ্যভাবে এনআরসি নিয়ে এদিন তাদের কোনও কথা হয়নি বলে দাবি করেছেন মমতা।
এখানে উল্লেখ্য, রাজীব কুমারকে পাকড়াও করতে যখন উঠেপড়ে লেগেছে সিবিআই, ঠিক সে সময়ই মোদির সঙ্গে মমতার সাক্ষাৎ নিয়ে বিরোধীরা দাবি করেছে, ‘রাজীব কুমারকে বাঁচাতেই মোদির সঙ্গে দেখা করতে গেলেন মমতা’। ফলে মোদি-মমতা সাক্ষাৎ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিশেষ আগ্রহ ছিলই। এরপর বৈঠক শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে ‘বৈঠক খুব ভাল হয়েছে’ বলে মন্তব্য করলেন, তাতেই নানা সমীকরণের গন্ধ পাচ্ছেন রাজনীতির কুশীলবরা।
আরও পড়ুন