কাশ্মীরে ব্যাপক গোলাগুলি-বিস্ফোরণে সেনাসহ নিহত ৫
প্রকাশিত : ২২:৪৪, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ০০:০৯, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯
জাতিসংঘে ইমরান খানের ভাষণের পর ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের রামবান জেলায় ব্যাপক গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক সদস্যসহ পাঁচজনের প্রাণহানি ঘটেছে। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রামবানে বেসামরিক এক ব্যক্তিকে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওই গোলাগুলি হয়।
জম্মু অঞ্চলের দায়িত্বরত ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল দেবেন্দর আনন্দ পিটিআইকে বলেন, আমরা বন্দুকযুদ্ধে তিন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছি। অভিযান শেষ হয়েছে। এই অভিযানে সেনাবাহিনীর এক সদস্যও মারা গেছেন।
এদিকে জম্মু পুলিশের মহাপরিদর্শক মুকেশ সিং এএনআইকে বলেছেন, জিম্মিদশার অবসানে অভিযানের সময় পুলিশের দুই সদস্যও আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে এদিন সকালে জম্মু-কাশ্মীরের পৃথক তিনটি স্থানে বন্দুকযুদ্ধ ও গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। জম্মু কাশ্মীরের শ্রীনগর মহাসড়কে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পোশাকে পরে সন্ত্রাসীদের একটি দল যাত্রীবাহী একটি বাস ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। পরে শ্রীনগর মহাসড়কের রামবনে পুলিশের সঙ্গে ওই সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি শুরু হয় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে।
অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন গুরেজ সেক্টরের গন্ডেরবাল এলাকায় দ্বিতীয় হামলাটি হয়। সেখানে সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুই হামলাকারী। এ সময় সেনাদের পাল্টা গুলিতে তাদের একজনের মৃত্যু হয়।
এদিন তৃতীয় হামলাটি ঘটে শ্রীনগরে। সেখানে গ্রেনেড ছোড়ে হামলাকারীরা। তবে রাস্তায় লোকজন কম থাকায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালাচ্ছে সেনারা।
এনডিটিভি বলছে, জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগর মহাসড়কে যাত্রীবাহী চলন্ত বাসকে থামানোর চেষ্টা করেছে ২-৩ জনের একটি সন্ত্রাসী দল। শ্রীনগর মহাসড়কের রামবান জেলার বাটোটের কাছে বাস থামানোর এই চেষ্টার পর সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলি হয়।
পরে ওই ব্যক্তি কিছুদূর বাস চালিয়ে যাওয়ার পর পুলিশকে এ ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। ওই এলাকায় সন্ত্রাসীরা একটি বাড়িতে ঢুকে একজন প্রবীণ ব্যক্তিকে জিম্মি করেছেন বলে জানা যায়। একজন প্রত্যক্ষদর্শী এনডিটিভিকে বলেন, আমি অন্তত দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি।
এর আগে শুক্রবার রাতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। যেখানে তিনি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীর থেকে কারফিউ উঠে গেলে সেখানে রক্তবন্যা বয়ে যেতে পারে বলে বিশ্ব নেতাদের সতর্ক করে দেন। তার এই সতর্কবার্তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মুসলিম অধ্যুষিত উপত্যকাটি।
জাতিসংঘ কিংবা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কাশ্মির ইস্যুতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারলে আগামী দিনগুলোতে সেখানকার পরিস্থিতি রক্তাক্ত হতে পারে বলেই শঙ্কা বিশ্লেষকদের।
এনএস/
আরও পড়ুন