ঢাকা, সোমবার   ১০ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে নিরাপদ অঞ্চল গঠনে রাজি নয় মিয়ানমার 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩৯, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ‘সেইফ জোন’ বা নিরাপদ অঞ্চল গঠনের প্রস্তাবে রাজি নয় মিয়ানমার। তবে তাদের ফিরিয়ে নিতে আরো উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি। 

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাতে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে পঞ্চম দিনের বিতর্কে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর কার্যালয়ের মন্ত্রী কোয়ে তিন্ত সোয়ে একথা বলেন। এসময় দুই বছর আগে সম্পাদিত দ্বিপক্ষীয় চুক্তির বাহিরে গিয়ে কিছু করার সুযোগ নেই বলে জানান তিনি। 

২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় ৯ লাখ রোহিঙ্গা। ফলে পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১ লাখে। নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসায় নিরাপত্তাহীনতায় নিজ দেশে যেতে আগ্রহী নন রোহিঙ্গারা। ফলে, কয়েকদফা চেষ্টা করেও তাদের প্রত্যাবাসন করা যায়নি। 

‘সেইফ জোন’ বাস্তব সম্মত নয় দাবি করে সোয়ে বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ২০১৭ সালে করা দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী হবে। তাই নিরাপদ অঞ্চলের চাপ থাকলেও তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে তাদের প্রত্যাবসনের জন্য উপযোগী পরিবশের প্রতি অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে জানান তিনি। এটাই তাদের সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ বলেও দাবি করেন সোয়ে। 
রোহিঙ্গা সঙ্কট বড় আকার ধারণ করার পর ২০১৭ সালে জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে এ সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরেছিলেন, যার মধ্যে রাখাইন রাজ্যে আলাদা ‘বেসামরিক পর্যবেক্ষক সেইফ জোন’ প্রতিষ্ঠাসহ কফি আনান কমিশনের সুপারিশগুলোর সম্পূর্ণ বাস্তবায়নের কথা ছিল।

এ বছর চলতি অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী চারটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। প্রস্তাবনাগুলোতে সেইফ জোনের কথা উল্লেখ নেই। তবে সেখানে ‘রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার ও সুরক্ষার নিশ্চয়তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বেসামরিক পর্যবেক্ষক মোতায়েনের’ কথা বলা হয়েছে।

তিন্ত সোয়ে বলেন, এখন মিয়ানমার প্রত্যাবাসনের জন্য আরও অনুকূল পরিবেশ তৈরিকে অগ্রাধিকার দেবে। রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত এসব বাস্তুচ্যুতদের ‘পৃথক আইনি মর্যাদা’ আছে। তালিকাভুক্ত এসব প্রত্যাবর্তনকারীদের মধ্যে যারা নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য তাদের ‘নাগরিকত্ব কার্ড’ দেওয়া হবে। বাকিদের দেওয়া হবে ‘ন্যাশনাল ভেরিকেশন কার্ড’ (এনভিসি), যাকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের জন্য দেওয়া ‘গ্রিন কার্ড’ এর সঙ্গে তুলনা করেন এই কর্মকর্তা।

সোয়ে দাবি করেন, বর্তমান মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে, যখন চরমপন্থী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরএসএ) সশস্ত্র হামলা চালায়। তার আগে রাখাইন রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে সরকার সচেষ্ট ছিল।

নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা এসব রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার পাশপাশি আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টিতে চেষ্টা চালিয়ে আসছে বাংলাদেশ। এতে কয়েকদফা সিদ্ধান্ত নেয়ার পরও মিয়ানমারের অসহযোগীতায় এখনো রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়নি।

আই/আরকে


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি