মুক্তি পাচ্ছেন কাশ্মীরের নেতারাও
প্রকাশিত : ১১:০৯, ৪ অক্টোবর ২০১৯

ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদে দেয়া কাশ্মীরিদের বিশেষ মর্যাদা বিলোপকালে গৃহবন্দি ও আটক করা হয় জন্মু-কাশ্মীরি নেতাদের। পাশাপাশি ১৪৪ জন কিশোরকে আটক করেছিল ভারতীয় প্রশাসন।
কাশ্মীরের কালো মেঘ এখনো সরে যায়নি, অনেক এলাকায় জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। এমতাস্থায় ভারত নিয়ন্ত্রিত জন্মু-কাশ্মীরে নতুন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
নির্বাচনকে ঘিরে ইতিমধ্যে আটক ১৪৪ জন বালকের মধ্যে ১৪২ জন বালক ও জন্মু নেতাদের মুক্তি দেয়া হয়েছে। এবার নির্বাচনকে সামনে রেখে গৃহবন্দি কাশ্মীরি নেতাদের মুক্তি দেয়া হচ্ছে কাশ্মীরি নেতাদেরও। রাজ্যপালের উপদেষ্টা ফারুক খানের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার এ খবর জানিয়েছেন।
তবে এক সঙ্গে নয়, ধাপে ধাপে এই নেতাদের মুক্তি দেওয়া হবে। ফলে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতিরা। আসন্ন ২৪ অক্টোবরের নির্বাচনে যাতে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন এমন চিন্তা করেই তাদের মুক্তি দেয়া হচ্ছে বলে ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম এ খবর নিশ্চিত করেছে।
৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর থেকেই জম্মু এবং কাশ্মীরের প্রায় ৪০০ নেতা-নেত্রীকে আটক বা গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এবং মেহবুবা মুফতিকে আটক করা হয়েছিল। আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সাংসদ ৮৩ বছর বয়সি ফারুক আবদুল্লাকেও গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল।
এর পাশাপাশি অধিকাংশ রাজনৈতিক দল-সংগঠনের নেতা-নেত্রীদের হয় গৃহবন্দি, নয়তো আটক করে রাখা হয়েছিল। তবে গত বুধবারই জম্মুর নেতা-নেত্রীদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এবার কাশ্মীরের পালা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ফারুক খান জানিয়েছেন, ‘‘হ্যা, প্রত্যেকের কার্যক্রম আলাদা আলাদা করে পর্যালোচনা করে ধাপে ধাপে কাশ্মীরের নেতা-নেত্রীদের মুক্তি দেওয়া হবে।’’
চলতি বছরের ৫ অগস্ট ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে দেওয়া এবং কাশ্মীর ও লাদাখকে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার আগে থেকেই কার্যত নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছিল জম্মু কাশ্মীরকে। ল্যান্ড ফোন, মোবাইল, কেবল পরিষেবা বন্ধ করে গোটা উপত্যকায় জারি হয় কড়া নিরাপত্তা। ফলে গোটা উপত্যকাই ছিল দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন। তবে গত দুই-তিন সপ্তাহ ধরে সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে উপত্যকা। তার মধ্যেই গত সপ্তাহে ঘোষণা হয়েছে নির্বাচন।
৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পরে এই প্রথম উপত্যকায় ভোট হচ্ছে। ৩০০ ব্লকের ভোটগ্রহণ ঘিরে উপত্যকায় রাজনৈতিক তৎপরতাও শুরু হয়েছে। ভোট গণনাও হবে ওই দিনই। সেই ভোটগ্রহণকে সামনে রেখেই এই নেতাদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে।
উপত্যকা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করলেও এখনও অনেক জায়গায় সতর্কতা জারি রয়েছে। অনেক জায়গায় এখনও ইন্টারনেট, মোবাইল, ল্যান্ডলাইন, কেবল পরিষেবা বন্ধ এবং যাতায়াতের উপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
কবে সেই নিয়ন্ত্রণ উঠবে, সে প্রশ্নে অবশ্য স্পষ্ট করে কিছু বলেননি রাজ্যপালের উপদেষ্টা। তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসনে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
আই/
আরও পড়ুন