ভারতের নাগরিকত্ব বিল নিয়ে ৬০০ বুদ্ধিজীবীর প্রতিক্রিয়া
প্রকাশিত : ২০:৩৮, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ০৮:৪২, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯
ভারতের নাগরিকত্ব বিল নিয়ে চলছে ব্যাপক বিতর্ক। এই বিলকে ‘বিভাজনমূলক, পক্ষপাতদুষ্ট এবং অসাংবিধানিক’ বলে মন্তব্য করে এই বিল প্রত্যাহার করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ৬০০ জন লেখক, শিল্পী, প্রাক্তন বিচারপতি এবং আধিকারিক।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, তিনটি প্রতিবেশী দেশের অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এই বিলে। এই আবেদনে স্বাক্ষর রয়েছে লেখক অশোক বাজপেয়ি, অরুন্ধুতি রায়, পাউল জাকারিয়া, অমিতাভ ঘোষ এবং শশী দেশপাণ্ডের। শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন টিএম কৃষ্ণ, অতুল দোড়িয়া, বিভান সুন্দরম, সুধীর পট্টবর্ধন, গুলাম মহম্মদ শেখ এবং নীলিমা শেখ। অপর্ণা সেন, নন্দিতা দাস এবং আনন্দ পট্টবর্ধনের মতো চলচ্চিত্র নির্মাতাদেরও স্বাক্ষর রয়েছে এই বিলে।
রোমিলা থাপ্পার, প্রভাত পট্টেনায়েক, রামচন্দ্র গুহ, গীতা কাপুর, অকিল বিলগ্রামি এবং জোয়া হাসানের মতো শিক্ষাবিদরাও এই আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন। তিস্তা সেটালভাড, হর্ষ মন্দের, অরুণা রায় এবং বেজওয়াড়া উইলসনের মতো ব্যক্তিত্ত্বরাও রয়েছেন এই তালিকায়। এছাড়াও রয়েছেন অবসর প্রাপ্ত বিচারপতি এপি সাহা, যোগেন্দ্র যাদব, জিএন দেবী, নন্দিনী সুন্দর এবং ওয়াজাট হাবিবুল্লাহ।
ভারতের সংবিধান ‘মৌলিক সাম্যতা, লিঙ্গ, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায় বা ভাষার ঊর্দ্ধে’ জোর দিয়েছে বলে মন্তব্য করে বুদ্ধিজীবিরা বলেন, এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ‘জাতীয় নাগরিকত্ব বিলের সঙ্গে সঙ্গেই দেশজুড়ে মানুষের ভোগান্তি নিয়ে আসবে। এটা অপূরণীয়ভাবে এবং মৌলিকভাবে ভারতের প্রজাতন্ত্রের ক্ষতি করবে’।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই কারণেই, তারা, এবং সমস্ত নাগরিকের বিবেকবুদ্ধি দাবি করে যে, বিলটি প্রত্যাহার করুক সরকার। সেই কারণেই তাদের দাবি, সরকার যেন ,সংবিধানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা না করে’।
সোমবার ১২ ঘন্টা বিতর্কের পর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পেশ করা নাগরিকত্ব বিল লোকসভায় পাশ হয় মধ্যরাতে। প্রস্তাবিত এই বিলের বিরোধিতা করে বিরোধীরা, এই প্রথমবার ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ধর্মের ভিত্তিতে।
২০১৫-এর আগে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসা অ-মুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এই বিলে। সংসদের ভিতরে বিরোধীরা ছাড়াও, সংসদের বাইরেও প্রতিবাদে সামিল হয়ে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের অভিযোগ, এই বিল মুসলিম-বিরোধী এবং তা দেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানকে আঘাত করবে।
গত লোকসভা নির্বাচনে ইস্তেহারে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের উল্লেখ করেছিল তারা। বিলের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তাদের দাবি, ‘এই তিনটি দেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি এবং ক্রিশ্চানরা নির্যাতিত হয়েছেন’।
এসি
আরও পড়ুন