বিকল্প ইন্টারনেট চালু করতে যাচ্ছে রাশিয়া
প্রকাশিত : ১০:৩৫, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯
বিশ্বের নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে শুধুমাত্র রাশিয়ার ভেতরে কাজ করবে এমন 'বিকল্প ইন্টারনেট' চালু করার পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করেছে রাশিয়া। যার নাম দিয়েছে 'আনপ্লাগড ইন্টারনেট'।
দেশটির যোগাযোগ মন্ত্রণালয় বলেছে, রাশিয়ার সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এই পরীক্ষার সময় কোন ধরনের পরিবর্তন টের পাননি। এই পরীক্ষার ফল প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে উপস্থাপন করার হবে। তারপর এর বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেবে রুশ সরকার।
সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া তারের মাধ্যমে বৈশ্বিক ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত বিভিন্ন দেশ। এই লাইনের
বিভিন্ন জায়গায় গ্রন্থির মতো এক ধরনের সংযোগস্থল রয়েছে। সেখান থেকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ডাটা বা উপাত্ত স্থানান্তর হয়।
কিন্তু রাশিয়া যে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে যাচ্ছে তাতে বৈশ্বিক নেটওয়ার্কের সংযোগস্থলগুলোকে বন্ধ করে অথবা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিদেশি ডাটার আনাগোনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। সেজন্যেই একটি 'বিকল্প ও স্বতন্ত্র' অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে চাচ্ছে তারা। এর মাধ্যমে দেশটির নাগরিকেরা কোন ধরনের ওয়েবসাইটে যেতে পারবে সেটি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে রাশিয়া সরকার।
রাশিয়া চাইছে, তারা একটি নিজস্ব উইকিপিডিয়া তৈরি করবে এবং সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দেশটির পার্লামেন্ট এক আইন পাস করেছে। যাতে যেসব স্মার্টফোনে রাশিয়ায় তৈরি সফটওয়ার আগে থেকে ইন্সটল করা নেই সেগুলোর বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা আছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এসব নীতি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণে সরকারকে সহায়তা করতে পারে। তবে এতে যে তারা সফল হবেই এমন কোন কথা নেই।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জাস্টিন শেরম্যান বিবিসিকে বলেন, এর আগে এনক্রিপটেড মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামের বার্তার উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে প্রযুক্তিগত দিক থেকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে রাশিয়াকে। তবে ঠিক কী ধরনের সফল পরীক্ষা দেশটি চালিয়েছে তার বিস্তারিত না আসা পর্যন্ত রাশিয়া কতদূর অগ্রসর হয়েছে সেটি বোঝা মুশকিল।
তবে অন্য কয়েকটি দেশ এ রকম ব্যবস্থা নিয়ে কিছুটা সফল হয়েছে। এর মধ্যে ইরানের 'ন্যাশনাল ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক' বাইরে থেকে আসা সকল 'ইন্টারনেট কনটেন্টের' উপর নজরদারি করে এবং তথ্যের আনাগোনা নিয়ন্ত্রণ করে। নজরদারি পাশ কাটিয়ে কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার জন্য যে 'ভিপিএন' মানুষজন ব্যবহার করেন সেগুলো কাজ করবে না।
চীনে যে ব্যবস্থা রয়েছে তাকে বলা হয় 'দা গ্রেট ফায়ারওয়াল অফ চায়না'। সেখানে গুগল, ফেসবুক সহ বিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যায় না। এর ফলে দেশটির নিজস্ব প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো খুব লাভবান হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, বিশ্বের ইন্টারনেট ভেঙে ফেলতে চাইছে রাশিয়া। অধ্যাপক অ্যালান উডওয়ার্ড বলেছেন, দিনকে দিন অনেক কর্তৃত্ববাদী দেশ তাদের নাগরিকরা ইন্টারনেটে কী দেখে সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। ইরান ও চীন ইতিমধ্যেই তা করছে। সূত্র : বিবিসি
এএইচ/
আরও পড়ুন