রোহিঙ্গা সংকট: মিয়ানমারের যুদ্ধাপরাধ তদন্তে তহবিল বরাদ্দের ঘোষণা
প্রকাশিত : ১৩:৫৮, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১৪:০৩, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯
মিয়ানমারের যুদ্ধাপরাধ তদন্তে তহবিল বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ
প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের যুদ্ধাপরাধ তদন্ত করে দেখার জন্য তহবিল বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ওপর গ্রেফতার, নির্যাতন, ধর্ষণ, হেফাজতে মৃত্যুসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে দেশটির বিরুদ্ধে একটি নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে উত্তেজনা প্রশমনে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহবানও জানানো হয় প্রস্তাবটিতে। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপি’র বরাত দিয়ে বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
জাতিসংঘের তিন শত সাত কোটি ডলারের এই তদন্ত তহবিলে প্রথমবারের মতো সিরিয়া ও মিয়ানমারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গতকাল শুক্রবার আনা নিন্দা প্রস্তাবে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে পক্ষে ১৩৪টি এবং বিপক্ষে ৯টি দেশ ভোট প্রদান করে। প্রস্তাবটিতে ভোটদানে বিরত থাকে ২৮টি দেশ। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত কোনো প্রস্তাব দেশটি মানতে বাধ্য না হলেও বিশ্ব মতামতের ক্ষেত্রে এ ধরণের প্রস্তাবের প্রভাব রয়েছে। তবে মিয়ানমারের দাবি, উগ্রবাদীদের দমন করতে তাদের এসব অভিযান চালানো হয়।
গত নভেম্বর মাসে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে মামলা করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। যে শুনানিতে হাজিরা দিয়েছেন দেশটির নেত্রী অং সান সু চি। মিয়ানমারে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে রোহিঙ্গা মুসলমান নির্যাতনের হওয়ার তথ্য উপাত্ত তুলে ধরা হয় নিন্দা প্রস্তাবে। সেসব ঘটনাকে আন্তর্জাতিক আইনে চরম অপরাধ বলে মিশনটি বর্ণনা করেছিল।
এই প্রস্তাব অনুমোদনের পর জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত হাও দো সুয়ান একে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের নামে আরেকটি বৈষম্যমূলক ও বিশেষভাবে বাছাই করার দ্বৈত আচরণ’ বলে বর্ণনা করেছেন। যার মাধ্যমে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চাপ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। প্রস্তাবটি রাখাইন রাজ্যে জটিল পরিস্থিতি সমাধানে কোনো ভূমিকা রাখবে না বলে মনে করেন তিনি।
এই প্রস্তাব সেখানে ‘অবিশ্বাসের বীজ বপন’ করবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এটি ওই অঞ্চলে নানা সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও মেরুকরণ তৈরি করবে।’
জাতিসংঘের ওই প্রস্তাবে চার দশক ধরে প্রতিবেশী বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসার ব্যাপারে সতর্কবার্তা তুলে ধরা হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। ২০১৭ সালের অগাস্ট মাসে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর দমন পীড়ন অভিযান চালানোর পর থেকেই এসেছে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। বাংলাদেশ থেকে কয়েক বার রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হলেও মিয়ানমারে নিরাপদ পরিবেশের অভাবে দেশে ফিরতে রাজি নন রোহিঙ্গারা।
এআই/এমএস
আরও পড়ুন