ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন
আসামে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির সামনে কালো পতাকা, প্রতিবাদীদের মারধর
প্রকাশিত : ১২:২৫, ২ জানুয়ারি ২০২০
ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্তের রাজ্য আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালের কনভয়ের সামনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কালো পতাকা দেখানোর পর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) প্রতিবাদীদের মারধর করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর দেয়।
প্রতিবাদীদের নিষ্ঠুরভাবে মারধর করার একাধিক ভিডিও ভাইরাল হলো সোশ্যাল মিডিয়ায়। নলবাড়ি জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় চলে যাওয়ার পর প্রতিবাদীদের নিষ্ঠুরভাবে মারধর করতে দেখা যায় পুলিশকে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী গুয়াহাটি থেকে বারপেটা জেলার কৃষ্ণগুরুতে আশ্রমে যাওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রীকে একাধিক স্থানে কালো পতাকা দেখায় আসু ও এজিওয়াইসিপি-র প্রতিবাদীরা। কেবল কালো পতাকা দেখানোই নয়, মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় যাওয়ার সময় প্রতিবাদীদের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতেও দেখা যায়।
একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশকর্মীরা নিরস্ত্র প্রতিবাদীদের তাড়া করছে হাইওয়েতে। দেখা যাচ্ছে একটি গলির মধ্যেও পুলিশ তাড়া করছে প্রতিবাদীদের। তাদের মধ্যে থেকে একজনকে ধরে ভ্যানে তুলতেও দেখা যায়।
আরেকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ এক প্রতিবাদীকে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে। যে পুলিশকর্মীকে এক প্রতিবাদীকে মারধর করতে দেখা যায়, তাকে পরে একটি বাসের দিকে পালিয়ে যেতে দেখা যায়।
নলবাড়ির পুলিশ প্রধান অমনজিৎ কউর এর বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, মাত্র একটি ক্ষেত্রেই পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়েছে। এক প্রতিবাদীকে ধরার পর তিনি ভ্যানে উঠতে না চাইলে তাকে এক কী দু’বার লাঠি দিয়ে মারা হয়। আলাদা করে কোনও লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ওই এলাকায় কোনও রকম জমায়েতের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এবং ওই প্রতিবাদীরা পুলিশের কাছ থেকে বিক্ষোভ প্রদর্শনের কোনও অনুমতিও নেয়নি। ১৪৪ ধারা জারি ছিল বলেই পুলিশ জনতাকে তাড়া করে বলে জানান তিনি।
আসু-র কর্মী সন্দন বেজবড়ুয়া গুরুতর আহত হয়েছেন। নলবাড়ির কাছে এক হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে আসু-র সম্পাদক বিমন বর্মন জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদীদের উপরে পুলিশি হানার ভিডিও উত্তরপ্রদেশেও পাওয়া গিয়েছিল। সেখানে প্রতিবাদীদের সহিংস প্রতিবাদের পরে পুলিশের লাঠি চালানো ও গুলি চালানোরও অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনায় ২১ জনের মৃত্যু হয়।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, ২০১৫ সালের আগে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, পাকিস্তান থেকে ভারতে যাওয়া অমুসলিম শরণার্থীরা ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার আবেদন করতে পারবেন। সমালোচকদের দাবি, এই আইন বৈষম্যমূলক এবং সংবিধানে বর্ণিত দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির পরিপন্থী।
একে//
আরও পড়ুন