পরমাণু চু্ক্তি না মানার ঘোষণা দিল ইরান
প্রকাশিত : ১০:৩৩, ৬ জানুয়ারি ২০২০
মার্কিন হামলায় শীর্ষ ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার জেরে এবার ২০১৫ সালে হওয়া পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দিল তেহরান। ওই চুক্তির মাধ্যমে ইরানের ওপর যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল তা আর মানা হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছে দেশটি।
স্থানীয় সময় রোববার তেহরানে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেয়া হয়।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, পরমাণু সমৃদ্ধকরণ, সমৃদ্ধ পরমাণুর মজুত বা পারমাণবিক গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে আর কোনও নিষেধাজ্ঞা মানা হবে না। তবে দেশটির পক্ষ থেকে পারমাণু বিষয়ক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথাও বলা হয়েছে।
২০১৫ সালে ৬ দেশের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী, ইরান তাদের স্পর্শকাতর পরমাণু কার্যক্রম সীমিত রাখতে সম্মত হয়েছিল। তবে এর আগে যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তি একাধিকবার ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ করে তেহরান।
ইরানের কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে দাফন করার কয়েক ঘণ্টা আগে এ ঘোষণা দেয়া হয়। গতকাল রোববার জাতীয় পতাকায় আবৃত তার মরদেহ আকাশপথে নিয়ে যাওয়া হয় ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমের আহওয়াজ শহরে। এ সময় আহওয়াজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইরানের শীর্ষস্থানীয় শত শত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
তার মরেদেহ ইরানে পৌঁছালে লাখ লাখ মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন। চোখের পানিতে বিদায় জানান সোলাইমানিকে।
গত শুক্রবার ভোররাতের (২ জানুয়ারি) ওই হামলার পর থেকে চরম উত্তেজনায় পৌঁছেছে দুই দেশের সম্পর্ক। হামলা-পাল্টা হামলার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প-রুহানি।
এদিকে, ইরাক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহার করতে দেশটির সংসদে একটি প্রস্তাব পাস করেছেন সংসদ সদস্যরা। দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় পাঁচ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে।
রোববার ইরাকের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বিদেশি সামরিক উপস্থিতি বন্ধ করার আহ্বান জানানোর পর প্রস্তাবটি পাস হয়।
শুক্রবার বাগদাদ বিমানবন্দরে ড্রোন হামলায় শীর্ষ ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার দুই দিনের মাথায় রোববার এ প্রস্তাব পাস হলো বাগদাদের সংসদে।
ইরাকের পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সরকার আন্তর্জাতিক জোটের কাছে সহযোগিতা চেয়ে ইরাকে সেনা রাখার যে অনুরোধ করেছিল তা বাতিল করার প্রস্তাব করবে। কেননা ইরাকে সামরিক অভিযান শেষ হওয়ার সঙ্গে জয় (আইএসকে পরাজিত) অর্জিত হয়েছে।’
পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওই প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, ‘সরকার অবশ্যই ইরাকের মাটিতে অন্য দেশের সেনা উপস্থিতির অবসান ঘটাতে কাজ করবে এবং যে কোনও কারণে এর ইরাকের ভূমি, আকাসসীমা অথবা জলপথ ব্যবহার করতে দেবে না।’
সংসদের আইন বিষয়ক কমিটির প্রধান আল শিবলি বলেন, ‘ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) পরাজিত করার পর মার্কিন সেনাদের এখন আর প্রয়োজন নেই। দেশ রক্ষায় আমাদের সশস্ত্রবাহিনী আছে।’
প্রসঙ্গত, ইসলামিক স্টেটকে পরাজিত করার পর ইরাকের অনুরোধে তাদের সেনাদের প্রশিক্ষণ দিতে মার্কিন সেনারা এখনও দেশটিতে রয়েছে।
এদিকে, ইরাকের সংসদে বিলটি পাস হওয়ার আগে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ইরাকের আন্তর্জাতিক আইএস-বিরোধী সামরিক জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সোলেইমানি কাসেমির হত্যার পর ইরাকের সামরিক ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অন্য দেশের সেনাদের সুরক্ষার কথা ভেবে তারা কার্যক্রম পরিচালনা আপাতত বাতিল করেছে।
এআই/
আরও পড়ুন