ইউক্রেনের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় চাপে ইরান
প্রকাশিত : ১১:৪৪, ১২ জানুয়ারি ২০২০
তেহরান বিমানবন্দরের কাছে ইউক্রেনের বিমান উড্ডয়নের পর ভুলবশত তা বিধ্বস্তের ঘটনায় এবার সরকার বিরোধী বিক্ষোভে নেমেছে ইরানিরা। যেখানে হাজার হাজার মানুষ অংশ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে বিশ্ব নেতাদের চাপের মুখে পড়েছে দেশটি।
প্রথম দিকে বিমানটি বিধ্বস্তের পর ইরান অস্বীকার করলেও কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনার মুখে তদন্তে সত্যতা পায়। শনিবার (১১ জানুয়ারি) ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক খবরে এর দায় স্বীকার করে ক্ষমা চায় তেহরান।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘মার্কিন নেতৃত্বাধীন সংকটের কারণে মানবিক ভুলে এই বিপর্যয় ঘটেছে।’
তিনি বলেন, ‘এটি একটি বেদনাদায়ক দিন। সশস্ত্র বাহিনীর অভ্যন্তরীণ তদন্তে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো গেছে যে মানবিক ভুলেই এই বিপর্যয় ঘটেছে। আমাদের জনগণ, ভুক্তভোগীদের পরিবার ও আক্রান্ত দেশগুলোর প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা, দুঃখ ও শোক প্রকাশ করছি।’
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কেন ঘটনাটি ধামাচাপা দিলেন ও কালবিলম্ব করলেন সেই ক্ষোভ থেকেই রাস্তায় নেমেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। বিক্ষোভকারীরা দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভে অংশ নিলে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ছুড়েছে।
এদিকে ইরাকের এ বিক্ষোভকে অনুপ্রেরণামূলক বলে টুইট করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা শরীফ বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমির কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হয়েছেন। প্রথমদিকে তারা নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সমাবেশ করেন। কিন্তু সন্ধ্যার দিকে বিক্ষোভে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
যারা বিমান বিধ্বস্তের পেছনে দায়ী এবং যারা এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা কমান্ডার ইন চিফ এবং সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দিতে থাকে।
গত বুধবার সকালে তেহরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিপর্যয়কর ভুলে ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসের পিএস ৭৫২ ফ্লাইট হামলার শিকার হয়েছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস এই ভিডিওটির সত্যাসত্য যাচাই করেছে। ভিডিওতে উজ্জ্বল আলোর ঝলকানির আগে দ্রুত চলাচলকারী একটি বস্তুকে কৌণিকভাবে উপরে উঠতে দেখা গেছে। সেটি অনুজ্জ্বল আলো ছড়াচ্ছিল এবং অব্যাহত সামনে ধাবিত হয়। কয়েক সেকেন্ড পরে একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাওয়া গেছে।
বিমানটিতে ৮২ ইরানি, ৬৩ কানাডীয়, ১১ ইউক্রেনের, ১০ সুইডিস, চার আফগান, তিন জার্মানির ও তিন ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে যখন উত্তেজনা তুঙ্গে তখনই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ইরাকি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক ঘণ্টা পর এ বিষয়টি প্রকাশ্য হতে শুরু করে।
এদিকে, ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে উসকানিমূলক তৎপরতা চালানোর দায়ে তেহরানে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত রব ম্যাকএয়ার’কে শনিবার কয়েক ঘণ্টার জন্য আটক করে ইরান। পরে অবশ্য তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এআই/
আরও পড়ুন