ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

ইউক্রেনের বিমান বিধ্বস্তের ভিডিও করা ব্যক্তি গ্রেফতার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২২, ১৫ জানুয়ারি ২০২০

ইরান বলেছে, ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিধ্বস্ত হওয়ার ভিডিও যে ব্যক্তি ধারণ করেছে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে যে, গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক অভিযোগ আনা হবে।

ফ্লাইট পিএস-৭৫২ বুধবার তেহরান থেকে উড্ডয়নের পর পরই ভূপাতিত করা হয় যাতে ১৭৬ আরোহীর সবাই নিহত হয়।

ইরান বলে যে, ভুল করে বিমানটি ভূপাতিত করা হয় এবং এ ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েকজনকে আটকের কথাও জানায় দেশটি।

প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, তার দেশের তদন্ত পর্যবেক্ষণ করবে একটি ‘বিশেষ আদালত’।

এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘এটি নিয়মিত এবং সাধারণ কোন ঘটনা হবে না। পুরো বিশ্ব এই আদালতের উপর নজর রাখবে।’

রুহানি জোর দিয়ে বলেন যে, ‘মর্মান্তিক ঘটনা’র জন্য কোন একজন ব্যক্তিকে দোষারোপ করা উচিত নয়।

‘এর পেছনে শুধু একজন ব্যক্তি ছিলেন না যিনি ট্রিগার চেপেছেন, বরং অন্য যারা দায়িত্বে ছিলেন তারাও দায়ী,’ তিনি বলেন।

ইরান প্রাথমিকভাবে অস্বীকার করেছিল যে বিমানটি একটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভূপাতিত হয়েছে, কিন্তু পরে স্বীকার করে নেয় যে যাত্রীবাহী জেটটি তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার শিকার হয়েছে।

ভিডিওটি যখন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, তখন বিশ্লেষকরা বলেন যে, এটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের শিকার হয়েছে।

কাকে গ্রেফতার করা হয়েছে?

ইরানের গণমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে বলছে যে, ইরানের এলিট রেভল্যুশনারি গার্ড, গত সপ্তাহে বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের একটি ভিডিও পোস্ট করেছে এমন একজন ব্যক্তিকে হেফাজতে নিয়েছে।

কিন্তু লন্ডনভিত্তিক ইরানের একজন সাংবাদিক যিনি প্রাথমিকভাবে ভিডিওটি পোস্ট করেছিলেন, তিনি জানিয়েছেন যে, তার সূত্র নিরাপদে রয়েছে এবং ইরানি কর্তৃপক্ষ ভুল ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।

এর আগে মঙ্গলবার, ইরানের বিচারবিভাগের মুখপাত্র গোলাম হোসেইন এসমাইলি বলেন, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।

‘অবৈধভাবে সভা-সমাবেশ করার’ অভিযোগে ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে- সম্প্রতি হওয়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভের স্পষ্ট উল্লেখ এটি।

এদিকে, নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় যে, ২০ সেকেন্ডের ব্যবধানে বিমানটিকে লক্ষ্য করে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে।

সংবাদপত্রটি বলে যে, এর থেকেই বোঝা যায় যে কেন বিমানের ট্রান্সপন্ডার কাজ করছিল না, কারণ প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রটির মাধ্যমে এটি অচল করে দেয়া হয়েছিল।

অন্যান্য দেশ কী বলছে?

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মঙ্গলবার বলেন, বিমান বিধ্বস্ত করে ‘ভয়ানক ভুল’ করার কথা যে ইরান স্বীকার করেছে তাতে তিনি ‘খুশি’ হয়েছেন।

‘এটা ভাল যে তারা ক্ষমা চেয়েছে। এখন সবচেয়ে বড় যে বিষয় তা হচ্ছে ওই অঞ্চলে উত্তেজনা শান্ত হোক,’ তিনি বলেন।

জনসন বলেন যে, ইরানের পরবর্তী পদক্ষেপ হওয়া উচিত ফ্লাইট পিএস-৭৫২ এর নিহত আরোহী এবং ক্রুদের ‘মরদেহগুলোকে সম্মানের সাথে’ হস্তান্তর করা, যার মধ্যে তিন জন ব্রিটিশ নাগরিকও রয়েছেন।

ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভাদিম প্রিস্তাইকো সোমবার বলেছিলেন, এ ঘটনার আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা করতে বিমানে থাকা নিহত নাগরিকদের ৫ দেশ যথা- কানাডা, ইউক্রেন, আফগানিস্তান, সুইডেন এবং অন্য আরেকটি দেশ বৃহস্পতিবার লন্ডনে সাক্ষাৎ করবে।

তিনি বলেন, ‘দুঃখ ভারাক্রান্ত দেশগুলোর’ ঠিক করা উচিত যে তারা একক এবং যৌথভাবে কী কী পদক্ষেপ নেবে যাতে এ ঘটনায় জড়িতদের ন্যায়বিচারের আওতায় আনা যায় এবং স্বজনহারা পরিবারগুলোকে কিভাবে ক্ষতিপূরণ দেয়া যায়।

কানাডার পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ডের প্রধান ক্যাথি ফক্স বলেছেন যে, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োজনের বাইরে গিয়েও বিমান ভূপাতিতের তদন্তে আরো বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে দেশটি।

এই ঘটনায় কানাডার ৫৭ জন নাগরিক নিহত হয়েছে। 

সূত্র: বিবিসি


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি