করোনা ভাইরাস নিয়ে জরুরি ১০ নির্দেশনা
প্রকাশিত : ২৩:২৯, ২৭ জানুয়ারি ২০২০
করোনা ভাইরাস নিয়ে জরুরি ১০ নির্দেশনা
চীনে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে করোনা ভাইরাস। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা ৮০ ছাড়িয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে অন্তত ২ হাজার ৭৪৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, লাখ ছড়িয়েছে। ইতোমধ্যে ১৪টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। জারি করা হয়েছে জরুরি কিছু নির্দেশনা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলছে, ‘করোনা ভাইরাস’ মূলত ভাইরাস গোত্রের বৃহত্তর অংশ। সংস্থাটি এর নামকরণ করেছে ২০১৯-এনকভ। এতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে গলা ব্যথা, কাশি, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-হাঁচি, জ্বরসহ সার্স ও মার্সের নানা উপসর্গ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ১ থেকে ১৪ দিন সময়ের মধ্যে ভাইরাসটির সংক্রমণ হয়।
চীন ছাড়াও ইতোমধ্যে হংকং, যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, ম্যাকাউ, নেপাল, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া, কানাডায় এ ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত করা গেছে। বিগত ১৪ দিনের মধ্যে কেউ যদি এসব দেশে ভ্রমণ করেন, তাদের জন্য এসব নির্দেশনা বেশি জরুরি।
১. যারা এই দেশগুলোর যে কোনও একটিতে ভ্রমণ করেন কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাস সম্বন্ধীয় জটিলতা ও উল্লিখিত উপসর্গগুলো যদি কারও শরীরে ধরা পড়ে বা বুঝতে পারেন, তাহলে তাদের অবশ্যই বায়ুবাহিত বিচ্ছিন্নতার মধ্যে রাখতে হবে। এ ধরনের কোনও রোগীকে কোনও ভাবেই অন্য কোনও মানুষের সংস্পর্শে আসতে দেয়া যাবে না।
২. যদি আপনার শরীরে সর্দি-কাশি, হাঁচি, ঠান্ডা, শ্বাসকষ্ট অথবা জ্বরের মতো সিভিয়ার অ্যাকুইট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (সার্স) বা উল্লিখিত কোনও উপসর্গ লক্ষ্য করেন, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া ও আপনার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা জরুরি। যত দ্রুত সম্ভব এটা করতে হবে।
৩. আপনার মধ্যে যদি এ ধরনের কোনও লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে কোনওভাবেই অন্য কারও সংস্পর্শে যাওয়া যাবে না। এছাড়া আপনার চারপাশের কারও মধ্যে যদি হাঁচি-কাশি, সর্দি কিংবা জ্বর ও শ্বাসকষ্টের মতো এসব লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে তার আশপাশে যাওয়াও আপনার জন্য নিষিদ্ধ।
৪. উপরে যে ১৪টি দেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, সেসব দেশ ভ্রমণের পর বাড়িতে ফিরে কারও মধ্যে যদি এসব লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে তারা যখন চিকিৎসক কিংবা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য হাসপাতাল-ক্লিনিকে যাবেন, তখন আপনি অবশ্যই আপনার চিকিৎসককে ভ্রমণের বিস্তারিত জানাতে ভুলবেন না।
৫. যদি কারও মধ্যে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হওয়ার মতো কোনও লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে আপনাকে অবশ্যই সার্বক্ষণিক মেডিকেল মাস্ক পরে থাকতে হবে। শুধু আক্রান্ত ব্যক্তি নয়, এ ভাইরাস যাতে আপনাকে সংক্রমিত করতে না পারে, সেজন্য আপনারও মাস্ক পরে জনসম্মুখে চলাচল করা উচিত।
৬. আপনি যখন মাস্ক ব্যবহার করবেন, তখন আপনাকে অবশ্যই এটা স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া আপনি যে মাস্কটি পরেছেন তা আপনার মুখ এবং নাক পুরোটা ঢেকে ফেলেছে কিনা এটাও নিশ্চিত করতে হবে। যদি এটা খেয়াল না করেন, তাহলে মাস্ক পরে থাকলেও ভাইরাসটি আপনাকে সংক্রমিত করতে পারে।
৭. আপনি যদি একটা মাস্ক প্রতিদিন ব্যবহার করতে চান তাহলে সেটাও হবে ভুল। আপনাকে প্রতিদিন নতুন নতুন মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, যা ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাবে। এছাড়া প্রতিদিন ঘরে ফিরে মাস্কটি খুলে ফেলার পর অবশ্যই আপনার হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। যাতে করে হাতে কোনও জীবাণু না থাকে।
৮. হাত না পরিষ্কার করে কোনও ভাবেই সে হাত দিয়ে অন্য হাত, চোখ, নাক এবং মুখে স্পর্শ করা যাবে না। সাবান কিংবা অন্য যে কোনও জীবাণুনাশক দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যালকোহলভিত্তিক হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করা এক্ষেত্রে উত্তম।
৯. যেসব স্থানে জনসমাগম বেশি সেসব স্থানে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা এ ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়। যদি আপনি জনসমাগম বেশি এসব জায়গায় চলাফেরা করেন তাহলে আপনার ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাবে। গেলেও সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে সবসময়।
১০. আপনার আশপাশের থাকা কেউ যদি কাশি কিংবা হাঁচি দেয়, তাহলে তাদের সংস্পর্শে আসার আগে অবশ্যই আপনার নাক ও মুখ ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষ করে পরিবারের কোনও সদস্যের কারও মধ্যে লক্ষণগুলো দেখা দিলে পরিবারের অন্যদের সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে।
এনএস/
আরও পড়ুন