ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

করোনার টিকা তৈরি হতে সময় লাগবে ১৮ মাস!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:১০, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

এখন পর্যন্ত চীনে করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতায় ঝরেছে ১ হাজারে ৩৫৭ জনের প্রাণ। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে এ ভাইরাসে ২৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক। 

অপরদিকে আক্রান্তের সংখ্যা উৎপত্তিস্থল হুবেই প্রদেশের ৩৩ হাজারসহ প্রায় ৪৯ হাজার মানুষ প্রাণঘাতি এ ভাইরাসে আক্রান্ত। এতে বিশ্বজুড়ে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। 

তবে মরণব্যাধি প্রতিরোধে প্রতিষেধক টিকা তৈরির কার্যক্রম শুরু হলেও সহসাই আসছে না বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। 

চীনের উহানে শুরু হওয়া এ ভাইরাসটিতে আক্রান্তের ৬ সপ্তাহ পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এর নামকরণ করেছে করোনভাইরাস-কোভিড-১৯। তবে করোনায় লাশের সারি বাড়লেও এর টিকা হাতে পেতে অন্তত ১৮ মাস  সময় লাগবে বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ভাইরাসটি পুরো বিশ্বের জন্য হুমকি স্বরুপ বলেও উল্লেখ করা হয়ে। 

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেডরস আদানম গেব্রিয়াসুস ওই ওয়েবসাইটে জানান, ‘প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের টিকা এবং ওষুধ তৈরির জন্য গবেষণায় আরও জোরদার করা দরকার। ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে প্রথম টিকা ১৮ মাসের মধ্যে প্রস্তুত হওয়ার আশা করা হচ্ছে। করোনা থেকে মুক্তি পেতে সবার সচেতনা জরুরি।’ 

সংস্থাটি জানায়, ভাইরাসের জিন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এটি কোনো একটি প্রাণী থেকে উৎপত্তি হয়েছে। তবে কোন প্রাণী থেকে তা এখনো স্পষ্ট নয়। উহানের সেই সিফুড মার্কেটটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পুরো এলাকা এখন জীবাণুমুক্ত। তারপরও কিভাবে এটি প্রাণী থেকে মানুষের দেহে প্রবেশ করলো তা নিয়ে গবেষণা চলছে।’ 

এ লক্ষ্যে গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের অন্তত ৪০০ বিজ্ঞানী সভা করেছেন। এ সভা থেকে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা ও তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়। 

গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে শুরু হওয়া এ মরণঘাতী ভাইরাসে এখন পর্যন্ত চীনের বাহিরে ফিলিপাইন ও হংকংয়ে একজন করে মারা গেছেন। এছাড়াও দেশটিতে বসবাসরত যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানি এক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। 

এদিকে বাংলাদেশে চলতি মাসের প্রথমদিকে চীন ফেরত ৩১২ জনকে আশকোনা হজ্ব ক্যাম্পে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এছাড়া আক্রান্ত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ৫৯ জনের মুখের লালা ও রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে তাদের কারো শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়নি। 

এদিকে গতকাল বুধবার চীন ফেরত আরও একজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগেও চীন ফেরত দুইজনকে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে কারো শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। 

অন্যদিকে, সিঙ্গাপুরে করোনায় আক্রান্ত বাংলাদেশিদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান। 

তিনি বলেন, ‘আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তারা সিঙ্গপুরের ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশন ডিজিজ বা এনসিআইডির নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। এছাড়াও আরও ৯ জন বাংলাদেশিকে ‘কোয়ারেন্টাইনে’ রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।  

এদিকে, সাগর পথে চীন থেকে বাংলাদেশে আসা ১৭ চীনা নাগরিককে গতকাল উড়োজাহাজে বেইজিংয়ে পাঠানো হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের লালবেগ উপকূল থেকে তাদের মাইক্রোবাসে করে এনে চট্টগ্রাম হযরত শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিয়ে বিশেষ একটি জাহাজে তাদের পাঠানো হয়ে। থাইল্যান্ড হয়ে তারা নিজ দেশে পৌঁছাবেন বলে জানা গেছে। গত ২০ জানুয়ারি একটি জাহাজে সীতাকুণ্ড উপকূলে ওই চীনারা আসলে তাদের বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হয়নি। 

চীনের বাইরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে নোঙর করা ডায়মন্ড প্রিন্সেস নামক প্রমোদতরীতে। বিলাসবহুল ওই নৌযান তিন হাজার ৭০০ যাত্রী নিয়ে এখন কোয়ারেন্টাইনে। বুধবার পর্যন্ত সেখানে থাকা ১৭৫ জনকে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।

এআই/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি