করোনা ভাইরাস : চীনে মৃতের সংখ্যা ১৫শ’ ছাড়িয়েছে
প্রকাশিত : ০৯:৪০, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০
মরণঘাতী করোনা ভাইরাসে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা কোনোভাবেই হ্রাস পাচ্ছে না। গত ২৪ ঘণ্টায় মহামারি আকার ধারণ করা এ ভাইরাসে নতুন করে এক জাপানিসহ ১৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে আজ শনিবার পর্যন্ত ১ হাজার ৫২৩ জনের প্রাণ ঝড়লো (যদিও সংখ্যা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক)। যাদের অধিকাংশই ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল হুবেই প্রদেশের।
আজ শনিবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য বিভাগের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
অপরদিকে, আক্রান্তের সংখ্যা কয়েশগুণ। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২ হাজার ৬৪১ জনের দেহে ভাইরাসটির সন্ধান মিলেছে। এ নিয়ে শনিবার সকাল পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৬৬ হাজার ৪৯২ জনে দাঁড়িয়েছে।
চীনের বাহিরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত জাপানে। সূর্য্যদয়ের দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩’শ জনের দেহে নতুন এ ভাইরাসটির সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এর আগে উৎপত্তিস্থল উহানে এক জাপানি নাগরিক মারা গেলেও গতকাল শুক্রবার প্রথমবারের মত জাপানে এ ভাইরাসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ নারীর মৃত্যু হয়। এছাড়াও চলতি মাসের প্রথমদিকে হংকং ও ফিলিপাইনে একজন করে মারা যান।
এদিকে, বর্ধিত ছুটি কাটিয়ে শুক্রবার যারা চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে ফিরেছেন, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে তাদের ১৪ দিনের জন্য সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনে (পরীক্ষা করার ব্যবস্থা) কাটাতে নির্দেশ দিয়েছে বেইজিং ভাইরাস প্রিভেনশন ওয়ার্কিং গ্রুপ।
এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এখন থেকে বেইজিংয়ে ফিরে আসা সবাইকে ঘরে বসে থাকা উচিত। অথবা ১৪ দিনের জন্য গ্রুপ পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে। বেইজিংয়ের সরকারি সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, কেউ না মানলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।’
এদিকে করোনার প্রাণকেন্দ্র চীনের উহান শহরটি এখন কার্যত বন্ধ বা অচল হয় আছে। এর মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বহু স্বেচ্ছাসেবী আক্রান্তদের হাসপাতালে আনা-নেয়া করছেন। আবার অনেকে স্বাস্থ্য কর্মীদের যাদের পরিবহনের ব্যবস্থা নেই তাদের সহায়তার চেষ্টা করছেন।
প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের প্রকৃত অবস্থা আরও ভয়াবহ বলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে বলা হচ্ছে, চীনের এ নতুন ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা গোপন করছে সরকার।
চলমান পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়ে গত ১২ ও ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বের অন্তত ৪০০ বিজ্ঞানী নিয়ে সভা করেছে। সেখান থেকে কাঙ্খিত দিক নির্দেশনা আসবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। তবে প্রতিষেধক তৈরি হতে অন্তত ১৮ মাস সময় লাগবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে আশকোনা হজ্ব ক্যাম্প নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকা চীন ফেরত ৩১২ বাংলাদেশিকে আজ ছাড়পত্র দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। তাদের কারো শরীরে করোনার সংক্রমণ না পাওয়া যায় তারা বাড়িতে ফিরতে পারছেন বলে গতকাল শনিবার জানান আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
এদিকে গত বুধবার চীন ফেরত আরও একজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগেও চীন ফেরত দুইজনকে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে কারো শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, মরণঘাতী করোনা ভাইরাসে সিঙ্গাপুরে আরও দুই বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। এর আগেও সিঙ্গাপুরে থাকা দুই বাংলাদেশি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। যার ফলে এখন দেশটিতে করোনাক্রান্ত বাংলাদেশির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৪ জনে।
এআই/
আরও পড়ুন