ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

করোনা ভাইরাস: মৃত্যুর মিছিলে যোগ হলো আরও ৯৬ জন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | আপডেট: ০৮:৫৭, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

করোনা সংক্রামণের ভয়ে লিফটে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছেন শ্রমিকরা, চীনের উহান- সিনহুয়া

করোনা সংক্রামণের ভয়ে লিফটে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছেন শ্রমিকরা, চীনের উহান- সিনহুয়া

প্রাণঘাতী করোনা প্রাদুর্ভাবে এখনও নিয়ন্ত্রণের বাহিরে আক্রান্ত ও নিহতের সংখ্যা। সময়ের ব্যবধানে মৃত্যুর মিছিল যেন দীর্ঘ হয়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মরণঘাতী এই ভাইরাসে নতুন করে ৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে দেশটির ২ হাজার ৪৩৫ জন নাগরিক প্রাণ হারালেন। আর চীনের বাহিরের ১৫ জনসহ মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৪৫০ জন। 

অপরদিকে, শুক্রবার আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও গতকাল শনিবার সকাল থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় আবারও বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। রোববার সকাল পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে আরও ৬৩০ জন। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৭৭ হাজার ছাড়িয়েছে। 

আজ রোববার দেশটির স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে কাতার ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।  

নিহতদের মধ্যে চীনের বাইরে রয়েছে ১৫ জন। এর মধ্যে হংকং, ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়া ও ইতালিতে দুইজন করে এবং তাইওয়ান, জাপান, ফ্রান্স, ফিলিপাইনে একজন করে মারা গেছেন।

চীনের বাইরে সবশেষ গতকাল শনিবার ইতালির ইত্তরাঞ্চলীয় শহর পাদুয়ায় করোনায় ৭০ বছর বয়সী আরও এক নারীরর মৃত্যু হয়েছে। এর আগে এই শহরের ৭৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি মারা যান। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭৭ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ পাওয়া গেছে।

এছাড়া, গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়োয় দুইজনের মৃত্যু হয়। দেশটিতে নতুন করে আরও ১২৩ জনের দেহে করোনার সন্ধান মিলেছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশটির ৫৫৬ জন নাগরিক করোনায় আক্রান্ত বলে স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে। 

এর আগের দিন বুধবার মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে প্রথমবারের মত করোনায় মারা যায় দুইজন। এখন পর্যন্ত দেশটির ১৮ নাগরিকের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তবে চীনের বাহিরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত জাপানে। সূর্য্যদয়ের দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা চারশ ছাড়িয়েছে।

এর আগে উৎপত্তিস্থল উহানে এক জাপানি নাগরিক মারা গেলেও গত ১৪ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) প্রথমবারের মত জাপানে এ ভাইরাসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক নারীর মৃত্যু হয়।

এছাড়াও চলতি মাসের প্রথমদিকে হংকং ও ফিলিপাইনে একজন করে মারা যান। আর গত সপ্তাহে এশিয়ার বাইরের দেশ ফ্রান্সে এক চীনা পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। ৮০ বছর বয়সী ওই চীনা পর্যটক সম্প্রতি হুবেই থেকে ফ্রান্সে বেড়াতে এসেছিলেন।

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি পাওয়া যায়নি। তবে সিঙ্গাপুরে পাঁচ বাংলাদেশি করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

তবে গত সপ্তাহে চীন ফেরত আরও একজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগেও চীন ফেরত দুইজনকে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে কারো শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। এছাড়া, হবিগঞ্জ ও বরগুনায় করোনা সন্দেহে দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

গত ৪ ফেব্রুয়ারি জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে পৌঁছার পর থেকেই কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ব্রিটিশ প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেস। এখন পর্যন্ত এর ২১৯ যাত্রীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।

এদিকে করোনার প্রাণকেন্দ্র চীনের উহান শহরটি এখন কার্যত বন্ধ বা অচল হয় আছে। এর মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বহু স্বেচ্ছাসেবী আক্রান্তদের হাসপাতালে আনা-নেয়া করছেন। আবার অনেকে স্বাস্থ্য কর্মীদের যাদের পরিবহনের ব্যবস্থা নেই তাদের সহায়তার চেষ্টা করছেন। দেশটিতে সাধারণ রোগীর পাশাপাশি গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। যেখানে উহানের এক হাসপাতালের পরিচালকও রয়েছেন। 

গত ৩১ ডিসেম্বর হুবেই প্রদেশের উহান শহরেই প্রথম এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এখন পর্যন্ত এটি বিশ্বের অন্তত ৩০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের হুবেই প্রদেশের উহানের একটি সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু। অনেক দেশই তাদের নাগরিকদের চীন ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। 

এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায়, বেলজিয়াম, কম্বোডিয়া, কানাডা, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং, ভারত, ইতালি, জাপান, ম্যাকাও, মালয়েশিয়া, নেপাল, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, শ্রীলঙ্কা, সুইডেন, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভিয়েতনামে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এআই/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি