ঢাকা, শনিবার   ১২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

সিএএ নিয়ে দিল্লি রণক্ষেত্র, নিহত ১ পুলিশকর্মী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৪০, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

Ekushey Television Ltd.

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে রণক্ষেত্রে পরিণত হলো রাজধানী দিল্লি। দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে প্রাণ গেল এক পুলিশ হেড কনস্টেবলের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তর-পূর্ব দিল্লির একাধিক জায়গায় নতুন করে বিক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছে। খবর আনন্দবাজারের   

শনিবার রাতে শাহিন বাগের ধাঁচে বিক্ষোভ চলছে জাফরাবাদের রাস্তায়। কয়েক’শ মহিলা জড়ো হয়েছেন সেখানে। তা নিয়ে রবিবারই পুলিশকে শাসানি দিয়েছিলেন বিজেপির কপিল মিশ্র। বিক্ষোভকারীদের না হটালে তারাও পাল্টা রাস্তায় নামবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। সেই নিয়ে গতকালই তেতে উঠেছিল জাফরাবাদ।

সোমবার দুপুরেও তা নিয়ে বিক্ষোভ চলছিল গোকুলপুরি, ভজনপুরা এলাকায়। তখনই সিএএ-র সমর্থনে একদল মানুষ সেখানে এসে হাজির হয় বলে অভিযোগ। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিতে দিতে সিএএ বিরোধী মিছিলের সামনে হাজির হয় একটি দল। তাতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাস্তার উপরই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। একে অপরকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ইটবৃষ্টি চলতে থাকে। বেশ কিছু গাড়িও দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি একটি পেট্রোল পাম্পেও আগুন ধরানো হয় বলে অভিযোগ।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশের একটি বাহিনী। লাঠিচার্জ করে এবং কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে পুলিশ। তাতে সংঘর্ষ চরম আকার ধারণ করে। পুলিশের উপরও ইট এসে পড়ে। তাতেই মাথায় গুরুতর আঘাত পান রতনলাল নামের এক হেড কনস্টেবল। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। ইটের আঘাতে আরও বেশ কয়েক জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। জিটিবি হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। তবে ইটের আঘাতে রতনলালের মৃত্যু হয়েছে নাকি গুলিতে তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। ঘটনার সময়কার একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে পিস্তল উঁচিয়ে পুলিশকে শাসানি দিতে দেখা গিয়েছে এক যুবককে। এমনকি গুলির শব্দও শোনা গিয়েছে।

বিক্ষোভ যাতে চরম আকার ধারণ না করে, তার জন্য ইতিমধ্যেই জাফরাবাদ, মৌজপুর-বাবরপুর, জোহরি এনক্লেভ এবং শিব বিহার মেট্রো স্টেশনের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেখানে কোনও ট্রেন দাঁড়াবে না। ওই এলাকায় ১৪৪ ধারাও জারি হয়েছে।

সোমবারই সপরিবারে দু’দিনের ভারত সফরে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার সকালে আমদাবাদ হয়ে আগরা গিয়েছেন তাঁরা। সেখান থেকে দিল্লি যাবেন। তার মধ্যেই পরিস্থিতি এমন চরম আকার ধারণ করায় উদ্বেগ বাড়ছে সাউথ ব্লকের। শান্তি বজায় রাখতে ইতিমধ্যেই বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। অশান্তি থেকে দূরে থাকতে তাঁদের পরামর্শ দিয়েছেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বৈজলও। 

এ দিন টুইটারে কেজরীওয়াল লেখেন, ‘লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সঙ্গে কথা হয়েছে। পুলিশ বাহিনী পাঠানো হচ্ছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন উনি। কোনওরকম হিংসা বরদাস্ত করা হবে না। সকলের কাছে আমার অনুরোধ, দয়া করে শান্তি বজায় রাখুন। হিংসার মাধ্যমে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না।’

তবে এ দিনের ঘটনার জন্যও বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রকে দায়ী করেছেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। গতকাল জাফরাবাদে অশান্তির পর থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় টুইটারে একাধিক মন্তব্য পোস্ট করেছেন কপিল মিশ্র। কোথাও তিনি লেখেন, ‘দিল্লিতে দ্বিতীয় শাহিন বাগ হতে দেব না।’ কোথাও আবার বিক্ষোভের ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘জাফরাবাদে বিক্ষোভের মঞ্চ তৈরি হচ্ছে। ফের একটা এলাকায় আইনের শাসন নেই। মোদীজি ঠিকই বলেছিলেন যে, শাহিন বাগ দিয়ে শুরু হয়েছে, এ বার ধীরে ধীরে রাস্তা, গলি, বাজার হারানোর জন্য প্রস্তুত হন। আপনাদের দরজা পর্যন্ত না এসে পৌঁছনো পর্যন্ত চুপ করেই থাকুন আপনারা।’

এই ধরনের মন্তব্য করে কপিল মিশ্রই জাফরাবাদে হিংসায় মদত জুগিয়েছেন বলে এ দিন অভিযোগ করেছেন ওয়েইসি। নাম না করে টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘প্রাক্তন বিধায়ক এবং এক বিজেপি নেতার উস্কানিমূলক মন্তব্যই এ দিনের দাঙ্গার জন্য দায়ী। এখন তো পুলিশের যুক্ত থাকার প্রমাণও স্পষ্ট। ওই প্রাক্তন বিধায়ককে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। হিংসা রুখতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে, নইলে এটা আরও ছড়িয়ে পড়বে।’

এসি
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি