দিল্লির আগুনে প্রাণ গেল আকবরির!
প্রকাশিত : ১৮:৩৩, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | আপডেট: ১৯:৪৩, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০
দগ্ধ ঘরের ভিতর প্রায় ১০ ঘণ্টা পড়ে ছিল আকবরির মৃতদেহ।
ভারতের দিল্লিতে সহিংস ঘটনায় তীব্র আগুনে বলি এক অশীতিপর বৃদ্ধা। জানা গিয়েছে, উত্তর-পূর্ব দিল্লির গামরি এক্সটেনশনের এক বহুতলে মঙ্গলবার হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা। আকবরি নামে ওই বৃদ্ধা বহুতলের চার তলায় ছিলেন। গোটা বাড়িরই একটার পর একটা তলায় হামলা চালিয়ে বাইরে থেকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তাতেই শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধার। খবর এনডিটিভির
এই ঘটনার সময় মৃতার ছেলে সাইদ সালমানি ঘরের বাইরে থাকলেও, নাতি-নাতনিদের নিয়ে অভিশপ্ত সেই বহুতলে ছিলেন আকবরি। সালমানির অভিযোগ, ‘সকাল ১১টা নাগাদ বাচ্চারা আমাকে বলে বাড়িতে দুধ নেই। সেটা শুনে আমি দুধ আনতে বেরিয়ে পড়ি। ফেরার পথে ছেলে ফোন করে বলে প্রায় ১৫০ জন আমাদের বাড়িতে পৌঁছেছে। ওরা হিন্দু না মুসলিম, আমি জানি না। সেটা দেখে আমার ছেলে ভিতর থেকে দরজা তালাবন্ধ করে দেয়।’
জানা গিয়েছে, সালমানির বছর ১৫-২০-এর মধ্যে চারটি সন্তান আছে। যাদের মধ্যে দুজন কন্যা সন্তান। মাতৃশোকে বিহ্বল সালমানির দাবি, ‘আমার মা উপরের তলায় ছিল, তাই আটকে পরেছিলেন। ছেলে ফোনে চিৎকার করছিল, বাবা আসো, বাঁচাও আমাদের। কিন্তু স্থানীয়রা আমাকে যেতে দেননি। ওরা বলেছিল এখন যেও না, তাহলে তোমাকেও মেরে দেবে।" মৃতদেহ উদ্ধারের পর প্রাথমিক ময়না তদন্তে দাবি করা হয়েছে, দুই হাতে পোড়ার চিহ্ন থাকলেও, শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধার।
সালমানির আরও অভিযোগ, ‘উন্মত্ত জনতা প্রথমে একদম নীচের আমার কাপড়ের দোকানে আগুন জ্বালায়। তারপর একে একে প্রথম, দ্বিতীয় ও চতুর্থ তলায় আগুন জ্বালায়। আমরা পরিবার নিয়ে চার তলায় থাকি।’
মাকে হারিয়ে সেই যুবকের আবেদন, ‘একে হিন্দু বনাম মুসলিম হিসেবে দেখবেন না। আমার দোকানে অনেক হিন্দু কর্মচারী কাজ করত। সবসময় আমরা শান্তিতে থাকতাম। তারপরেও আমি আমার মা এবং রুজি-রুটি হারালাম।’
মঙ্গলবার রাত প্রায় ৯টা দিকেও আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দমকল বাহিনী। আগুনের উৎসকে বন্ধ করলেও ধোঁয়ার কুণ্ডলী তখনো দেখা যাচ্ছে।
এসি
আরও পড়ুন