ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪

করোনা ভাইরাসে অবরুদ্ধ পুরো ইতালি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৩৭, ১০ মার্চ ২০২০ | আপডেট: ১১:৪৫, ১০ মার্চ ২০২০

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ইতালির মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ফলে এক প্রকার অবরুদ্ধ অবস্থায় জীবন যাপন করছেন ইতালির মানুষ। 

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দেশ জুড়ে জরুরি কর্মকাণ্ড বাড়িয়েছে ইতালি। এর মধ্যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং জনসমাগমে না যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া সব ধরণের খেলাধূলা বাতিল করেছে ইতালি। 

সোমবার প্রধানমন্ত্রী জুজেপ্পে কন্টে মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন এবং জরুরি ভ্রমণের ক্ষেত্রেও অনুমোদন নেয়ার কথা বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে থাকা মানুষদের সুরক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, ‘হাতে আর সময় নেই।’

সোমবার ইতালিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৬৬ থেকে ৪৬৩ জনে দাঁড়িয়েছে। চীনের পর এটি সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশ।

সরকারি হিসাব বলছে, রোববার থেকে নিশ্চিতভাবে আক্রান্তের সংখ্যাও ২৪% বেড়েছে। ইতালির ২০টি এলাকার সবকটিতে ভাইরাস আক্রান্তের খবর মিলেছে।

প্রধানমন্ত্রী জুজেপ্পে কন্টে বলেন, সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে মানুষকে ঘরে থাকতে হবে। ‘আমাদের এখানে সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়ছে...আর সেই সাথে মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে,’ সন্ধ্যায় দেয়া এক ভাষণে তিনি একথা বলেন।

‘পুরো ইতালি একটি সংরক্ষিত এলাকায় পরিণত হবে,’ তিনি বলেন।

‘ইতালির স্বার্থে আমাদের সবাইকেই কিছু না কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আর এটা এখনই করতে হবে।’

‘এজন্যই সংক্রমণ ঠেকাতে এবং নাগরিকদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা দিতে আমি আরো বেশি দৃঢ় ও কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

লা রিপাবলিকা সংবাদপত্রকে দেয়া এর আগে এক সাক্ষাৎকারে প্রাদুর্ভাব নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমার চার্চিলের সেই পুরনো কথা মনে পড়ছে...এটা আমাদের সবচেয়ে অন্ধকারতম সময়, কিন্তু আমরা এটি অতিক্রম করবো।’

নিষেধাজ্ঞাগুলো কী কী?

মিস্টার কন্টে এক কথায় নিষেধাজ্ঞা বোঝাতে বলেছেন, ‘বাড়িতে থাকুন’- সেই সাথে জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

‘রাতের জীবন আর থাকবে না; আমরা এগুলোর অনুমতি দিতে পারি না কারণ এগুলো সংক্রমণের উপলক্ষ তৈরি করে,’ তিনি বলেন।

ফুটবল ম্যাচসহ সব ধরণের খেলাধুলার অনুষ্ঠান সারা দেশে বাতিল করা হয়েছে। স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও ৩  এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

সরকার বলছে, শুধুমাত্র যাদের এমন কোন দাপ্তরিক কাজ রয়েছে যা বাতিল করা সম্ভব নয় কিংবা এমন কোন পারিবারিক জরুরি অবস্থা তৈরি হয়েছে যা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয় শুধু তারাই ভ্রমণ করতে পারবে।

বিমান যেসব যাত্রী আসা-যাওয়া করবেন তাদের সবাইকেই প্রমাণ করতে হবে যে তারা অসুস্থ নন।

ট্রেন স্টেশনে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হবে। বিভিন্ন বন্দরে প্রমোদ জাহাজ নোঙর করার উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

ইতালিতে করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

দেশটির নাগরিক সুরক্ষা সংস্থার তথ্য অনুসারে, আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা রাতারাতি বেড়ে গেছে ২৫ শতাংশ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ইতালিতে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৬৩।

চীনের পর ইতালিতেই করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৯ হাজার ১৭২ জনে দাঁড়িয়েছে।

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে গত বছরের ডিসেম্বরে এই করোনা ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকেই এ ভাইরাস চীনের বাইরেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

এর একদিন আগে ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় ১৪টি প্রদেশের এক কোটি ৬০ লাখ মানুষকে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার।


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি